২০২১ সালে ৬৪ জেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বাতাস দেখা গেছে গাজীপুর জেলায়। গত বছর এ জেলার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ক্ষতিকর বস্তুকণা পিএম-২.৫-এর মাত্রা ছিল গড়ে ২৬৩.৫১ মাইক্রো গ্রাম।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা জেলা (সিটি করপোরেশনের আওতা বহির্ভূত এলাকা)। একই সময়ে ঢাকা জেলার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ক্ষতিকর বস্তুকণা পিএম-২.৫-এর মাত্রা ছিল ২৫২.৯৩ মাইক্রো গ্রাম এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ; যেখানে পিএম-২.৫ মাত্রা ছিল ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম।
আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দিয়েছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্র (ক্যাপস)। দেশের ৬৪ জেলার বাতাসের মান নিয়ে চালানো গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয় এ অনুষ্ঠান থেকে। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে তথ্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ক্যাপস ৬৪ জেলার বায়ুমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করে। গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার সর্বমোট ৩ হাজার ১৬৩টি স্থানের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম; যা দৈনিক আদর্শ মানের (৬৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি।
আর গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বায়ুমান ছিল বাংলাদেশের আদর্শমানের চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি। এসব জেলায় বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে- রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প, আশপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর। এ জেলার বাতাসে পিএম-২.৫-এর মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী এবং মেহেরপুর।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এসব জেলায় বায়ু দূষণ কম হওয়ার কারণ প্রচুর গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার। এসব এলাকায় সংস্কার কাজের পরিমাণও কম।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ৬৪টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ১০টি জায়গায় বায়ুর মান ভালো পাওয়া যায় (প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম নিচে)। সে জায়গাগুলো হলো- কুড়িগ্রাম (৬৩.৩৩ মাইক্রোগ্রাম), নাটোর (৬৩.১৯ মাইক্রোগ্রাম), জয়পুরহাট (৫৮.২৪ মাইক্রোগ্রাম), রাজবাড়ী (৫৮.২২ মাইক্রোগ্রাম), রাজশাহী (৫৬.৪১ মাইক্রোগ্রাম), পাবনা (৫৬.২২ মাইক্রোগ্রাম), সিরাজগঞ্জ (৫৫.২ মাইক্রোগ্রাম), মেহেরপুর (৫৩.৩৭ মাইক্রোগ্রাম), পটুয়াখালী (৫১.৪২ মাইক্রোগ্রাম) এবং মাদারীপুর (৪৯.৩৮ মাইক্রোগ্রাম)।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল প্রমুখ।