আজঃ শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

প্রধানমন্ত্রীর সফলতা ও জাতীয় উন্নয়ন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

Image

কত দিন পেরিয়ে এলাম তেমন বুঝতেই পারলাম না মহান স্রষ্টা রাব্বুল আল আমিনের সৃষ্টি কৌশল। যাকে কোলে নিয়েছি, কাঁখে নিয়েছি তারা দাদা-দাদি, নানা-নানি, তাঐ-মাঐ। অথচ কখনো মনেই হয় না এই তো সেদিন আমি গ্রামের ধুলোপথে ছুটোছুটি করছি। কিন্তু কীভাবে সময় বয়ে চলেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা ২ সেপ্টেম্বর শের-ই-বাংলা নগর, পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছেন। সবকিছুই বেশ ভালো হয়েছে। ঢাকার দিক থেকে এক্সপ্রেসওয়ে প্রথম ব্যবহার করেছি ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সাল। গিয়েছিলাম গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির সভায়।

সময় লেগেছিল সাড়ে ৭ মিনিট। আবার ৯ সেপ্টেম্বর একই জায়গায় গিয়েছিলাম। আগের দিন ধীরে গেছি। কিন্তু ৯ তারিখ চালককে বলেছিলাম, তুমি ৯০ কিলোমিটারে যাও।

দরকার পড়লে আরও বেশি। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে দেখলাম প্রায় সবাই আমাদের পিছে ফেলে যাচ্ছে। গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু মুখ্য প্রস্তাবে ৮০ কিলোমিটার ছিল। ৬০ কিলোমিটার হলে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা তাতে নিশ্চয়ই ১০ কিলোমিটার রেয়াত পেতে পারি।

বীরউত্তম খেতাব পেয়েছি তাতেও ১০ কিলোমিটার। সবার আগে একমাত্র কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান হিসেবে দেশের পিতার পায়ের কাছে লাখ লাখ অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছি। তার জন্যেও তো ২-৪-১০ কিলোমিটার রেয়াত হতে পারে। তাই গতি বাড়াতে কোনো আপত্তি ছিল না। রাস্তাটা ভালো থাকলে ৬০ তো দূরের কথা ১২০ কিলোমিটারেও ছোট গাড়ি চললে সমস্যা হবে না।

এর আগে গত বছর ২৫ জুন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। খুব গুরুত্বপূর্ণ দাওয়াতপত্র দেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু কোনো রাষ্ট্রাচার নেই। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যরাও সামনের সিট দখল করে বসে থাকে। কে একজন একেবারেই পশ্চিমের শেষ আসনে আমাকে বসিয়ে ছিলেন। বামে হুইলচেয়ারে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, পেছনেই ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রমকুমার দোরাইস্বামী, এরপর ডানদিকে কয়েক মন্ত্রী, হুইপ, ৫ বা ৬ জনের পর বহুদিন পর পুতুলকে দেখেছিলাম। কিন্তু ও যেমন ওঠে এসে বলেনি, মামা কেমন আছ? আমিও কেন যেন ওঠে যাইনি। পরে মনে হয়েছে ভুলটা আমারই হয়েছে। আমি কখনো অমন করি না। সেই অনুষ্ঠানে পদ্মার উল্টা পাড়ে ১০ লাখ লোকের জমায়েত করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তা হয়নি। তবে সম্মানজনক উপস্থিতি ছিল। আমার যা চোখে বাধে তা বলি। আমার বন্ধু যেমন আছে, শত্রুও আছে অনেক। কারণ এখনো বহু লোক পাকিস্তানের জন্য কাঁদে। কারণ পশ্চিমাদের গলগ্রহই তাদের সম্বল। আমরা পরাজিত হলে বঙ্গবন্ধুর যেমন ফাঁসি হতো, যেভাবে অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আমাকেও চুমা খেত না। ফাঁসির কড়কড়ে দড়িতে ঝুলাত। তাই রক্ত দিয়ে অর্জন করা দেশের জন্য বড় বেশি লাগে।

বহু জায়গায় বহুবার বলেছি, আজও বলছি রাজনীতিতে না এলে বঙ্গবন্ধুকে না পেলে দেশকে চিনতাম না, জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপি গরীয়সী শুধু শুনতাম হৃদয়ে লালন করতে পারতাম না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ প্রেম। জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর এসবই হতো কথার কথা, হৃদয়ের কথা হতো না। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর কারণে রাজনীতিতে এসেছিলাম। রাজনীতিতে এসেই বঙ্গবন্ধুর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলাম। তার ভালোবাসা ¯ন্ডেœহ মমতায় দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছিলাম। আজ আমার কাছে আমার মায়ের সান্নিধ্য সন্তান-সন্ততির উত্তাপ, সহধর্মিণীর আগলে রাখার মতো আমার মাতৃভূমি। গাছপালা, তরুলতা, কীটপতঙ্গ, পশুপাখি সবকিছুকে আল্লাহর দান হিসেবে বুকের মধ্যে আপনা-আপনি স্থান করে নিয়েছেন। ৩-৪ বছর আগে আমার কুশি ১০০ টাকা দিয়ে কারও কাছ থেকে একটা বিড়াল এনেছিল। বাইরের বিড়ালরা প্রায় সব সময় মারপিট করে। ছোট বলে মার খেয়ে ঘরে ফিরত। আস্তে আস্তে বড় হয়েছে। আমি খেতে বসলেই আমার চেয়ার অথবা পায়ের ওপর সামনের দুপা উঁচু করে তাকিমাকি করে। সে আজ কদিন হাসপাতালে। আমি অবাক হয়েছি আমাদের বাড়ির পাশের এক মহিলা জাফরিন জান্নাত পশু ডাক্তার। তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে, অপারেশন করেছে। প্রায় ১৫ দিন বিড়ালটি বাড়ি নেই। মাঝেমধ্যেই দেখতে ইচ্ছা করে। কেন বিড়ালকে দেখতে ইচ্ছা করে আমি তার জবাব দিতে পারব না, কিন্তু করে। পরিবারের সমাজের একেবারে অপদার্থ সন্তান আমি। আল্লাহর দয়ায় এতদূর এসেছি। কত মানুষ হাত চেপে ধরে, কত মানুষ দোয়া কামনা করে, কত মানুষ দোয়া করে। তাই মনের ভিতরের কোনো কান্না চেপে রাখি না, চেপে রাখতে পারি না। অন্তরাত্মা হৃদয় যখন যা বলে তার বাইরে যাই না। ইদানীং আমাকে গুলি করে মেরে ফেলা যত সহজ, মতের বাইরে কথা বলানো তত সহজ নয়। খুবই সত্য দুই যুগ আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক কর্মকান্ডের সঙ্গে আমার দ্বিমত আছে। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য পিতাকে ছাড়িনি, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়িনি, আমৃত্যু ছাড়বও না। বঙ্গবন্ধুই আমার আদর্শ, আমার দলের আদর্শ, আমাদের নেতা, দলের নেতা। এটা কেউ যদি না বুঝে বা বুঝতে না চায় তাহলে আমার কিছু করার নেই। ভবিষ্যতে কোনো দিন বোন হাসিনার সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে যখন চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেবেন তখন পদ্মা সেতু নির্মাণ বোন শেখ হাসিনার জন্য অন্যতম প্রধান কীর্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। সম্রাট শাজাহান যেমন তাজমহলের জন্য অমর হয়ে আছেন, ঠিক তেমনি পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য আমার বোন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে একজন প্রধানতম ব্যক্তি হিসেবে আলোচিত হবেন অথবা প্রতিষ্ঠা পাবেন। পদ্মা সেতু শুভ উদ্বোধনে যাকে নিয়ে এত কথাবার্তা উলোটপালট সেই সৈয়দ আবুল হোসেনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা পাশে নিয়েছিলেন। এটা শুধু সৈয়দ আবুল হোসেনকে সম্মান নয়, এটা তার কর্মকে সম্মান, সমগ্র জাতিকে সম্মান। এক্সপ্রেসওয়েরও শুরুর দিকে সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন। সূচনার সময় প্রস্তরফলক উন্মোচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে যেহেতু তিনি ছিলেন সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও তাকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হলে মঞ্চে ডেকে নিলে দেশবাসীর সামনে দুকথা বলবার সুযোগ দিলে যারা অনুষ্ঠান করেছেন তারা লাভবান হতেন। এ সম্মান শুধু সৈয়দ আবুল হোসেনের হতো না, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আমাদের সবার হতো। ওই দিনের অনুষ্ঠানে মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আসন পাচ্ছিলেন না। আমার খুব খারাপ লেগেছে। তিনি এখন এক নম্বর মন্ত্রী। বোনের পরেই তার স্থান। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যদি মর্যাদা না পান তাহলে রাষ্ট্রাচার কোথায় গিয়ে ঠেকেছে একটু তো ভাবতেই হবে।

ভারতে ছিলাম ১৬ বছর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, এমনকি অনেক জাতীয় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ অতিথি হিসেবে গেছি। সেখানে প্রবীণদের যে অসাধারণ সম্মান দেখেছি গুরুত্ব দেখেছি তা ভাবা যায় না। আজ যিনি মন্ত্রী, কাল নাও থাকতে পারেন। নতুন এমপি হতে পারেন, নতুন মন্ত্রী হতে পারেন। কিন্তু তিনি যদি যথার্থ নেতা হন, তার জায়গা মন্ত্রী থাকতে যা, মন্ত্রিত্ব না থাকতেও তাই থাকা দরকার। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে লক্ষ্য করেছিলাম, জননেতা তোফায়েল আহমেদ বাঁশের বেড়ার বাইরে দর্শকের আসনে বসেছিলেন আর মঞ্চে ছিলেন নূহ-উল আলম লেনিন। তিনি তখন খুব সম্ভবত প্রেসিডিয়ামের সদস্য। ৬৯-এর ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে বেরিয়ে ছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পক্ষ থেকে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি আর ২৪ মার্চ মাত্র এক মাসের মধ্যে কোনো দিন ঢাকা পল্টন ময়দানে কোনো এক জনসভায় এই নূহ-উল আলম লেনিন তারস্বরে বলেছিলেন, এই তোফায়েল, তগোর বঙ্গবন্ধু না চঙ্গবন্ধু এই তাকে টুকরো টুকরো করলাম। বলেই তার হাতে থাকা বঙ্গবন্ধুর নামের বেশ কয়েকটি লিফলেট ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে উড়িয়ে দেওয়ার ছবি আজও আমার চোখে ভাসে, কানের ভিতর অনুরণন সৃষ্টি করে। তাই না বলে থাকতে পারি না। আমি ইন্টারনেটের কিছু বুঝি না। মোবাইলের তেমন কোনো সুবিধা নিতে পারি না। কিন্তু তবু হঠাৎ হঠাৎ চোখের সামনে কিছু ভেসে উঠলে তা এড়িয়ে যেতে পারি না। মনে হয় অল্পবয়সী কারও স্ট্যাটাস দেখলাম। তিনি বলেছেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম মাঝেসাজে বলেন ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছেন, জুতা বানাতে চেয়েছেন। অন্য কোনো কোনো নেতা নাকি বলেছেন, তোমাদের জাতির পিতা আমাদের জুতার ফিতা। কিন্তু অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে গুগল, ইউটিউবে কোনো প্রমাণ বের করতে পারলাম না। ছোট্ট বন্ধুটিকে কী বলব? এর আবার প্রমাণ! আপনি এখনই পাকিস্তান হোম মিনিস্ট্রিতে চিঠি লিখুন। আইবি, ডিআইবি রিপোর্টে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কর্মকান্ড সব পেয়ে যাবেন। বোন মতিয়া চৌধুরী আমার থেকে ৫-৬ বছরের বড়। উনি আওয়ামী লীগে এসেছেন ৮৩ সালে। আমাদের পিতাকে হত্যা করা হয়েছে ৭৫ সালে। খুব সম্ভবত ৭৬ থেকে ৭৮-৭৯ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করার কাজ হয়েছে। সেখানে মতিয়া চৌধুরী তার দল নিয়ে সাধারণ অংশগ্রহণকারীদের উদ্বুদ্ধ করতে না হলেও ১০-১২ বার গেছেন। আমরা তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধে সীমান্তে ছিলাম। সেখানে তার বক্তৃতার স্বকণ্ঠ রেকর্ড এখনো আছে। আর শুধু রেকর্ড লাগবে কেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা নালিতাবাড়ীর বাদশা, যদিও সে মারা গেছে। মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীতে প্রচুর ভূমিকা রেখেছে। যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে নিশ্চয়ই আরও অনেক ভালো কাজ করত, বিরাট নাম করত। বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক তখনো ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। মনে হয় তাকে জিজ্ঞেস করলেও তিনি কিছু না কিছু অবশ্যই বলতে পারবেন। এ ছাড়া ছাত্রনেতা প্রদীপ আমেরিকায় আছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যেতে পারে। তা যাক। এসব নিয়ে আজ তেমন আলোচনা করতে চাইনি। তবু এসে গেল তাই দুকথা লিখলাম। স্বাধীনতার পর পল্টনে চারজন নারী হরণকারী লুটেরাকে সভায় উপস্থিত দুই-আড়াই লাখ জনগণের নির্দেশে কাদেরিয়া বাহিনী মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল। সে নিয়ে কত তোলপাড়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল কাদের সিদ্দিকীর নামে। এ আমার ভাগ্য না দুর্ভাগ্য বলতে পারি না। দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র নিতে টাঙ্গাইল গিয়েছিলেন ৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি। ৭২ সালের ২৩ দিন আর ৭১ সালের ১৬ দিন। স্বাধীনতার ৩৯ দিন যেতে না যেতেই আমরা আমাদের পিতার পায়ের কাছে অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি সেখানে বলেছিলেন, কাদের পল্টনে এরকম চারজনকে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে। যারা নারীর সম্মানহানী করে লুটতরাজ করে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের আরও এক হাজার জনকে কাদের যদি শাস্তি দিত তাহলেও সে আমার ধন্যবাদ পেত। আজ তো আর বঙ্গবন্ধু নেই, আমার আশ্রয় কোথায়? কে বলবে কাদের সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করেছে, দেশকে ভালোবেসেছে, মানুষকে ভালোবেসেছে, কখনো ক্ষমতার দাপট দেখায়নি। এসব বলার কেউ নেই কিছু নেই।

আসলে শুধু পদ্মা সেতু নয়, ২ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা যে এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন করেছেন সেটাও এক সফলতা। আমার আলোচনা অনেকের চোখে লাগে। বিপক্ষদের তো শরীর জ্বালা করে। কিন্তু আমি আমার ভুল স্বীকার করতেও এক মুহূর্ত বিলম্ব করি না। যেটা চোখে দেখি কাকের মতো ঠোঁট পোছে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। সেদিন প্রথম যখন এক্সপ্রেসওয়েতে গেলাম মনে হয় দুপাশে প্রটেক্টর বা গার্ডার, মাঝখানে ডিভাইডারের ওপরটা খুব একটা সমান হয়নি। ১১ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে মনে হয় তিন এগারো তেত্রিশ কোটি খরচ করে প্লাস্টার করলে বিশ্রী উঁচুনিচু দেখা যেত না। কোনো কোনো জায়গা কিন্তু একেবারে শিল্পীর হাতের তুলি দিয়ে আঁকার মতো সুন্দর হয়েছে। সেদিন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে গিয়েছিলাম। ফিরতে ৩ ঘণ্টা লেগেছে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামার পরই সে যে কি ভোগান্তির মুখে পড়েছিলাম বলে শেষ করা যাবে না, লিখে তো একেবারেই নয়। টঙ্গী কলেজের পর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত লাঞ্ছনার শেষ নেই। একবার উঠছে, একবার নামছে। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে উড়ালসড়ক করেছে। পৃথিবীর কোথাও রাস্তার মাঝে কোনো স্টপেজ নেই। কিন্তু টঙ্গী টু গাজীপুর না হলেও ১০-১২টা স্টপেজ রাস্তার মাঝে। গাড়ি থেকে নেমে যাত্রীরা যখন দুপাশে যেতে থাকবে প্রত্যেক দিনই প্রত্যেক স্টপেজে কেউ না কেউ দুর্ঘটনায় পড়বে। এখন বিশেষ করে রাস্তাঘাটের পরিকল্পনা সবই বিদেশিরা ড্রয়িং ডিজাইন করে। পাকিস্তান আমলে টাঙ্গাইলের জেলা শহর হওয়ার সময় আমেরিকান ডিজাইনারের কারণে এখনো সবকটি দালানে প্রবল বৃষ্টিতে পানি ঢুকে। আমাদের দেশের জলবায়ুর কারণে আমরা দক্ষিণমুখী ঘরের দরজা করি। দক্ষিণ দুয়ারী ঘরের রাজা, পুব দুয়ারী তাহার প্রজা, পশ্চিম দুয়ারীর মুখে ছাই, উত্তর দুয়ারীর খাজনা নাই। কিন্তু আমেরিকান আর্কিটেক্ট সব উত্তরমুখী করেছে। আমার মনে পড়ে এক সময়ের সড়ক সচিব রেজাউল হায়াত। ভদ্রলোক খুবই সজ্জন মানুষ। ৮৯ সালে তার সঙ্গে আমার ইংল্যান্ডে প্রথম দেখা হয়েছিল। তারপর সব সময় কাছাকাছি ছিলেন।

ঢাকা-টাঙ্গাইল রাস্তায় বিদেশি ডিজাইন অনুসারে লিয়াকৈর-গোড়াইর-ধেরুয়া-দেউহাটা-মির্জাপুর-ধল্যা-শুভুল্যা-নাটিয়াপাড়া-করাতিপাড়া-ক্ষুদিরামপুর-বাইপাস-এলেঙ্গা এ রকম ১২-১৫ জায়গায় নানা রকমের ডিভাইডার বাইপাস নানা নকশা করেছিলেন। যে কারণে প্রতিদিন ধেরুয়া রেলক্রসিংয়ের কাছে ১-২টি গাড়ি উল্টেপাল্টে ধ্বংস হয়ে যেত। লোক মারা যেত ১০-৫০ জন। সব থেকে বেশি দুর্ঘটনা ঘটত ধেরুয়া-দেউহাটা-ক্ষুদিরামপুর-নাটিয়াপাড়া-নগর জলপাই এসব জায়গায়। সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলাম। তখন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছিলেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। সড়ক ও জনপদ প্রধান প্রকৌশলীসহ ২০-২৫ জন প্রকৌশলী নিয়ে রেজাউল হায়াত যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত গিয়েছিলেন। দুদিন পর সেই নকশা ডিভাইডার আইল্যান্ড উঠিয়ে দিয়েছিলেন। সে তো প্রায় ২৫ বছরের কম নয়। এই ২৫ বছরে সেসব জায়গায় বড়সড় ২৫টা দুর্ঘটনা ঘটেনি, ২৫ জনের জীবনহানি হয়নি। অথচ বিদেশি ওইসব নকশা থাকলে এতদিনে আরও ২৫ হাজার নিরীহ মানুষ মারা যেত। গাজীপুর-টঙ্গী সড়কে ঠিক তেমন হবে। আমি ততদিন বেঁচে থাকব কি না জানি না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা যদি মিথ্যা হয় তাহলে মরণোত্তর শাস্তি দিলেও কোনো কিছু মনে করব না। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৫০০-৭০০ মিটার বা এক কিলোমিটার উড়াল পুল করা হয়েছে। ৯ তারিখ ফিরবার সময়ই দেখলাম একেবারে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত ওপর নিচে সব জায়গায় যানজট। গাজীপুরে দেখলাম চৌরাস্তাকে পার হতে ৭০-৮০ ফুট ওপর দিয়ে ময়মনসিংহের দিক থেকে উড়ালসড়ক করা হয়েছে। সড়কের পাশ হবে বড়জোর ২৮-৩০ ফুট। ৭ বাই ৭ এক কলামের ওপর দাঁড়ানো। দুই কলাম করে ৪৫-৫০ ফুট করলে বা ৬০ ফুট করলে চার লেন করা যেত। দুই লেনে দুর্ঘটনা ঘটবে। সব সময় ভূমিকম্প হচ্ছে এবং হবে। মেনেই নিলাম যে ভূমিকম্পে এসব কনস্ট্রাকশন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু ৬ রিখটার স্কেলের ওপরে ভূমিকম্প হলেই ৭০-৮০ ফুট ওপরে উড়ালসড়ক থেকে গাড়ি-ঘোড়া যে ছিটকে পড়বে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে? সাধারণ মানুষ হয়তো সামনে ২-৪-৫ বছর ভাবতে পারে না। কিন্তু এত বিদ্বান বিদেশি স্থপতিদের শত শত বছর পরে কী হবে তা তো ভাবা উচিত। এক্সপ্রেসওয়েতে সেদিন মহাখালীতে এসে নেমেছিলাম। গতিসীমা মান্য করিনি, প্রায় কোনো গাড়িই করেনি। ৮০ টাকার টোল দিতে সময় লেগেছে ৫ মিনিট। সেখান থেকে মহাখালী এসে টাঙ্গাইলের বাসস্ট্যান্ডের কাছে নামতে লেগেছে ৬ মিনিট। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে মহাখালীর রাস্তায় ডিভাইডার দিয়ে আটকানো। আবার উত্তরে এক-দেড় কিলোমিটার গিয়ে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে ইউটার্ন নিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের মুখ পর্যন্ত যেতে আসতে প্রায় ৫০ মিনিট লেগেছে। ইঞ্জিনিয়ার বাবারা যদি মহাখালীর ওখানে শুধু ২০-২৫ ফুট রাস্তা খুলে দিতেন তাহলে সময় লাগত এক মিনিট। গ্যাস বা পেট্রল-অকটেন-ডিজেলের এক লিটারের ১০ ভাগের এক ভাগ খরচ হতো। তেলের দাম বাঁচত, সময় বাঁচত, পরিবেশ দূষণ কমত। চোখ এবং জ্ঞান না থাকায় সবক্ষেত্রে এমন হয়। শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনা একা দেখলেই চলবে না, সবার চোখ থাকা দরকার। সেদিন ঢাকা-ভাঙ্গা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে সরাসরি রেল যাতায়াত করেছে। সেতু পার হতে সময় লেগেছে ৮ মিনিট। সেতু পার হতে ৮ মিনিট আর সে সময় অন্যদিক থেকে গাড়ি আসার জন্য কমবেশি আরও ৫ মিনিট। মোটামুটি ১৫ মিনিট যদি একটা গাড়ির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয় বা প্রয়োজন হয় তাহলে ঘণ্টায় গাড়ি পারাপার হবে ৪টা। রাতদিন ২৪ ঘণ্টায় ৯৬টা। কিন্তু ১০ বছর পর এমন সময় আসবে দিনরাতে ৪০০-৫০০ গাড়ি পারাপার করার দরকার হবে। কারণ পদ্মা সেতু শুধু আমাদের জন্য নয়, পদ্মা সেতু আন্তর্জাতিক সেতু হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পৃথিবীর বহু দেশের রেল আগামী ১০-২০ বছরের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু করবে। সেতুর ভিতর একটা লাইন না বসিয়ে অন্তত ৩টা লাইন বসানো যেত। খুব সম্ভবত ৬৩ ফুট সেতুর পাশ। ঠিক আছে ৩টা না হলে ২টা লাইন বসলেও যাওয়া আসার জন্য গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না। পন্ডিতেরা বেশি বুঝেন তাদের বুঝাবে কে? যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর কয়েক শ গজ উত্তর দিয়ে প্রায় পদ্মার মতোই একটি রেলসেতু হচ্ছে। তাতে কিন্তু ডাবল লাইনই বসানো হয়েছে। আমি বলেছিলাম একটু বিবেচনা করে সেতুর ওপরেও একটা সড়ক সেতু বানিয়ে রাখা যায়। কখনো প্রচন্ড দুর্যোগ দুর্বিপাক দেখা দিলে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলে কিংবা যুদ্ধবিগ্রহ লাগলে রাস্তাটা ব্যবহার করা যেত। শুধু কংক্রিটের ছাড়া খুব বেশি একটা খরচ লাগত না। তাতে রেলসেতুর ইস্টিমেটেড কস্টের চাইতে হয়তো ২৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ বা ৩৫ শতাংশ বেশি খরচ হতো না। কে শুনে কার কথা। কেউ কেউ মনে করেন, এসব টাকা-পয়সা বাপ-দাদার জমিদারি। আসলে কিন্তু তা নয়। সব উন্নয়নের অর্থের দায় সাধারণ মানুষের। আমাদের এখন মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ লাখ টাকার কয়েক হাজার বেশি। যে সন্তানটি মায়ের পেটে এখনো ভূমিষ্ঠ হয়নি তাকেও কিন্তু এই বিপুল ঋণ মাথায় নিয়ে পৃথিবীর আলোতে আসতে হবে। আমার বড় বিপদ। কোনো কথা বললেই দল বেঁধে আমার প্রিয় বোনের কান ভারী করার চেষ্টা করে। সব কানকথা যে তিনি শোনেন তা নয়। অত চাপের মধ্যে আমাদের প্রয়োজনীয় মর্যাদা রক্ষা করে চলা সব সময় সম্ভব হয়না ব্যাপারটা যে বুঝি না তা নয়। খুব কঠিন সমস্যায় আছি। সেদিন জি২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছেন। যে যাই বলুন, জি২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন নিজের মর্যাদা ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছেন তেমনি দেশেরও সম্ভাবনা ও মর্যাদা অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তবে এটা সত্য, তিনি যদি বিপুল ভোটারের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর নির্বাচন করতে না পারেন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নির্বাচনে কে এলো কে এলো না, কোন বড় রাষ্ট্র কাকে সমর্থন করল সেটাও খুব একটা বিবেচ্য নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা-চীন-সৌদি আরবসহ বিশ্বের বহু দেশ আমাদের সরাসরি বিপক্ষে ছিল। হ্যাঁ এটা সত্য, আমাদের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সফলতায় বিশ্বের সব দেশের জনসাধারণের সমর্থন আমরা পেয়েছিলাম। বর্তমানে অনেকটা সেই রকম। তাই মানুষকে গুরুত্ব দিতে হবে, মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে, ভোটারকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে এ কথা সত্য, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির হাতে দেশের শাসনক্ষমতা যাক এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কেউ মেনে নিতে পারে না। সফল ভারত সফরের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে তেত্রিশ বছর পর ফ্রান্সের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে তার ঝটিকা সফর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনার বিশ্বরাজনীতিতে তার উচ্চতার পরম স্বাক্ষর। মহান ফ্রান্সের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ জন্য প্রাণঢালা শুভ কামনা।


আরও খবর



নবীগঞ্জে বাস চাপায় প্রাণ গেল দু’জনের

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মডেলবাজার নামক স্থানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেলবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আউশকান্দি ইউনিয়নের মংলাপুর গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২০) ও একই গ্রামের ওয়ারিশ মিয়ার ছেলে মো. সাদিক মিয়া (৩৫)।

আউশকান্দি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাহেল আহমদ বলেন, বুধবার রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেল বাজার এলাকায় সিলেটগামী দ্রুতগতির আল মোবারাকা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সাদিক ও হাসানকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাদিক মিয়া ও হাসান আহমদ নিহত হন।

খবর পেয়ে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তা লাশ উদ্ধার করে।

শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল চন্দ্র দেব দুর্ঘটনায় নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর



স্কুলে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন শিক্ষকরা

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে মঙ্গলবার শিক্ষকদের স্কুলে বন্দুক নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা স্কুলে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন। তবে তা প্রকাশ্যে দেখাবেন না। বিলটি এবার যাবে রিপাবলিকান গভর্নর বিল লি-র কাছে অনুমোদনের জন্য। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

একবছর আগে ন্যাশভিলের স্কুলে গুলিচালানোর ঘটনায় তিন শিশু-সহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। তারপর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।

বিলে বলা হয়েছে, স্কুলের ভেতরে কেউ যদি বন্দুক নিয়ে যেতে চান, তাহলে তাকে প্রতি বছর ৪০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তিনি প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে যেতে পারবেন না। বন্দুক গোপন রাখতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই বন্দুক নিয়ে আসার অনুমতি দেবেন। তার আগে পুলিশকে বিষয়টি জানাতে হবে এবং বন্দুকধারীর পরিচয় দিতে হবে।

রিপাবলিকানদের সংখ্যাধিক্য থাকা টেনেসি হাউসে বিলটি ৬৮-২৮ ভোটে পাস হয়েছে। বিলটি যখন পাস হয়, তখন দর্শক গ্যালারি থেকে স্লোগান দেয়া হয়, আপনাদের হাতে রক্ত লেগে থাকবে।

রিপাবলিকান নেতা রিয়ান উইলিয়ামস বলেছেন, একটি প্রতিরোধক তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে। অঙ্গরাজ্যজুড়ে গুলির ঘটনা থামানোর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সব ডেমোক্র্যাট সদস্য ও চারজন রিপাবলিকান বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেন।

ডেমোক্র্যাট নেতা জাস্টিন জোনস বলেন, রিপাবলিকান সহকর্মীরা আমাদের রাজ্যকে বন্দুকের নলের সামনে রাখছেন। তারা বন্দুক প্রস্তুতকারকদের সাহায্য করছেন। নৈতিক দিক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।

জিফোর্ড ল সেন্টারের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে স্কুলের কর্মী ও শিক্ষকরা স্কুলের মাঠে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যেতে পারেন।

গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে বন্দুকধারীদের তাণ্ডবে অনেক শিশু ও শিক্ষকের প্রাণ গেছে। টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিল শহরে গোলাগুলির এক বছর পর বিলটি পাস হলো।

নিউজ ট্যাগ: যুক্তরাষ্ট্র

আরও খবর



পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য হলেন ড. মজিবুর রহমান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. মজিবুর রহমান পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য (জীববিজ্ঞান) পদে নিয়োগ পেয়েছেন। সদস্য পদে নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে তিনি কমিশনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর National Liaison Officer (NLO) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ড. রহমান দেশের ৮টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ইনষ্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এলাইড সাইন্সেস (ইনমাস) স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ২০১৭-২০২৩ পর্যন্ত অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ড. মো. মজিবুর রহমান ২০০৩ সালে Catholic University of Leuven, Belgium থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০০৮ সালে Friedrich-Schiller-University of Jena,  Germany তে Alexander von Humboldt Foundation (AvH) - এর Research Fellow হিসেবে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষনা সম্পন্ন করেন।

এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে তার ৫০টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি দাপ্তরিক কাজে বেলজিয়াম, জার্মানি, অষ্ট্রিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাষ্ট, পানামা, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড সহ প্রায় ২০টির অধিক দেশ সফর করেন।

ড. রহমান ১৯৬৬ সালে কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার পানিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার সহধর্মিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

ড. মজিবুর রহমান, বাংলদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের পর পর দুবার (২০১৪-২০১৬ এবং ২০১৬-২০১৮) নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কমিশন তথা বিজ্ঞানীদের কল্যানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।


আরও খবর



শেকলে বেঁধে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ: গ্রেফতার চারজন রিমান্ডে

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় শিকলে বেঁধে রেখে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রেমিক সানসহ চার আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত সবার নাম যেন অভিযোগপত্রে আসে তা নিশ্চিত করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত।

রিমান্ড যাওয়া আসামিরা হলেন- সান, হিমেল, রকি ও সালমা ওরফে ঝুমুর।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর ফারুকুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে রিমান্ডের পক্ষের শুনানি করেন।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আসামি সান ঘটনার বিষয়ে কিছু জানে না। আসামির সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে না করার কারণে এই মামলা সৃষ্টি হয়েছে। এরপর সান আদালতের উদ্দেশে বলেন, আমি কিছুই জানি না। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নেই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেন, যত বড় ব্যক্তি হোক না কেন, সংশ্লিষ্টদের সবার নাম যেন অভিযোগপত্রে আসে।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকে আসামির তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

অভিযোগ উঠেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় শিকলে বেঁধে রেখে ২৫ দিন ধরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় এক তরুণীকে। নবীনগর হাউজিংয়ের একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণের অভিযোগে গত ৩১ মার্চ রাতে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণী। এর আগে তরুণীর চিৎকার শুনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে এক ব্যক্তি কল করলে পুলিশ ওই তরুণীকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ওই তরুণী মামলা করেন।

নিউজ ট্যাগ: আদালত ধর্ষণ

আরও খবর



বিএনপি ছাড়াই সব নির্বাচন ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিএনপি ছাড়াই সব নির্বাচন ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ দাবি করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বুঝা উচিৎ।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি, উচ্চতা এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ লজ্জিত হন। তখন পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝা অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ সংঘাতে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাফায় আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের সকল নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।


আরও খবর
বিএনপির ৭৫ নেতাকে বহিষ্কার

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪