আজঃ শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

বাংলা ভাষার জন্য জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু কন্যার অবদান

প্রকাশিত:সোমবার ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

Image

মোদের গরব মোদের আশা আমরি বাংলাভাষা' অতুল প্রসাদ সেনের এই কথা প্রতিটি বাঙালিরই মনের কথা। মা, মাটি আর মুখের বোল- এই তিনে মনুষ্য জন্মের সার্থকতা। নিজের মুখের ভাষার চেয়ে মধুর আর কিছু হতে পারেনা।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী সচেতন ভাবে বাঙালির কাছ থেকে ভাষার অধিকার হরণ করতে চেয়েছিল। তারা চেয়ে ছিল সংখ্যালঘু জনগণের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে। কিন্তু তাদের সেই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন বাঙালির ত্রাণকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আজীবন মাতৃভাষাপ্রেমী এই মহান নেতা ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্বে, ১৯৪৮ সালে রাজ পথে আন্দোলন ও কারাবরণ, পরে আইন সভার সদস্য হিসেবে রাষ্ট্র ভাষার সংগ্রাম ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন। এক কথায় রাষ্ট্র ভাষা বাংলার আন্দোলন ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় অংশগ্রহণ ইতিহাসের অনন্য দৃষ্টান্ত।

২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে বাঙ্গালীর দেওয়া রক্ত আজ বিশ্বের কাছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। যা সম্ভব হয়েছে জাতির জনক ভাষা সৈনিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানর সুযোগ্যা কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের গুনে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগ ইতিহাস আবহমানকাল শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে।

১৯৯৯ সালেই উনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা ও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। মনে হতে পারে যে এ সব কিছুই ঘটে গেছে রাতারাতি। কিন্তু এ দিনটিকে ইউনেস্কোর কাছে তুলে ধরতে, তাৎপর্য বোঝাতে, বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার যে কত প্রতিকূলতা পার হতে হয়েছে, কত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কতটা কাজ করতে হয়েছে তা অনেকেরই অজানা।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার দায়িত্ব পালনের সময় (১৯৯৬-২০০১) জননেত্রী শেখ হাসিনা একুশে ফেব্রুয়ারি এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

২১শে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসাবে ঘোষণা করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন কানাডার দু'জন বাঙালি প্রবাসী রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম। তবে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বেসরকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারেনি। অনুরোধ / প্রস্তাব একটি সদস্য রাষ্ট্র থেকে জমা দিতে হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন, তখন খুব বেশি সময় বাকি নেই। আসলে, হাতে ছিল মাত্র ২৪ ঘন্টা। আওয়ামীলীগ সরকার তখন প্রবাসীদের নেতৃত্বাধীন 'মাতৃভাষা সংরক্ষণ কমিটি'র সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রস্তাবনাটি ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইউনেস্কোর কাছে প্রেরণ করে। জরুরি ভিত্তিতে আমাদের মিশন গুলিকে অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর সাথে যোগাযোগের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল পাশাপাশি এই প্রস্তাবটির জন্য তাদের সমর্থন চাওয়া হয়েছিল।

ফল স্বরূপ, '৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে প্রস্তাবটি পাশ হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০০০ সালে থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ 'উর্দু ভাষাকে' একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে শুরু হল তীব্র গণ আন্দোলন। বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দানে প্রত্যয়ী ছাত্র সমাজ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে সরকারের নির্দেশে পুলিশ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারসহ নাম না জানা অনেকে নিহত হয়। অতঃপর ক্রমাগত আন্দোলনের ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালের সংবিধানে সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (বাংলা ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮) অধুনা বাংলাদেশের সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, যার স্বীকৃতি পরবর্তী কালে পথ দেখালো সারা পৃথিবীকে, হয়ে রইল এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা, ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারি "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসাবে স্বীকৃতি দিল। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮ টি দেশে এই দিনটি পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেই। কারণ, এ তো শুধু বাংলা ভাষার আন্দোলন নয়, মায়ের ভাষা, গানের ভাষা, আবেগের ভাষা, সাহিত্যের ভাষা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় শহীদদের প্রতিটি রক্ত বিন্দু মাতৃদুগ্ধকে করিয়েছিল স্মরণ প্রতিটি বাংলা ভাষীর মনে এবং প্রাণে।

ভাষার ঐক্য, সম্প্রীতি, ভাষার মৌলিক অধিকার শিক্ষা, মানসিক ও নৈতিক বিকাশ এবং সর্বোপরি মাতৃভাষার প্রতি ভালবাসা - এই দিকগুলির প্রতি নজর রাখার সময় এসেছে হয়ত। কারণ, বিশ্বের প্রায় ৭০০ কোটি মানুষ আনুমানিক ৬০০০ ভাষায় কথা বলেন।

বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, কমবেশি অসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, বিহার, ঝাড়খন্ড ও ওড়িশারাজ্য, মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলের রোহিঙ্গারাও বাংলা ভাষায় কথা বলেন। আবার, আফ্রিকার সিয়েরালিয়েনে বাংলা হল দ্বিতীয় সরকারী ভাষা। তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্য এই নয় যে, অন্য ভাষাভাষীদের কাছে বাংলা ভাষার গুরুত্ব বা প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা। পরিবর্তে শুধু এই বিষয়টার প্রতি নজর দেওয়া যে, বিভিন্ন ভাষাভাষী যত মাতৃভাষা রয়েছে সেগুলির গুণমান ও উৎকর্ষ তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ।

এই ভাষাতেই রবীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন দুই দেশের ভারত ও বাংলাদেশের দুই জাতীয় সংগীত, "জনগণ মন অধিনায়ক জয় হে...." আর "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি...."।

নিজের ভাষা নিয়ে বাঙালির গর্ব যতই থাক, পরিস্থিতির চাপে সেই ভাষার সর্বাত্মক চর্চায় বাঙালি আজ ব্যর্থ। বাংলার প্রতি এই অবহেলা কেন? উপলব্ধির অন্তর্লোকে উঁকি দিলে দেখা যাবে এই অবহেলার মূলকারণ প্রতিযোগিতা আর পেশার তাড়না। যাঁর সামর্থ্য বা সুযোগ আছে, তাঁর মধ্যেই নিজের সন্তানকে বাংলা মাধ্যমের বদলে ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া শেখানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থাটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি যে দেশের বেশিরভাগ মানুষ প্রায় সব ক্ষেত্রেই বাংলানির্ভর। সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমও বাংলাই।

বাংলাকে শিক্ষা ও পেশার প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবহার্য করে তোলার প্রয়াস আমরা হারিয়ে ফেলেছি। ফলে কেউ চাইলেই বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিদ্যা, কারিগরি বা প্রযুক্তি বিদ্যা, আইন বা অন্য কোনো বৃত্তিমূলক শিক্ষা বাংলায় চালানো সম্ভব নয়। ইংরেজির বাইরে রুশ, জার্মান, জাপানি, ¯প্যানিশ, ফরাসি ইত্যাদি ভাষায় প্রায় সব ধরনের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। নিজেদের মাতৃভাষাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের ব্যবহার্য ভাষা করে তুলতে পেরেছেন তাঁরা। তাঁরা নিজ ভাষায় বিজ্ঞানের গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে পারছেন। তাঁরা মাতৃভাষায় স্বচ্ছন্দে প্রকৌশল বিদ্যা পড়তে পারছেন। কারণ, ভাষা গুলো সেসবের উপযুক্ত হয়ে উঠেছে দিনে দিনে। আমরা মাতৃভাষাকে নিয়ে সেভাবে এগিয়ে যেতে পারিনি।

একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের স্বকীয় চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে বাংলাকে স্বয়ংস¤পূর্ণতার পথে নিয়ে যেতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে চাইলে তার উপযুক্ত পরিভাষা কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। সেই শপথ নিয়ে যদি এগোনো যায়, তাহলেই বাংলা সর্বস্তরে ব্যবহার যোগ্য ভাষা হয়ে উঠতে পারবে।

যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ভাষা হিসেবে বাংলার এই প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতি, যে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলা ভাষী জনগণ সেই ভাষার নামে একটি দেশ পেয়েছে; সেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ সব ভাষা শহীদকে জানাই আমাদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন বাস্তবায়ন করা গেলেই ভাষা শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানানো সার্থক হবে ও বাংলা ভাষার মর্যাদা সমূন্নত হবে।

২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবদীপ্ত ঐতিহাসিক দিন। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিনটির তাৎপর্য অপরিসীম। বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে অর্জিত হয়েছে বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার। এ দিবসে প্রত্যেক ভাষার মানুষ নিজের মাতৃভাষাকে যেমন ভালো বাসবে তেমনি অন্য জাতির মাতৃভাষাকেও মর্যাদা দেবে। এভাবে একুশকে চেতনায় ধারণ করে মাতৃভাষাকে ভালোবাসার প্রেরণা পাবে মানুষ।

নিউজ ট্যাগ: বাংলা ভাষা

আরও খবর



অগ্নি নিরাপত্তা

রেস্টুরেন্ট-দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের মতবিনিময়

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অগ্নিঝুঁকি হ্রাস ও অগ্নি নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে রেস্টুরেন্ট ও দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। বুধবার(৩ এপ্রিল) দুপুরে অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.  মাইন উদ্দিন; পরিচালকবৃন্দসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ এবং দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মহাসচিব জনাব মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া; রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গণি, মহাসচিব ইমরান হাসানসহ সমিতির অন্য প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

মতবিনিময় সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। উপ-পরিচালক (অপারেশন্স ও মেইনটেইন্যান্স) কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া দোকান ও রেস্টুরেন্টের অগ্নিঝুঁকি এবং তা নিরসনে করণীয় বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। প্রেজেন্টেশন শেষে সকলের কাছে উন্মুক্ত মতামত ও বক্তব্য আহ্বান করা হয়।

এ সময় বক্তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। দোকান ও রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সকল স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে রেস্টুরেন্ট, মার্কেট ও দোকানসমূহে অগ্নি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার বিষয়ে সদিচ্ছা পোষণ করা হয়। রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার এবং সেফটি ইকুইপমেন্টের ট্যাক্স কমানোর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন অগ্নিঝুঁকি নিরসনে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।

তিনি বলেন, আমরা নিরাপদ দেশের পক্ষে। কেউ আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা সকলকে সাথে নিয়ে দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাই।


আরও খবর



রিজার্ভ বেড়ে ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের উপরে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

আমদানির চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় বাজারে ডলার বিক্রির ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে আসছিল। তবে ঈদের আগে কিছুটা চাঙা ছিল রেমিট্যান্স প্রবাহ। তাই ফের কিছুটা বেড়েছে রিজার্ভ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী- রিজার্ভ এখন ২ হাজার ১০ কোটি ডলারে (২০ দশমকি ১০  বিলিয়ন) পৌঁছেছে। যেখানে গত মাসের ২৭ মার্চেও ছিল ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঈদের আগে প্রবাসীরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এছাড়া রপ্তানি প্রবাহও বেড়েছে। এসব কারণেই মূলত রিজার্ভ কিছুটা চাঙ্গা।

তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। এটি প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

প্রতি মাসে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন অনেকটা শেষ প্রান্তে রয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল, ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া গত মাসে আকুর বিলও পরিশোধ হয়েছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম। এসব কারণেই মূলত রিজার্ভ কমছে।


আরও খবর



তীব্র গরমে প্রাথমিক-মাধ্যমিকে অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দীর্ঘ ছুটি শেষেও খোলেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২১ এপ্রিল ছুটি বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার হওয়ায় ৭ দিন বন্ধের পর ২৮ এপ্রিল পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা।

তবে তাপপ্রবাহ না কমায় এ ছুটি বাড়ছে নাকি ২৮ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। অভিভাবকদের একটি অংশ এবং অভিভাবক ঐক্য ফোরাম নামে একটি সংগঠন অনলাইনে ক্লাস চালু রাখার দাবি তুলেছে। অনেকে আবার আরও কিছুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে কী ভাবছে শিক্ষা প্রশাসন? এমন প্রশ্নের অবশ্য সরাসরি জবাব মেলেনি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া এবং বিকল্প উপায় নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালানোর কথা জানিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদারককারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা।

শিক্ষা প্রশাসন বলছে, তীব্র গরমে ছুটি বাড়ানো কিংবা অনলাইনে ক্লাস নেওয়া নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তই এখনো হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী বিদেশ সফরে থাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এ নিয়ে আলোচনা করেনি। আলোচনা চললেও প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও।

তবে মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদরাসা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস চালুর বিষয়ে জোর আলোচনা রয়েছে। হাফ পিরিয়ড বা স্বল্প পরিসরে ক্লাস চালু করতেও মত দিচ্ছেন অনেকে। পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্টসহ ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা করতে পারেএমন কাজ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তারা।

তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশু শিক্ষার্থীরা। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা বা খোলা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শাহ রেজওয়ান হায়াত।

তিনি বলেন, ছুটি বাড়ানো, ক্লাস কমিয়ে হাফ পিরিয়ড বা স্বল্প পরিসরে নেওয়া কিংবা অনলাইনে ক্লাস চালু করাসব বিষয় সামনে রেখেই আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। তবে কোনো সিদ্ধান্তই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। যে সিদ্ধান্তই আসুক, তা শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক হবে। নেতিবাচক সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না।

অন্যদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি আর বাড়ছে না বলেই জানিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাপপ্রবাহ যদি না কমে, সেক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে অ্যাকটিভ (সক্রিয়) রাখার জন্যও শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী বলেন, আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। আলাপ-আলোচনা চলছে। ক্লাস একেবারে বন্ধ রাখার চেয়ে অনলাইন ক্লাস কিংবা বাড়ির কাজ (অ্যাসাইনমেন্ট) দিয়ে শিক্ষার্থীদের কীভাবে পড়ালেখার মধ্যে রাখা যায় সেটা নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে কোনো ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।


আরও খবর



কসবায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ রাসেল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসান (২৬) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত হাসান ওই এলাকার দারু মিয়ার ছেলে।

নিহত হাসানের চাচাতো ভাই আরিফ জানান, হাসান বিভিন্ন সময় সীমান্তের ওইপার থেকে চিনি চোরাচালানে শ্রমিকের কাজ করতেন।

সোমবার সকালে সীমান্ত থেকে চিনি আনতে গেলে বিএসএফ গুলি চালায়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক হাসান উল্লাহ জানান, বিএসএফের গুলিতে একটি ছেলে মারা গেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

কসবা থানার ওসি রাজু আহমেদ জানান, বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। তার মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা আছে। তার শরীরে একটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।


আরও খবর



ফোর্বসের শতকোটিপতির তালিকা প্রকাশ, শীর্ষে বার্নার্ড আর্নল্ট

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চলতি বছরটি বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের দারুণ কাটছে। ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ২০২৪ সালের ধনীদের নতুন তালিকা থেকে জানা গেছে, গত এক বছরে তাদের সম্পদমূল্য বেড়েছে দুই লাখ কোটি ডলার।

ফোর্বসের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় এই বছরে সবার ওপরে বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। গত জানুয়ারিতেই ইলন মাস্ককে হটিয়ে বার্নার্ড আর্নল্ট বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসন লাভ করেন। তার সম্পদমূল্য ২২ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা বার্নার্ড আর্নল্ট পরিবার ছাড়া বাকি সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আর্নল্ট পরিবার ফরাসি।

ফোর্বসের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন অ্যামাজনের সহপ্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, তার সম্পদমূল্য ১৯ হাজার ৮৭০ কোটি ডলার। তৃতীয় স্থানে আছেন টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। তার সম্পদমূল্য ১৯ হাজার ২০ কোটি ডলার। সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ আছেন তালিকার চতুর্থ স্থানে। তার সম্পদের পরিমাণ ১৭ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার। আর তালিকার পঞ্চম স্থানে আছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। তার সম্পদমূল্য ১৫ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার।

ফোর্বসের ধনীদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে আছেন ওরাকল অব ওমাহা ও বিনিয়োগ গুরু হিসেবে খ্যাত ওয়ারেন বাফেট। তার মোট সম্পদমূল্য ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। সপ্তম স্থানে রয়েছেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তার সম্পদমূল্য ১৩ হাজার ৭০ কোটি ডলার। অষ্টম স্থানে আছেন অ্যালফাবেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ। তার সম্পদমূল্য ১২ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।

ফোর্বসের তথ্যমতে, নবম স্থানে যৌথভাবে দুইজন শীষ ধনী রয়েছেন। ১২ হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে নবম স্থানে আছেন লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লিপার্সের স্বত্বাধিকারী স্টিভ বালমার এবং অ্যালফাবেটের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা সার্জেই ব্রিন আছেন নবম স্থানে। তার সম্পদমূল্য ১২ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার।

তালিকায় ১১তম স্থানে আছেন ভারত ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি। তার সম্পদমূল্য ১১ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। আরেক ভারতীয় শীর্ষ ধনী ও একসময় এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ৮ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। তার অবস্থান ১৭তম।

এদিকে ধনীদের তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি শতকোটিপতি আছেন চীনে। দেশটির ধনীদের মধ্যে শতকোটিপতির সংখ্যা ৪৭৩ জন। তবে সামগ্রিকভাবে চীনা ধনীদের সম্পদমূল্য কমেছে ৩০ হাজার কোটি ডলার।

২০০ বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি নিয়ে তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ভারত, দেশটির ধনীদের জন্য এটি নতুন রেকর্ড। অর্থাৎ এর আগে আর কখনো এতসংখ্যক ভারতীয় শতকোটিপতি ছিলেন না।


আরও খবর