আজঃ শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম
৫৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

চিরঞ্জীব শেখ রাসেল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৮ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ অক্টোবর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শেখ রাসেল একটি আবেগের নাম। একটি অতি প্রিয় আদুরে নাম। শেখ রাসেল নামটিও বাংলার ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিশুদের বিকাশ ও সম্ভাবনার মাঝে চিরঞ্জীব শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার সর্ব কনিষ্ঠ পুত্র এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্ব কনিষ্ঠ স্নেহের ভ্রাতা শেখ রাসেলকে নিয়ে কিছু লিখতে গেলে বুক ফেটে কান্না আসে। দম বন্ধ হয়ে আসে। সাদা কাগজের উপর কলম আর সামনের দিকে চলতে চায় না। বাংলা উইকিপিডিয়ায় শেখ রাসেল সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর বাসভবন ঘিরে ফেলে শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়। শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন, আমি মায়ের কাছে যাব পরবর্তীতে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করেছিলেন, আমাকে হাসু আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দাও। ব্যক্তিগত কর্মচারী এএফএম মহিতুল ইসলামের ভাষ্যমতে, রাসেল দৌঁড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরে। আমাকে বললো, ভাইয়া আমাকে মারবে না তো?  ওর সে কন্ঠ শুনে আমার চোখ ফেটে পানি এসেছিল। এক ঘাতক এসে আমাকে রাইফেলের বাট দিয়ে ভীষণ মারলো। আমাকে মারতে দেখে রাসেল আমাকে ছেড়ে দিল।  শেখ রাসেল কান্নাকাটি করছিল যে, আমি মায়ের কাছে যাব, আমি মায়ের কাছে যাব। এক ঘাতক এসে ওকে বললো, চল তোর মায়ের কাছে দিয়ে আসি। বিশ্বাস করতে পারিনি যে, ঘাতকরা এতো নির্মমভাবে ছোট্ট সে শিশুটাকেও হত্যা করবে। রাসেলকে ভিতরে নিয়ে গেল এবং তারপর ব্রাশ ফায়ার। শেখ রাসেলের গৃহ শিক্ষক এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলের শিক্ষক গিতালি দাস গুপ্তা শেখ রাসেল সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছেন, অতীতের সুখস্মৃতি আজ দুঃখের আঁধারের অবগুন্ঠনে ঢাকা। সে স্মৃতি আজ, আমার ভারী বোঝা। চিৎকার করে যাচ্ছি, এ বোঝা আমার নামাও বন্ধু নামও কিন্তু কারোই যে এ বোঝা নামাবার ক্ষমতা নেই, তা আমি জানি। যতদিন বেঁচে আছি, রক্তে সিক্ত এ বেদনার বোঝা আমার সঙ্গী হয়েই আমাকে জড়িয়ে থাকবে। বুকের গভীরে যে দগদগে ঘায়ের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমৃত্যু আমায় পুড়িয়ে খাবে। লিখতে যে বেশ কষ্ট হচ্ছে! আমি এগুবো কী করে? অতীত যে বর্তমান হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে, সেই অতীতকে পাশ কাটিয়ে চালে যাওয়া যাচ্ছে না তো! ছোট্ট একটি হাসিমাখা মুখ আমার সামনে দাঁড়িয়ে, অথচ সেই মিষ্টি মুখখানা ছুঁতে পারছি না, পারছি না আগের মতো করে আদর করতে! খুনসুটির খেলাটাও তো বন্ধ! দম আটকে আসছে, চোখ বুজে অনুভব করছি, আমার সামনেই অতীত বর্তমান রূপে জাগরূক! এ যন্ত্রণা বোঝাই কী করে? কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছেন-অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন/ তার বক্ষে বেদনা অপার শেখ রাসেল সম্পর্কে বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ বেবী মওদুদ লিখেছেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫। ১০ বছরের রাসেল ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। চঞ্চল প্রকৃতির হলেও কখনো কখনো হঠাৎ সে শান্ত হয়ে নির্জনে প্রিয়সঙ্গী সাইকেল নিয়ে খেলা করতে পছন্দ করত। তার আরো প্রিয় সঙ্গী ছিল ভাগ্নে জয়। তার সঙ্গে খুনসটিও করত, আবার জয় না হলে তার চকোলেট খাওয়া হত না, খেলা করা হত না। আনন্দকে ভাগ করে নেয়ার উদারতায় রাসেল তার ক্লাসের বন্ধুদের খুব প্রিয় ছিল। সেই রাসেলের ঘুম ভেঙ্গে যায় সেদিন গুলির শব্দে, হইচইতে মা তাকে পেছনের দরজা দিয়ে কাজের লোকজনের হাতে নিচে পাঠিয়ে দেন। ১০ বছরের রাসেল হঠাৎ ঘুমভাঙ্গা চোখ নিয়ে সব দেখেছে, আর আতঙ্কভরা মন নিয়ে সবকটা গুলির শব্দ শুনেছে। তারপর ঘাতকরা তার হাত ধরে, অস্ত্র তাক করে। রাসেল কাঁদতে কাঁদতে বলেছে, আমি মায়ের কাছে যাব। আমি মায়ের কাছে যাব। ঘাতক ওয়ারলেসে অনুমতি নিয়েছে তাকে হত্যা করার। শেখ রাসেল বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র এই ছিল তার অপরাধ। ঘাতকরা তার হাত ধরে বড়ভাই শেখ কামাল, চাচা শেখ আবু নাসের, স্নেহময় পিতা শেখ মুজিব, মমতাময়ী মা, ভাই শেখ জামাল, সদ্যপরিণীতা ভাবী সুলতানা ও রোজী-সবার রক্তাক্ত দেহ দেখাল। রাসেল কেমন করে দেখেছিল সেই প্রাণহীন প্রিয়জনদের? সেই রক্তভেজা মেঝেতে হাঁটতে তার বুক ফেটে যাচ্ছিল কি হাহাকারে? রাসেলকে ঘাতকরা কেন এই রক্তাক্ত দেহগুলো দেখিয়েছিল? তার শুদ্ধতম ছোট্ট হৃদয়কে তারা কেন কষ্ট দিয়েছিল? কেন যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত করেছিল? ছোট্ট রাসেল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদঁতে কাদঁতে শেষবার উচ্চারণ করেছিল, আমাকে আমার হাসু আপার কাছে পাঠিয়ে দিন। ঘাতক-নরপিশাচ ঘাতকরা ছোট্ট রাসেলের সে কান্নাভেজা কথা শোনেনি, হৃদয়ের আকুতি শোনেনি। তারা বুলেটে বুলেটে শিশু রাসেলকে হত্যা করেছে। ছোট্ট রাসেল কাঁদতে কাঁদতে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে গেছে। উপরের বর্ণনায় এটা স্পষ্ট যে, শেখ রাসেলকে নিয়ে কিছু লিখতে গেলে কেন আমাদের বুক ফেটে কান্না আসে। ঘাতকরা যে কত বড় নিষ্ঠুর ছিল তা সহজেয় বোঝা যায়। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকায় ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারের পরিবারের এই নতুন সদস্যের নাম রাখেন রাসেল। শেখ রাসেলের জন্মের আগমূহুর্ত এবং জন্মের সময় সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন, রাসেলের জন্মের আগের মুহূর্তগুলো ছিল ভীষণ উৎকন্ঠার। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও খোকা চাচা বাসায়। বড় ফুফু ও মেজো ফুফু মার সাথে। একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন। সময় যেন আর কাটে না। জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায় আবার জেগে ওঠে। আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি নতুন অতিথির আগমন বার্তা শোনার অপেক্ষায়। মেজো ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। খুশিতে আমরা আত্মহারা। কতক্ষণে দেখব। ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন। কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালো চুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড় সড় হয়েছিল রাসেল।

শেখ রাসেলের বেড়ে ওঠা সহজ ছিল না। তার জন্মের দিন পিতা (বঙ্গবন্ধু) চট্টগ্রামের এক জনসভায় ছিলেন। পরবর্তীতে মাঝে মাঝে বঙ্গবন্ধুকে জেলেও যেতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের অতি আদরের শেখ রাসেলের মাত্র দেড় বছর বয়সেই প্রিয় পিতার সঙ্গে তার সাক্ষাতের একমাত্র স্থান হয়ে উঠে কেন্দ্রীয় কারাগার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট। কারাগারের রোজনামচায় ১৯৬৬ সালের ১৫ই জুনের দিনলিপিতে রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না- যে পর্যন্ত আমাকে না দেখে। দেখলাম দূর থেকে পূর্বের মতোই আব্বা আব্বা বলে চিৎকার করছে। জেল গেট দিয়ে একটা মাল বোঝাই ট্রাক ঢুকেছিল। আমি তাই জানালায় দাঁড়াইয়া ওকে আদর করলাম। একটু পরেই ভিতরে যেতেই রাসেল আমার গলা ধরে হেসে দিল। ওরা বলল আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থাকে, বলে আব্বার বাড়ি। এখন ধারণা হয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি। যাবার সময় হলে ওকে ফাঁকি দিতে হয়। মাত্র সাত বছর বয়সে ১৯৭১ সালে শেখ রাসেল নিজেই বন্দী হয়ে যান। ধানমন্ডি ২৮ নম্বর সড়কে পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনিও বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর, ১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর  বঙ্গমাতা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শেখ রাসেলও মুক্ত হন। সেদিন শেখ রাসেল জয় বাংলা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। বাইরে তখন বিজয়ের উৎসব চলছে। বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এলে সেদিন রাসেল পিতাকে বিস্ময়ভরা তৃপ্তির দু চোখে দেখেছে, তাঁর স্নেহচুম্বনে সিক্ত হয়েছেন। এরপর থেকে সে খুব একটা পিতার সান্নিধ্য ছাড়া থাকতে চাইতেন না। যথক্ষণ পিতা কাছে থাকতেন, ততক্ষণ রাসেল তাঁর কাছাকাছি থাকতে চাইতেন।

শেখ রাসেল চিরঞ্জীব। কারণ শহীদের মৃত্যু নাই। বঙ্গবন্ধুর সন্তান হওয়ার কারণে তাকে নরপিশাচ ঘাতকদের হতে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে তাঁর দর্শন চিন্তার কারণেই তাঁকে পরিবারের সদস্যসহ নিজের জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশ ও বিশ্বের মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতেন। ছিলেন বিশ্বের শোষিত মানুষের এক মহান নেতা। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতেন। যে কারণেই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সাথে শেখ রাসেলকেও জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু ঘাতকরা জানত না যে, মানুষকে হত্যা করা গেলেও তার আদর্শকে হত্যা করা যায় না। মানুষের আদর্শের মৃত্যু নাই। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নাই, শেখ রাসেলেরও মৃত্যু নাই। শেখ রাসেল আমাদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন চিরকাল। বিশ্বের সকল শিশুর মাঝে শেখ রাসেল অমর হয়ে থাকবেন। ১৮ই অক্টোবর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ও ৫৮তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর জন্মদিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা বিশ্বের সকল শিশুর বিকাশ, সকল শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়াসহ শিশুদের নিয়ে সকল সম্ভবনাকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। আর সেটাই হবে শেখ রাসেলের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাকে সঠিকভাবে স্মরণ করা। সাথে সাথে আজকের আমাদের দাবি, শেখ রাসেলের সকল খুনিদের অবশ্যই বিচার কার্যকর হতে হবে। আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, যে নিষ্ঠুর ঘাতক খুনিচক্র ষড়যন্ত্রকারীরা বর্তমানেও বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বেঁচে থাকা সদস্য বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবার ও কনিষ্ট কন্যা শেখ রেহানার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলছে তাদেরকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখানসহ রুখে দাঁড়াতে হবে। পরিশেষে বলব, বিশ্বের সকল শিশুর অধিকার নিশ্চিত হোক, সকল শিশুর বেড়ে উঠার জন্য নিরাপদ দেশ ও একটি নিরাপদ পৃথিবী গড়ে উঠুক- এই হোক আমাদের আজকের অঙ্গীকার। শেখ রাসেলের স্মৃতি হোক চির অম্লান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। 

লেখক: অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান


আরও খবর



ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৯

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভূমধ্যসাগরের ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে চোরাকারবারিদের নৌকা ডুবে ৯ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়া ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইতালীয় উপকূলরক্ষী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি এ খবর জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

জীবিতদের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, স্টিল-বটম বোটটি গিনি, বুর্কিনা ফাসো, মালি ও আইভরি কোস্ট থেকে ৪৬ জন মানুষকে নিয়ে রোববার রাতে তিউনিসিয়ার স্ফ্যাক্স থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। তারা বলেন, বুধবার সকালে নৌকাটি ডুবে যায়।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একটি ৬ মাস বয়সি শিশু ও আটজন পুরুষ রয়েছেন। বেঁচে থাকা ছয়জনকে গুরুতর হাইপোথার্মিয়া ও ডিহাইড্রেশনের জন্য চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। আর দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাধারণত গ্রীষ্মের কাছাকাছি সময় আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আসার প্রবণতা বেড়ে যায়। তখন নৌকাডুবির উদ্বেগও বাড়ে। তাই ইতালীয় বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী দাতব্য সংস্থার উদ্ধারকারী নৌকার  কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে দেয়।

ইতালির অতি-ডান-নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্রতি দাতব্য নৌকাগুলোকে উদ্ধারের পর উত্তর বন্দরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। তাদের কার্যক্রম কমিয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে নৌকাগুলোকে আটক করছে।

ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ফেদেরিকো ফসি বলেন, গ্রীষ্মকাল আসার সঙ্গে সঙ্গে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে। কারণ এ সময় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত নৌকা নিয়ে ইতালি যাচ্ছে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন জানিয়েছে, এই বছর এ পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকা থেকে ইতালিতে আসার পথে ভূমধ্যসাগরে ৩৮৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৪ সালে নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্প চালু করার পর থেকে ২৩ হাজার ১০৯ জন নিখোঁজ হয়েছে।


আরও খবর



গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকা ১৩ জেলে জীবিত উদ্ধার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বঙ্গোপসাগরের কুতুবিয়ায় গভীর সমুদ্রে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গত চারদিন ধরে ভাসতে থাকা একটি ফিশিং বোটের ১৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, চারদিন আগে ইঞ্জিন বিকল হয়ে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া লাইট হাউস থেকে ৯ নটিকেল মাইল দূরে ভাসছিল ফিশিং বোট এফবি শিফা। পরে ভাসতে থাকা জেলেরা ৯৯৯ জরুরি সেবা নম্বরে যোগাযোগ করলে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী জাহাজ সবুজ বাংলা জেলেদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয় কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ড মিডিয়া সেলের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইতোমধ্যে উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং রাত ৮টার দিকে বোট মালিকের কাছে জেলেদের হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরও খবর



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সকাল ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, বেসিক সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রিভেনটিভ এ্যান্ড স্যোশাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোঃ আতিকুল হক তুহিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোঃ রেজাউর রহমান, পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন, বিএসএমএমইউ স্বাচিপের সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো প্রমুখসহ বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থীগণ, পরিচালকবৃন্দ, অফিস প্রধানগণ, কর্মকর্তাবৃন্দ, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল স্বাভাবিক নিয়মে সম্পূর্ণরূপে খুলেছে।


আরও খবর



কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার: যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ভারত

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া চাই আমরা।

এরপর ভারত সরকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র মিশনের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধান গ্লোরিয়া বারবানাকে তলব করে। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ৪০ মিনিটের বৈঠক করেন তার সঙ্গে।

বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন আচরণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানায়। তারা জানান, প্রত্যেক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার ও সার্বভৌমত্বের ওপর শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। গণতন্ত্রের সঠিক চর্চার জন্য এই শ্রদ্ধাবোধ সবার দায়িত্ব। নাহলে অসুস্থ পরিবেশ তৈরি হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের আইনি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গ্রেপ্তার হন তিনি। দিল্লির আবগারি নীতি সংক্রান্ত ওই মামলায় কেজরিওয়ালকে জেরা করার জন্য ৯ বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু তিনি আসেননি। এই অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে হয় তাকে।


আরও খবর



পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলো বিজিপির আরও ১২ সদস্য

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১২ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির আষাঢ়তলী, জামছড়ি ও ঘুমধুম ইউপির রেজু সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ নিয়ে তিন দিনে দেশটির মোট ২৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় ‍নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি জান্তা বাহিনীর সদস্যরা সংঘাতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

ঘুমধুম ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাবুল কান্তি চাকমা জানান, ওয়ার্ডের ফাত্রাঝিরি রেজু আমতলী পাড়া সীমান্ত দিয়ে দুই বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজিবির গণসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আজ সকালে ১২ বিজিপি সদস্য আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নতুন করে আসা ২৮ জনই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওখানে আগে থেকে ১৮০ জন আশ্রয়ে রয়েছে। ফলে সেখানে এখন মিয়ানমারের মোট ২০৮ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য রয়েছেন।

আগে থেকে থাকা ১৮০ জনের মধ্যে গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিনজন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য।

তারও আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।


আরও খবর