মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে বিএনপির দলীয় প্রধান কার্যালয় ফাঁকাই ছিল। আজ রবিবার (২৯ অক্টোবর) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে অপরাধের বিভিন্ন ধরনের আলামত সংগ্রহ করেন এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’ লেখা ফিতা টানিয়ে দেন।
কার্যালয়ের সামনের অংশে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তারা ১০ ধরনের আলামত সংগ্রহ করেন। পরে এসব আলামত পরীক্ষার জন্য কেমিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
ক্রাইম সিন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ১০ ধরনের আলামত সংগ্রহ করেছি। এখন এগুলো ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। কেমিকেল ল্যাব থেকে রিপোর্ট করবে এখানে কী ধরনের এক্সপ্লোশনের উপাদান আছে বা বিস্ফোরক আছে।
কতদিনের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়। ল্যাবরেটরিতে যাবে। সময় আমরা বলতে পারবো না। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ৯ সদস্যের ইউনিটটি নয়া পল্টনের ক্রাইম সিন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে আলামত সংগ্রহের কাজ করেন।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ক্রাইম সিন’ লিখে বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখার অর্থ হচ্ছে, ওই বেষ্টনী পেরিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে কেউ প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না। অপরাধ তদন্তের জন্য সেখান থেকে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করছে। পুলিশের তদন্তকাজের এ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি কার্যালয় কার্যত বন্ধ থাকবে।
একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে কেন ‘ক্রাইম সিন’ লেখা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে এ ব্যাপারে পুলিশের মতিঝিল অঞ্চলের সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানি গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় গতকাল মহাসমাবেশে অরাজকতা হয়েছে, তাই পুরো অঞ্চলটিকেই ‘ক্রাইম সিন অঞ্চল’ঘোষণা করা হয়েছে। আর যে অংশটি বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে, সেখান থেকেই মূলত হামলার নির্দেশনা এসেছিল, ককটেলের সরবরাহ হয়েছিল। এ কারণে অংশটি বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
সরেজমিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝোলানো ছিল। কার্যালয়ের সামনের পুরো অংশে ক্রাইম সিন লেখা হলুদ ফিতা দিয়ে ঘেরাও করা ছিল। আশপাশে বিএনপি'র কোনও নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।
কার্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল লক্ষ করা গেছে। তবে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে শুরু করে আশপাশের অবস্থা এখনও থমথমে। সড়কে যান চলাচলে কিছুটা গতি এলেও নয়াপল্টন সড়কের বিপণি বিতানগুলো শনিবারের মতো আজও বন্ধ রয়েছে।