ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেনের আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডিত ৮ আসামি হলেন- ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জিএম ননী গোপাল নাথ, এজিএম সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডিজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ, প্যারাগন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা ও পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আরও পড়ুন: মাইক্রোবাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৭
এদের মধ্যে
হুমায়ন কবির, ননী গোপাল, সাইফুল হাসান, সাইফুল ইসলাম রাজা ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে
পৃথক দুই ধারায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের দায়ে তাদের প্রত্যেককে
১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
যা প্রত্যেকের কাছ থেকে সমহারে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়যোগ্য হবে। এছাড়া প্রতারণার দায়ে
তাদের আরও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও তিন
মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সফিজ উদ্দিন, কামরুল হোসেন ও মাইনুল হককে ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের দায়ে তাদের প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যা প্রত্যেকের কাছ থেকে সমহারে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়যোগ্য হবে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে অতিষ্ঠ তিন মহাদেশের মানুষ
এছাড়া প্রতারণার
দায়ে তাদের আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও
তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামি ডিজিএম আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এদিন দণ্ডিত
তিন আসামি মাইনুল হক, সফিজ উদ্দিন ও কামরুল হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা
হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দণ্ডিত অপর ৫
আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দণ্ডিত ৮ আসামির সাজা একত্রে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন আদালত। সেক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সাজা ভোগ করতে হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সোহানুর রহমান এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: কলম্বিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৬
দুই কোটি ১৬
লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক
এরামুল হক চৌধুরী রমনা মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে
আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা।
২০১৫ সালের
৬ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে
আদালত ৫৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
উল্লেখ থাকে,
এর আগে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের কয়েক মামলায় আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড
দেন পৃথক দুই বিশেষ দায়রা জজ আদালত।