১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজাকার বাহিনী ও অন্যান্য আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য হয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধের ও দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে
রাজাকার, আলবদর, আলশামসসহ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের তালিকা প্রকাশের বিধান যুক্ত করে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ নামে একটি নতুন আইন করা হচ্ছে। আজ সোমবার (৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজাকার বাহিনী ও অন্যান্য আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য হয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধের ও দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। কাউন্সিল তালিকা তৈরি করে সরকারের কাছে তুলে দিয়ে প্রকাশের সুপারিশ করবে।
তিনি জানান, যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকছে প্রস্তাবিত এ আইনে।
উল্লেখ্য, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনে এতোদিন শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কথা উল্লেখ থাকলেও স্বাধীনতাবিরোধী, আলশামস, আলবদর, রাজাকারদের তালিকা তৈরির কোনও কথা বলা ছিল না। রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করতে আইনগত কোনও ভিত্তি ছিল না এতোদিন। আইনগত ভিত্তি না থাকায় রাজাকারের তালিকা তৈরির কার্যক্রম থেকে সাময়িতভাবে সরে আসে সরকার। এই তালিকা সরকারের কোন দফতর, সংস্থা বা কোন মন্ত্রণালয় কোন আইনের ক্ষমতাবলে করবেন- এ নিয়েও জটিলতা দেখা দেয়। ফলে স্থগিত করা হয় রাজাকারের তালিকা তৈরির কার্যক্রম।
আশা করা হচ্ছে, নতুন আইন কার্যকরের পর এই জটিলতা আর থাকবে না এবং তৈরি করা সম্ভব হবে রাজাকারসহ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের তালিকা।
এর আগে এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) আইনে অনেকগুলো ধারা সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন আইন তৈরির কাজটি করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।