রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকাকে শ্রেণিকক্ষে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে আইন বিভাগের শ্রেণীকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আশিক উল্লাহ নামে ওই শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময় বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হেনস্তাসহ নানা ধরনের কটাক্ষ করে তার নিজস্ব 'আশিক নামা' ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দিয়ে আসছিল। আজ সকাল ১০টায় হঠাৎ ক্লাস চলাকালে আশিক উল্লাহ নামে ওই শিক্ষার্থী রুমে প্রবেশ করে এবং ক্লাসের দরজা বন্ধ করে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। সেসময় তাকে মারধর করতেও উদ্বত হয়। এসময় সে শিক্ষিকা বের হওয়ার চেষ্টা করলে বাঁধা দেয় আশিক। এসময় ক্লাসে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ক্লাস থেকে বের হন ওই শিক্ষক। কয়েক শিক্ষার্থী এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেও হত্যার হুমকি দেয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিসহ তিন দফা দাবিতে বিভাগের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
সাধন মূখার্জি নামে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জানান, আশিক উল্লাহ আগে থেকেই বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের অপমান করে তার নিজস্ব পেজে পোস্ট করতো। এরআগেও সে একই ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ছুরিকাঘাত করেছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তার কিছুই করা হয়নি। প্রশাসনিক ভাবেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আজ সকালে আমাদের ক্লাসে আসমা ম্যামকে লাঞ্ছিত করে। আমরা এ ঘটনায় প্রতিবাদ করলে সে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। আমরা এ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কারের দাবি জানাই। স্থায়ী বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার কথা বলেন তিনি ।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকা বলেন, এই ছেলেটির সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই। সে আমাকে আজ ক্লাস রুমে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। আমার প্রিয় শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে আমাকে বের করে আনে। না হলে সে আমার অনেক ক্ষতি করতে পারতো। আমি এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছি। এখন বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিবে।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অনেক আগেই আমরা কমপ্লেইন পেয়েছি। আমরা একাডেমিভাবেও ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দেয়া হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, এই শিক্ষার্থীর নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা চেয়ে ছিলাম ছেলেটি এখান থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাক। কিন্তু সে এমন কাজ করতেছে সেটা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য। পূর্বের এবং আজকের অভিযোগ ভিত্তিতে তার নামে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট শৃঙ্খলা কমিটিতে যাবে তারপর সিন্ডিকেটে তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মাননীয় ভিসি স্যার ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছেন।