আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

অপরাধ আর প্রতারণার প্রাণ পুরুষ আল জাজিরার সামি

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
Image
কৈশোর থেকেই তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠতে থাকে। ১৪ বছর বয়সে সামি মাকে হারায়। তার দুই বছর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে তখন থেকেই অন্ধকার জগতে পা বাড়ায় সামি

কখনও তানভীর সাদাত, কখনও সায়ের জুলকারনাইন। আবার কখনও জুলকারনাইন সায়ের খান, এভাবে নাম বদলে প্রতারণাসহ অগণিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিটিই আল জাজিরা ফিল্মের মূল চরিত্র সামি। তার প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান। অল্প বয়সে মাকে হারানোর পর চুরি ও প্রতারণামূলক অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে বদলে ফেলেন মায়ের রাখা নাম তানভীর মোহাম্মদ সাদাত খান। সেনানিবাস থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার সময় তার নাম ছিল সামিউল আহমেদ খান। মাদক ও অন্ধকার জগতে জড়িয়ে বেছে নেন নতুন নাম সায়ের জুলকারনাইন। গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ি উগ্রবাদীদের সঙ্গে জড়িত সামি।

আল জাজিরা ইস্যুতে তার সহপাঠী ও পরিচিতরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব অভিযোগ করছে। শিশুকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত যার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাকে কেন্দ্র করেই আল জাজিরার তদন্ত টিম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী নিয়ে ফিল্ম তৈরি করেছে।

পিতার ভুয়া নাম দিয়ে পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সে করেন সামি। দুই যায়গায় তিনি পিতার নাম দিয়েছেন ওয়াসিট খান (Wasit Khan)। কিন্তু তার বাবার প্রকৃত নাম বাসিত খান (Basit Khan)।

শিশুকালেই অপরাধের হাতেখড়ি

সামির বাবা মো. আবদুল বাসেত খান ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। আবদুল বাসেতের চার সন্তানের মধ্যে সামিউল আহমেদ খান সবার বড়। জন্ম ১৯৮৪ সালে হলেও স্কুলের তথ্য মোতাবেক তার জন্ম তারিখ ৮ অক্টোবর, ১৯৮৬। কৈশোর থেকেই তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠতে থাকে। ১৪ বছর বয়সে সামি মাকে হারায়। তার দুই বছর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে তখন থেকেই অন্ধকার জগতে পা বাড়ায় সামি। ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর ভর্তি হয় কুমিল্লার ইস্পাহানি স্কুলে। ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে ড্রাগ নেয়া, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগ ওঠে সামির বিরুদ্ধে। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে সহপাঠী বন্ধুরাও তাকে এড়িয়ে চলতো। কৈশোর বয়সে চুরিতে হাত পাকান সামিউল আহমেদ খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামি। ১৭ বছর বয়সে ২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসিবিতে কর্মরত মেজর ওয়াদুদের বিদেশ থেকে আনা ট্র্যাকস্যুট চুরি করে ধরা পড়েন। ২০০০ সালের জুলাই মাসে টাইগার অফিসার্স মেস থেকে হাতির দাঁত চুরি করে চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে অঙ্গনা জুয়েলার্সে বিক্রি করেও ধরা পড়েন।

বাবার চাকরির সুবাদে নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, কখনও ক্যাপ্টেন হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ঢাকা সেনানিবাসে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে সামি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু উৎপলের কাছে নিজেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে প্রমাণের জন্য বেল্ট, বুট ও র‍্যাংক ইউনিফর্ম কেনেন। উৎপলের বাসা থেকেই সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে ট্যাক্সি ক্যাব দিয়ে সেনানিবাসসহ ঢাকার একটি পত্রিকা অফিস, রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি ও চিড়িয়াখানা ঘুরে জাহাঙ্গীরগেট হয়ে সিএমএইচে প্রবেশের সময় দুপুর ২টায় মিলিটারি পুলিশের (এমপি) হাতে ধরা পড়ে সামি। এর ঠিক দুদিন পর ২ মে বাবার অঙ্গীকারনামায় আর্মি এমপি ডেস্ক থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। 

র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণা ও গ্রেপ্তার

২০০৬ সালের ২০ জুলাই র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের এজে টেলিকমিউনিকেশন থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে একটি ভুয়া চেক দেন। একইভাবে প্রাইজ ক্লাব নামক একটি কম্পিউটার ফার্ম থেকে ১০টি ল্যাপটপ কেনার কথা বলে, পরে চেক দিয়ে ২টি ল্যাপটপ নিয়ে আসে। চেক ডিজঅনার হলে অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার পর তাকে এনপিজি ঘোষণা করে সব সেনানিবাস ও দপ্তরে অবাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার পর অনিয়ন্ত্রিত ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য সামিকে ত্যাজ্য করেছিলেন তার বাবা। পরদিন ২০০৬ সালের ২৩ জুলাই এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন লে. কর্নেল আবদুল বাসেত।

সামির যত নারী কেলেঙ্কারি

সেনাকর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছিলেন সামি। এন্টেনা ভাঙ্গা ভি.এইচ.এফ (ওয়াকিটকি) নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়ার নামে কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা নেন। ব্যবসার কথা বলেও অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে এক সেনাকর্মকর্তার মেয়েকেও বিয়ে করেন। শ্বশুরের অর্থে হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার পর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন সামি। ব্যবসা বাণিজ্যের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য অনেকেই তাকে খুঁজছেন। বহুদিন প্রকাশ্যে আসতে পারেন না।

সামির বিরুদ্ধে মামলা

গেল বছর সাইবার ক্রাইম ইউনিট অনলাইনে জাতির পিতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কটূক্তি ও আপত্তিকর প্রচারণা এবং করোনা ভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারসহ বিভিন্ন গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাদের মধ্যে অন্যতম শায়ের জুলকারনাইন সামি। উই আর বাংলাদেশি পেইজ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে অভিযুক্তদের ল্যাপটপ ও মোবাইল অনুসন্ধান করে ১১ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় গোয়েন্দা বাহিনী। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাসনিম খলিল ও সামিসহ উক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের মে মাসে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়। এ মামলার প্রতিবাদে কলাম লিখেছিলেন ডেভিড বার্গম্যান। 

সামির এসব অপরাধের বিষয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে তার বন্ধু সাইফ এম ইশতিয়াক হোসাইন (Saif M Ishtiak Hossain) একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল

সেনাপ্রধানের ভাইয়েরা এত বড়ই মাফিয়া যে তাদের বিদেশে পালিয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে হয়। তারা দেশে আসলেই সরকার, আইন ও বিচারবিভাগ তাদের ঘাড় মটকে দিত। আলজাজিরার ভিডিও প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন কতটা শক্তিশালী যে মাফিয়ারাও দৌঁড়ের উপরে থাকে!! তারা নিরাপদে দেশে থাকতে পারে না, মাফিয়াগিরি করতে পারে না।

তবে আমি এখানে একটু অন্য প্রসঙ্গে কথা বলবো। আমি বরং ভিডিওতে দেখানো হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী সামি এর কথা বলব। সে আমার ছোটবেলার স্কুলের ক্লাসমেট। তার বাবা আর্মির ডাক্তার ছিল, এবং আমার বাবার কলিগ ও বন্ধু। সামির একজন ছোট ভাই ছিল, তার নাম মাহি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সামি ও তার ছোট ভাই তাদের মাকে হারায়। তার ২ বছর পরই তাদের বাবা ২য় বিয়ে করে। তখন থেকেই সৎ মায়ের সংসারে সামি বখে যেতে শুরু করে। ১৫-১৬ বছর বয়স থেকেই ড্রাগ নেয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ এমন কোনো কাজ নেই যা সে করতো না। তার নামে স্কুলে অনেক ডিসিপ্লিনারি অভিযোগ রয়েছে।

তার বাবা ঢাকায় পোস্টিং হবার পর সে ঢাকায় থাকতে তার বাবার সেনা ইউনিফর্ম পরে নিজেকে সেনা অফিসার পরিচয় দিয়ে একটি মেয়েকে পটায় এবং পরে পালিয়ে বিয়েও করে। পরে জানাজানি হলে তাকে তার বাবা বাসা থেকে বের করে দেয়। ইতিমধ্যে আমার সাথে তার এরপর আর কোনো রকম যোগাযোগ হয় না। তার কয়েক বছর পরে তারা বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সামি এসএসসি পাস করলেও ইন্টার পাস করতে পারে নাই শুনেছিলাম। পরে কমন বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম যে ১ম বউকে ডিভোর্স দিয়ে (ডিভোর্স দিয়েছিল কিনা সিওর না) সে সেনাবাহিনীর আরো একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়েকে পটায় এবং শ্বশুরের সহায়তায় হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করে। (এইটা সে কিভাবে করে সে ব্যাপারে তদন্ত করা যেতে পারে)

এত ডিস্টার্বড ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি এডিক্টেড ছেলে টাকার জন্য অনেক কিছুই করতে পারে। এবং তখন থেকেই টাকার জন্য সে চুরি করা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করতো। তার মত ছেলের রেফারেন্স দিয়ে আলজাজিরা একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আর্মি চিফকে দুর্নীতিবাজ ও মাফিয়া বানায় দিল, সেটা দেখে ছাগুরা লাফাইতে পারে, তবে আমি পারলাম না। ইন্টার ফেল সামিও কিভাবে হাঙ্গেরিতে ব্যবসা শুরু করলো সেটা ধরে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা টান দিলেই আরো তথ্য বেরিয়ে আসবে।

সামির ব্যাপারে যা বললাম তার সত্যতা আমার তখনকার স্কুলের বন্ধুরাও ভেরিফাই করতে পারে। তাদেরকেও ট্যাগ করলাম। (এখানে দুইজনকে ট্যাগ করা হয় যারা হলেন, Tawsif Rahman Mishu ও  Nazmus Saqeb)।

সংযুক্তি: সামি এক্স ক্যাডেট। ক্লাস এইটে তাকে ক্যাডেট থেকে বের করে দেয়া হইছিল ডিসিপ্লিনের কারণে। পরে আমাদের সাথে কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়।

https://www.facebook.com/hossain.saifuddin16/posts/10158313586174864

সামির অপর পরিচিত বন্ধু ওমর শরিফ আরেফিনও সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে সামির সম্পর্কে নানা তথ্য উল্লেখ করেছেন। আরেফিনের স্ট্যাটাসটিও পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হল;

সে প্রায় আঠারো বছর আগের কথা, আই আই এম টি তে কোর্স করছি, বন্ধু প্রদ্বীপ একটা ছেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, এক্স ক্যাডেট, সুন্দর মতো চেহারা স্মার্ট আর স্মাইলিং ফেস। ছেলেটার বাবা নাকি কর্নেল, বাসায় সৎ মা, মিলিটারি একাডেমি থেকে বার করে দিয়েছে আবার প্রেম করে একটা বিয়েও করেছে, আর এসব কারণে নাকি তার নিষ্ঠুর বাবা সৎ মায়ের ষড়যন্ত্রে তাকে ত্যায্য করেছে। আমার কাছে তার দুঃখের কাহিনী বলতো প্রায়ঃশই, যতোদুর মনে পড়ে আই আই এমটিতে কিছুদিন চাকরিও করেছিল।

এ সুবাদে আলাপচারিতা বাড়লো, টুকটাক চা সিগারেট, নাস্তা পানি এক্স ক্যাডেট হিসেবে তার আমার কাছে দাবি-ই ছিল, আমিও সেটাতে কার্পন্য করতাম না। তারপর একদিন সে ফোন দিল তার স্ত্রী নাকি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত, কিছু টাকা দরকার, আমার কেমন যেন সন্দেহ হলো, ঘটনা চক্রে তার স্ত্রীর স্কুলের বান্ধবী তখন আমার বাগদত্তা। কি মনে করে তাকে ফোন দিলাম ভাবলাম তার বান্ধবী মূমুর্ষু সেটা জানাই। তাকে ফোন করে তো আমি থ হয়ে গেলাম, ছেলেটার স্ত্রী নাকি এইমাত্র তার বাসা থেকে বের হলো, সম্পূর্ণ সুস্থ!!

এরপর থেকে আমি আর সেই ছেলেকে খুব একটা লাই দিতাম না। এরপর দিন গেল, একদিন শুনলাম সেই ছেলে অফিস থেকে টেলিফোন সেট চুরি করে ধরা খেয়েছে, কিছুদিন পর জানলাম তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা। এভাবেই চলছিল তারপর আবার দেখা হলো হিরোর সাথে, সাদা পাঞ্জাবি আর জিন্স পড়ে সে হাতে একটা এন্টেনা ভাঙ্গা ভিএইচএফ (ওয়াকি টকি) সেট নিয়ে ঘুরছে। ভি এইচ এফ দেখে জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার ভাঙ্গা রেডিও নিয়ে কি কর, সে বল্লো সে নাকি ইউ এস এম্বেসীতে সিকিউরিটির কাজ করে তাই রেডিও রাখতে হয়! সাধারনতঃ এই সব রেডিও এর রেঞ্জ হয় কয়েকশ মিটার! অথচ আমরা তখন শান্তিনগরে বসে বিয়ে খাচ্ছি, বুঝলাম এটাও তার একটা ভেল্কি! তার কিছুদিন পর সে তার স্ত্রী সন্তান রেখে হাওয়া হয়ে গেল, এর ভেতর পালিয়ে বিয়ে করার কারনে তার স্ত্রীকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিল তার বাবা মা, মেয়েটা তখন বিশাল একটা দুর্বিপাকে পড়লো। স্বামী নিরুদ্দেশ, ছোট বাচ্চা, বিয়ে বাচ্চা নিয়ে পড়াশুনাতেও বাধা পড়েছে, কোন মতে একটা চাকরি করে সে তখন তার এই দুঃসময় পার করেছিল। তার বেশ কিছুদিন পর একটা রেস্তরায় বসে আছি, দেখি সেনাবাহিনীর একটা জ্বীপ থেকে নামছে হিরো, এর ভেতর তার স্বাস্থ্য প্রায় মাশাল্লাহ তিনগুন হয়েছে, সাথে একটা মেয়ে।

আমার সাথে দেখা হওয়ায় সে হতচকি্‌ত কিন্তু চাল্লু ছেলে ঘাবড়ালো না, বলে নতুন বিয়ে করেছে, জেনারেলের মেয়ে আলহামদুলিল্লাহ! আমার স্ত্রী সাথে সাথে তার বান্ধবীকে ফোন দিয়ে সব কথা জানালো, তার বান্ধবী মানে হিরোর প্রথম স্ত্রী তো আকাশ থেকে পড়লো এই কথা শুনে, সে কিছু জানেই না এ সম্পর্কে! এনিয়ে নারী মহলে নাকি ব্যপক কাল বৈশাখীর তান্ডব লীলা চলেছিল বলে শুনেছি, আমি মনে মনে বলেছিলাম লাকী ম্যান! তারপর দিন গেল, আমরা ড. কামালের ঘর জামাই তথাকথিত সাম্বাদেক জনৈক বার্গ্ম্যানের সাথে পরিচিত হলাম, রাজাকার গু আ জেলের চাক্কি পিষতে পিষতে অক্কা গেল, বাকী শুয়োরগুলা জাহান্নামবাসী হলো আলহামদুলিল্লাহ! পদ্মা সেতুও হয়ে গেল প্রায়, হঠাত আজকে ইউটিউবে দেখি সেই হিরোর চেহারা, আলহামদুলিল্লাহ তার স্বাস্থ্য এখন আরো ভালো, ভিডিও দেখে চিনতে পাড়লেও একটু দ্বিধা হলো, নানা সূত্রে শিওর হলাম যে হ্যা এটাই সেই হিরো, আলজাজিরার সামী!

বিঃদ্রঃ এইমাত্র এই সামীজ্বীর আরেক স্কুল বন্ধুর পোস্ট থেকে জানতে পারলাম যে সামীজ্বী আসলে এক্স ক্যাডেট নন।

বিঃ বিঃ দ্রঃ এইমাত্র আবার জানলাম যে সামীজ্বী আসলে এক্স ক্যাডেট কিন্তু ক্লাস এইটে তাকে বার করে দেওয়া হয়!! যাক যতটা ৪২০ ওকে ভাবছিলাম ও মনে হয় ততোটা ৪২০ না...।

https://www.facebook.com/arefeen.emon/posts/3948998071829387

নিউজ ট্যাগ: আল জাজিরা

আরও খবর



ফিনল্যান্ডে বুলিংয়ের কারণে স্কুলে গুলি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিনল্যান্ডে মঙ্গলবার স্কুলে কিশোরের গুলিতে সহপাঠী নিহতের মূল কারণ ছিল বুলিং। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দারা।

গত মঙ্গলবার ফিনল্যান্ডে এক স্কুলে ১২ বছরের এক ছেলে গুলি চালায়। এতে তার সহপাঠী নিহত হয়। রাজধানী হেলসিংকির কাছে অবস্থিত এক শহরে ঐ হামলার ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছে৷

গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, কাজটি যে পূর্বপরিকল্পিত তার প্রমাণ প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে৷’

বিবৃতিতে সন্দেহভাজন হত্যাকারী যে বুলিংয়ের শিকার হয়েছিল তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ সে বিষয়টি জানতো কি না সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সন্দেহভাজন হত্যাকারীর বয়স কম হওয়ায় আদালতে তার বিচার করা সম্ভব নয়। তাই তাকে সোশ্যাল সার্ভিসের কাছে রাখা হয়েছে। হামলার বিষয়টি সে স্বীকার করেছে।

ফিনল্যান্ডে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে স্কুলে গোলাগুলির ঘটনার পর ২০১০ সালে বন্দুক সংক্রান্ত আইন কঠোর করা হয়। লাইসেন্স আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২০ করা হয়।


আরও খবর



২ বাংলাদেশিকে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল বাফেলো শহর

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রবাসে বাংলা

Image

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ২ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় উত্তাল নায়াগ্রা ফলসখ্যাত বাফেলো শহর। রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের তোপের মুখে পড়েন বাফেলো শহরের মেয়র ও পুলিশ কমিশনার।

স্থানীয় সময় দুপুরে নামাজের পর হাজারো মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে জড়ো হন বাফেলো মুসলিম সেন্টারে। বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

এ সময় স্থানীয় বাফেলো শহরের মেয়র বায়রন ব্রাউন ও পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রামাগলিয়া জনতার তোপের মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ঘটনার একদিন পর সন্দেহভাজন বন্দুকধারী দুর্বৃত্তের ছবি প্রকাশ করলেও তার নাম পরিচয় জানাতে পারেনি বাফেলো পুলিশ। অপরাধীকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

এদিকে নিহত বাবুল মিয়ার পাঁচ মাসের অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রীর আহাজারিতে নিউইয়র্কের বাফেলো শহরের আকাশ-বাতাস যেন ভারী হয়ে ওঠেছে। অভিবাসন নিয়ে বছর খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন নুসরাত জাহান। স্বামীকে হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা। এই পৃথিবীতে নিকট আত্মীয় বলে তার আর কেউ রইল না। কিভাবে সন্তানকে মানুষ করবেন তিনি? গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যত-ই বা কী হবে?

বাবুল মিয়ার স্ত্রী নুসরাত জাহান বলেন, আজকে আমি এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি যেখানে আমি আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমার স্বামীকে যারা এই নৃশংসভাবে বিদায় করে দিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

থমথমে পরিবেশ গুলিতে নিহত অপর বাংলাদেশি আবু সালেহ ইউসূফের বাড়িতে। জনশূন্য মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশিদের সঙ্গে থাকবেন বলে মাত্র সাত মাস আগে ইউসূফও এসেছিলেন নিউইয়র্কের বাফেলোতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হতে হলো তাকে। ইউসূফের স্ত্রী এখন সন্তানদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। স্বপ্নের যুক্তরাষ্ট্র যেন দিনদিন দু:স্বপ্ন হয়ে উঠছে অভিবাসীদের জন্য।

নিহত আবু সালে ইউসূফের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কোনো অপরাধ করেনি। যারা আমার সন্তানদের এতিম করলো আমি তাদের বিচার চাই। আমেরিকান সরকারের কাছে আমারদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই।


আরও খবর



রাত ১টার মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের ১৫ জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে এসব অঞ্চলে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

রোববার (৭ এপ্রিল) বিকাল ৪টা থেকে রাত ১টার মধ্যে এই ঝড় বয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানোর কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, পাবনা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং কক্সবাজারের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে  ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এদিন (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা (২-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

পাবনা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ; বরিশাল, পটুয়াখালী ও রাঙামাটি জেলাসহ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে।


আরও খবর



নারীবাদ নিয়ে নোরা ফাতেহির মন্তব্যে ক্ষুদ্ধ নেটিজেনরা

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ড্যান্সার ও অভিনেত্রী নোরা ফাতেহি। সম্প্রতি মাডগাঁও এক্সপ্রেস সিনেমায় নজর কাড়েন তিনি। এবার এক সাক্ষাৎকারে নারীবাদ নিয়ে এমন এক কথা বলে বসলেন তিনি, যাতে তার ওপর রেগে আগুন নেটিজেনরা।

সম্প্রতি একটি পডকাস্টের সাক্ষাৎকারে নোরা বলেছেন, নারীবাদ আসলে সমাজটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আমি বলছি না যে মেয়েরা পড়াশোনা করবে না বা চাকরি করবে না; অবশ্যই করবে। তবে, এর একটা মেয়াদ বা সময়কাল আছে। পুরুষ চাকরি করবে, টাকা উপার্জন করবে, খাবার আনবে ও পরিবারকে রক্ষা করবে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে নারী মা হবে, সন্তানের দেখাশোনা করবে, রান্না করবে, ঘরের কাজ করবে। নারীপুরুষের ভূমিকা এমনই হওয়া উচিত। এতে খারাপ কী! আমি এভাবেই চিন্তা করি। শুনলে মনে হবে, আমি হয়তো এখনো আদ্যিকালেই পড়ে আছি বা ওল্ড স্কুল। তবে, এটাই আমার বিশ্বাস।

নোরার কথা শুনে কার্যত অবাক সবাই। তিনি নিজে দাপিয়ে কাজ করছেন বহির্বিশ্বে, অথচ তিনি মেয়েদের বাড়ির কাজে বাঁধতে চাইছেন। নোরার কথা বিরক্ত হয়ে এক ব্যক্তি লেখেন, উনি কেন এখনো বিয়ে করে বাচ্চা লালনপালন না করে বেপর্দা হয়ে নাচানাচি করে বেড়াচ্ছেন? সিনেমায় যতই নায়িকা হন না কেন, ব্যক্তিগত জীবনে আপনি আসলে একটা খলচরিত্র।

অন্য আরেক ব্যক্তি লেখেন, এত ফালতু কথা আমি জীবনে শুনিনি। বুঝেছি, উনি কাদের খুশি করতে এসব কথা বলছেন! ওনার ভক্তরা তো সাধারণত পুরুষ। উনি আসলে ওনার পুরুষ ভক্তদের খুশি করতে চান।


আরও খবর



সদকাতুল ফিতর কখন কার ওপর ওয়াজিব

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

পবিত্র রমজানের ইবাদতের মধ্যে সদকাতুল ফিতর আদায় করা অন্যতম একটি ইবাদত। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং এ আনন্দে যেন মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্য শরিক হতে পারে এ জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে সদকাতুল ফিতর। রমজানের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিপূর্ণতার জন্যই আবশ্যক করা হয়েছে এটি।

ইমাম ওয়াকি ইবনুল জাররাহ বলেন, রমজান মাসের জাকাতুল ফিতর নামাজের সিজদায়ে সাহুর সমতুল্য। অর্থাৎ নামাজে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু দিলে এটা পূর্ণ হয়ে যায় তেমনি রোজার মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে সাদকাতুল ফিতর দিয়ে এর প্রতিকার হয়। তাছাড়া ধনী-গরিব উভয়ে যেন অন্তত ঈদের দিন উত্তম পোশাক ও উন্নতমানের খাবার খেতে পারে এ জন্যই ফিতরার ব্যবস্থা।

ফিতরার নিসাব

যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও ঋণ  ছাড়া সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা কিংবা এর সমমূল্য কোন সম্পদ বা টাকা থাকে, তাহলে তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

সদকাতুল ফিতর উত্তম হলো ঈদের নামাজের আগে আদায় করে দেয়া। কেননা রাসুল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।

জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতর দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেয়াও জায়েজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর আদায় করাকে আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি :  ১৫১২)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা রোজা পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ : ১৬০৯)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য, যব, বা খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির বা কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করতাম ৷ (বোখারি : ১৫০৬)।

হাদিস শরিফে এ পাঁচটি দ্রব্যের যে কোনো একটি দ্বারা সদকায়ে ফিতর আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে ৷ যেন প্রত্যেকে নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী আদায় করতে পারে তবে সবার জন্য সবচেয়ে কম দামের দ্রব্য দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করা অনুচিত; বরং যে ব্যক্তি খেজুর, কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করার সামর্থ রাখে, সে তা দিয়েই আদায় করবে ৷

সদকায়ে ফিতর যাদের উপর ওয়াজিব

ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় যার কাছে যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, বাসগৃহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সমমূল্য পরিমান সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।

ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় এ পরিমাণ মালের মালিক থাকলে, তার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে। যে শিশু-সন্তানটি ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে ভূমিষ্ট হবে, তার ফিতরাও আদায় করতে হবে।

অর্থাৎ পরিবারের যতজন সদস্য ততটি ফিতরা হিসেবে) সকলের ফিতরা আদায় করতে হবে। প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করবেন।

সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি  : ১৫১২)।

ইবনে আব্বাস (রা.) একবার রমজানের শেষ দিকে বসরায় খুতবা প্রদান করেন। সেখানে তিনি বলেন, তোমাদের রোজার সদকা আদায় করো। লোকেরা যেন ব্যাপারটা বুঝতে পারে নি।

তখন ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, এখানে মদিনার কে আছে দাঁড়াও। তোমাদের ভাইদেরকে বলো, তারা তো জানে না। বলো যে, রাসূল (সা.) এই সদকা আবশ্যক করেছেন। এক সা খেজুর বা যব অথবা আধা সা গম প্রত্যেক স্বাধীন-দাস, পুরুষ-নারী, ছোট-বড় সবার ওপর ওয়াজিব।  (আবু দাউদ: ১৬২২)।

যারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে। জাকাতের জন্য সম্পদের বর্ষপূর্তি শর্ত হলেও ফিতরায় এ শর্ত নেই। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নিজের পক্ষ থেকে, নিজের প্রাপ্ত এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে এবং নিজের সেবক-সেবিকাদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। সন্তান বা অধীনস্থরা অমুসলিম হলেও তাদের ফিতরা আদায় করা আবশ্যক।

গম বা আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির- এ পাঁচটি জিনিস বা তার মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। সামর্থ্যানুসারে সবার উচিত উৎকৃষ্ট জিনিস সদকা করা। রাসূল (সা.)-এর সময়ে সামর্থ্যানুযায়ী সবাই উত্তম পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতেন।

সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, দাতার কাছে যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি। (বোখারি : ১৯৭৪)।

এ বছরের সদকাতুল ফিতরের নির্ধারিত পরিমাণ‌

ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ' এর অনুকরণে নিম্নে এবছরের (১৪৪৫ হিজরী/২০২৪ইং) এর সদকাতুল ফিতরের বাজার মূল্য তুলে ধরা হলো:

১. উন্নতমানের আটা বা গমের ক্ষেত্রে ফিতরা এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা) বা এর বাজার মূল্য ১১৫ টাকা।

২. যবের ক্ষেত্রে (এক সা) ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৪০০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।

৩. খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ৪৭৫ টাকা

৪. কিসমিসের ক্ষেত্রে  ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিসমিস বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ১৪৫ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে।

৫. পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৭০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।

ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা অদ্ভুত মানসিকতার পরিচয় দেই। আমাদের দেশে সাধারণত সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্ধ সা গম এর মূল্য হিসেবে জনপ্রতি ১০০ টাকা হিসেবে সবাই আদায় করতে চান।

কোটিপতি হতে মধ্যবর্তী সবাই সর্বনিম্ন টাকা দিয়েই দায়মুক্ত হতে চান। সবচেয়ে কম মূল্যের গমের হিসাবে সবাই সাদকা করার প্রবণতা খুব বেশি। বিষয়টি রাসূল (সা.)-এর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।  বরং এটা তো সর্বনিম্ন সম্পদের মালিকের জন্য চলে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে তাওফিক দিয়েছেন, তাদের অন্যান্য দ্রব্য দিয়ে সর্বোচ্চ সদকায়ে ফিতর আদায় করা উচিত। তাই সামর্থ্যানুযায়ী বেশি মূল্যের পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪