রাজধানীর আদাবরে একটি বাসা থেকে নিখোঁজ তিন বোনকে শনাক্ত করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বর্তমানে তারা যশোরে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে দুজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাসা থেকে যাওয়ার সময় তারা ব্যাগে পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেট ও টাকা-স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।
বড় বোন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকেয়া (১৮), মেজো বোন জয়নব আরা (১৭) ও ছোট বোন খাদিজা আরা (১৬)।
মেজো বোন জয়নব ও ছোট বোন খাদিজা এবার একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থী টিকটকে ‘আসক্ত’ ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিন বোনকে শনাক্তের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা ৪ মিনিটের দিকে আদাবরের শেখেরটেকের পিসিকালচারের খালার বাসা থেকে বের হন তিন বোন। এ ঘটনায় তাদের খালা সাজিদা নওরীন আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর র্যাব-২ ও সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে র্যাব-২ এর একটি দল তাদের যশোরে শনাক্ত করে হেফাজতে নেয়। নিখোঁজ ওই তিনজনকে নিয়ে রাতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে র্যাব।
এদিকে, সন্ধান পাওয়া নিখোঁজ ওই তিনজনের খালা সাজিদা নওরীন বলেন, আমার বড় বোন তিন বছর আগে মারা যান। আর দুলাভাই অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। খিলগাঁওয়ে আমার ছোট বোনের বাসায় থাকত তিন ভাগ্নি রোকেয়া, জয়নব ও খাদিজা। জয়নব ও খাদিজার এসএসসির পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ধানমন্ডি গার্লস হাইস্কুলে। সে কারণে আদাবরে আমার বাসায় এসে তারা পরীক্ষা দিচ্ছিল। গত ১৫ নভেম্বর একটি পরীক্ষা হয়েছে তাদের। আরও দুটি পরীক্ষা বাকি। এর মধ্যেই হঠাৎ তারা একসঙ্গে বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।
তিনি বলেন, নিখোঁজের পর পরই আদাবর থানায় যাই। কিন্তু থানা থেকে প্রথমে জিডি কিংবা মামলা না নিতে চাইলে আমি কান্নাকাটি করি। আমার কান্নাকাটি দেখে তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা পর একটি জিডি লিপিবদ্ধ করে।
তার তিন ভাগ্নি টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে আসক্ত ছিলেন জানিয়ে সাজিদা নওরীন বলেন, টিকটকের মাধ্যমে কারও প্ররোচনায় তারা বাসা থেকে বের হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছি। যাওয়ার সময় তাদের পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেট, টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। বয়স কম হওয়ায় অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করতাম। তারা আমাদের মোবাইল ছাড়া অন্য কোনো মোবাইল ব্যবহার করতো না। তবে লুকিয়ে কোনো মোবাইল ব্যবহার করতো কি না তা আমরা জানি না।
এ বিষয়ে আদাবর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ওই বাসার সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছি, তারা তিনজন ব্যাগ গুছিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।