মীরসরাই উপজেলার
জোরারগঞ্জ থানার ধূম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুম গ্রামে বিয়ের পরও শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায়
রুপনা দাশ (৩৩) নামে এক গৃহবধূ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই)
ভোরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি
ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
এর আগে সোমবার
(১৮ জুলাই) বিকেলে দক্ষিণ ধুম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রুপনার বোন বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ
থানায় রুপনা দাশের স্বামী রুপম, তার মা-বাবা ও ভাই-বৌদিসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করে মামলা
দায়ের করেন। এদিকে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বিকেলে মামলায় রুপনার স্বামী রুপম কুমার দে,
শশুর রাখাল কুমার দে, শাশুড়ি বেলা রানি দে, ভাসুর কাঞ্চন কুমার দে ও জা উর্মিকে গ্রেফতার
করে আদালতে পাঠিয়েছেন জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।
রুপনা দাশের পরিবার
ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুপনার সঙ্গে রুপমের তিন বছর আগে বিয়ে হয়। রুপনা ও রুপম দম্পতির দুই বছরের ।
প্রমা দে নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। রুপনা রুপমকে
নিয়ে বিয়ে পর থেকে একাধিকবার শশুর বাড়িতে স্থান চাই। কিন্তু রুপমের পিতা রাখাল কুমার দে তাকে বাড়ি স্থান দেয়নি। ঘটনার দিন
দুপুরে রুপনা তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে শশুর বাড়িতে গেলে পুনরায় তাড়িয়ে দেয়। পরে বিষয়টি
স্থানীয় ধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ভূঁইয়াকে জানালে তিনি সুরাহারও আশ্বাস
দেন। কিন্তু এরপর স্থানীয় শান্তিরহাট বাজার থেকে একটি ব্যাগে করে কেরোসিন কিনে পুনরায়
শশুর বাড়ি গিয়ে আশ্রয় চান এবং তার কন্যা শিশুর অধিকার চান রুপনা।
শশুর-শাশুড়ি স্থান
দেয়নি রুপনা ও তার কন্যাকে। সোমবার বিকেলে দক্ষিণ ধুম গ্রামে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের
সদস্যদের সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন রুপনা। পরে দগ্ধ অবস্থায় রাতে তাকে
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ভোরে চট্টগ্রাম
মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
জোরারগঞ্জ থানার
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূর হোসেন মামুন জানান, স্বামীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের
সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে রুপনা দাশ নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
সেখান থেকে দগ্ধ অবস্থায় রাতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে
আসা হয়।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) চমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনায় রুপনার বোন বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় রুপম, তার মা-বাবা ও ভাই-বৌদিসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজিরে করা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।