ইউক্রেনের খেরসনসহ অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রুশ সেনারা গম লুট করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছে, এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য রুশ সরকারের কাছে নেই।
বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘খেরসন ও তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে গম লুটপাট করার অভিযোগ এসেছে। আমরা এই অপরাধমূলক তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা চাই, অবিলম্বে এসব অপতৎপরতা বন্ধ হোক, অধিকৃত বন্দরসমূহ ফের চালু করা হোক এবং বাণিজ্যিক জাহাজের গতিপথ থেকে সব মাইন অপসারণ করা হোক।’
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, মহামারির কারণে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চলমান সংকটকে আরও তীব্র করতেই রুশ সেনাদের এই নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘একদিকে রুশ সেনারা খেরসন অঞ্চলে গম লুটপাট করছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দরে খাদ্যশস্যবাহী জাহাজগুলো আটকে রেখেছে এবং বাণিজ্যিক জাহাজের গতিপথে মাইন পেতে রেখেছে। বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতেই এ পন্থা বেছে নিয়েছে তারা।’
এদিকে, পৃথক এক বিবৃতিতে শুক্রবার ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলর দপ্তর থেকে বলা হয়, গত ২৬ এপ্রিল ইউক্রেনের দক্ষিনাঞ্চলীয় শহর জাপোরিজ্জয়ায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ইউক্রেনীয় কৃষকদের কাছ থেকে ৬১ টন গম লুট করে নিয়ে গেছে রুশ সেনারা। এই ঘটনার জেরে ইতোমধ্যে ইউক্রেনের সরকারের পক্ষ থেকে একটি ফৌজদারি মামলাও করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তর।
ইউক্রেনের সরকারের এই অভিযোগ যাচাই করতে ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের মাধ্যমে ক্রেমলিনে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না। এসব তথ্য কোত্থেকে তারা (ইউক্রেন) পেয়েছে তাও বলতে পারছি না।’
আন্তর্জাতিক খাদ্যশস্য কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে গম রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা দেশের তালিকায় ৪র্থ স্থানে আছে ইউক্রেন। প্রতিবছর ৪৪ দশমি ৭ মিলিয়ন গম বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ করে দেশটি। তবে চলতি বছর দেশটিতে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে রপ্তানির পরিমাণ।