ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে জেলা মহিলা লীগের কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ছকড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাধা রানী ভৌমিক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে ৫৫ নম্বর সদস্য হিসেবে তার নাম রয়েছে।
প্রায় ২০ বছর ধরে শিক্ষকতার চাকরি করেন রাধা রানী। পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন। দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই শিক্ষিকা স্কুল ফেলে বেশিরভাগ সময়ই রাজনীতির পেছনে সময় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমের কর্মী হিসেবে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে।
একটি রাজনৈতিক দলের পদে সরকারি বেতনভুক্ত একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পদপ্রাপ্তির বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯ এর বিধি ২৫-এ উল্লেখ রয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে বা কোনোভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন না। বাংলাদেশে অথবা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা মহিলা লীগের সদস্য পদ পাওয়া রাধা রানী ভৌমিকের স্বামীর নাম বলরাম ভৌমিক। ফরিদপুর মধুখালীর পৌর এলাকার গাড়াখোলা মহল্লার বাড়িতে থাকেন তিনি। এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে।
জানতে চাইলে রাধা রানী ভৌমিক বলেন, ‘আমি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য তবে এই পদের জন্য নিজে কোনো আবেদন করিনি। আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার চাকরি করে এই পদে থাকা যায় কি না আমার জানা নেই। তবে আপনারা যদি বলেন তাহলে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে জানতে চাইবো আসলেই এই পদে থেকে রাজনৈতিক দল করা যায় কি না।’
এ বিষয়ে জেলা মহিলা লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগম বলেন, রাধা রানী যখন থেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন তখন স্কুলটি বেসরকারি ছিল। সদ্য গঠিত জেলা মহিলা লীগের কমিটি গঠনের অনেক বছর আগেই স্কুলটি সরকারি হয়েছে উল্লেখ করা হলে মাহমুদা বেগম বলেন, আসলে এটি কেন্দ্র থেকে করা হয়েছে। তবে তিনি আমাদের মিটিং-মিছিলে অংশ নেন না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে না। সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি তো হাইকোর্ট না যে ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’