রংপুরের কাউনিয়ায়
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সানজিদা আক্তার ইভাকে হত্যার নেপথ্যে ছিল প্রেমিকের সঙ্গে বিচ্ছেদ।
কিলিং মিশনে অংশ নেয় সানজিদার কথিত প্রেমিক। একাধিক প্রেমের কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে
হত্যার শিকার হন তিনি। এমনটিই বলছে পুলিশ।ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সানজিদা হত্যার রহস্য
উদ্ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। ঘটনার পরপরই নাহিদুল ইসলাম সায়েম (১৯) নামে এক যুবককে
গ্রেপ্তার করে। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে
কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত
আরও এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম প্রকাশ করতে
চাননি কাউনিয়া থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ। তাঁকেও প্রেমিক বলে দাবি করা হচ্ছে।
থানা পুলিশের
সূত্র জানায়, হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য সানজিদার ব্যাগে পাওয়া একটি খাতা ও সোর্সের
মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে সানজিদার কথিত প্রেমিক মো. নাহিদুল
ইসলাম ওরফে সায়েমকে। তিনি মাহীগঞ্জ থানার তালুক উপাশু গ্রামের মো. নূর হোসেন মিলিটারির
ছেলে।
পুলিশ ও আদালত
সূত্রে জানা যায়, সায়েমের সঙ্গে তিন বছর আগে সানজিদার পরিচয় ও সম্পর্ক হয়। কিছুদিন
আগে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কিন্তু যোগাযোগ ছিল। এরই মাঝে ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার
দুপুর আড়াইটার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সায়েম সানজিদাকে নিয়ে রংপুরে শাপলা সিনেমা
হলে সিনেমা দেখতে যান। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেম নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হলে
সেখান থেকে সানজিদা চলে যায়। পরে সায়েম তাঁর পূর্বপরিচিত দুইজনকে নিয়ে সানজিদার সঙ্গে
মাহীগঞ্জ এলাকায় আবার মিলিত হয়।
এরপর সায়েম ও
তাঁর দুই সহযোগী সানজিদাকে নিয়ে পীরগাছা আলীবাবা থিম পার্কে ঘুরতে যায়। রাত হয়ে যাওয়ায়
সানজিদা বাসায় ফেরার জন্য চাপ দেয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের
হরি চরণ লস্কর গ্রামে কুটিরঘাট-মধুপুর সড়কে ফাঁকা জায়গায় থেমে একাধিক প্রেম নিয়ে সানজিদাকে
প্রশ্ন করেন সায়েম। একপর্যায়ে তিনজন মিলে সানজিদাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। সানজিদাকে
মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে রেখে তারা সটকে পড়ে। রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ধারে এক
তরুণীকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে
নিয়ে যাওয়ার পথেই সানজিদা মারা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, ‘প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে ইভাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার সায়েম হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এরই মধ্যে আরও একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তদন্ত অব্যাহত আছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।