বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পদ্মা-মেঘনা থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রাম। অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারণে ছয়টি নদী ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে আন্দোলন হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং জাদুকাটা নদীর বিষয়ে দফায় দফায় আদালতে গিয়েছি।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বেলা ও পানি অধিকার ফোরাম আয়োজিত ‘নদনদীর জীর্ণ দশা ও পরিবেশ সংকট’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বালুমহাল থেকে গত চার বছরে আয় হয়েছে ২৫৬ কোটি টাকা। জাফলংয়ে পাথর উত্তোলনের নামে প্রতি বছর সরকার ছয় কোটি টাকা রাজস্ব পায়। বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে চামড়া পরিশোধন কারখানা বা ট্যানারি হাজারীবাগে বন্ধ করা হয়েছিল। এখন এসব কারখানা ধলেশ্বরী নদীকে দূষিত করছে। অন্যদিকে হাজারীবাগ থেকেও ট্যানারি পুরোপুরি সরে যায়নি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর উত্তোলনে ১০২ জন মারা গেছেন, সরকারি হিসাবে ৮১ জন। বালু তুলতে হলে বালুমহাল আইন-২০১০ চালু থাকলেও কার্যকর নয়। ডিসির নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। বালু উত্তোলনে শব্দদূষণ, নদীভাঙন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলে সেই কমিটি বালু উত্তোলন করে দেবে। অথচ সেই কমিটি পরিদর্শনেই যায় না।
বেলার প্রধান নির্বাহী বলেন, নদীর ক্ষতি হলে সরকার অভিভাবক হিসেবে দায়ী। হাইকোর্ট কর্মপরিকল্পনা চেয়েছেন, অথচ করোনার অজুহাতে সরকার কর্মপরিকল্পনা দেয়নি। কিন্তু বালুমহাল চালানোর অনুমতি ঠিকই দিচ্ছে। নদী ধ্বংসের দায় দিচ্ছে ভারত থেকে আসা বর্জ্যের।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী ট্যানারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চামড়ার ব্যবসা করে অনেক মানুষ ধনী হয়েছেন। অথচ অর্থনৈতিক বিবেচনায় কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা পরিমাপ করা হয়নি।
এ সময় গোলটেবিল আলোচনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, রাজশাহী রুলফাও সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আফজাল হোসেন প্রমুখ অংশ নেন।