আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) :
ঈদের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই বেচা-কেনা জমে উঠছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানগুলোতে। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণায় চারিদিক মুখরিত হয়ে উঠছে। পরিবার-পরিজনদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে বাজারে আসতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন।
উপজেলায় ছোট বড় অর্ধশত মার্কেটে শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের লোকজন ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এ বছর মেয়েদের দৃষ্টি সোনিয়া ও নিহারা পোশাকে। ক্রেতাদের অভিযোগ দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্রেতারা বলেন সুতার দাম থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বাড়তি এর পরও গ্রামের সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে রেখেই দ্রব্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আনন্দ পরিবারের সবাই ভাগাভাগি করে নিতে নতুন জামা আর বাহারি জুতা, কসমেটিক্স কেনায় ব্যস্ত ক্রেতারা। বাচ্চাদের খেলনাসহ ঘরসজ্জার জিনিসও পাওয়া যাচ্ছে শপিংমল গুলোতে। পছন্দের পোশাক কিনতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন ক্রেতারা। বটতলী হাজি ইমাম শপিং সেন্টার, বন্দর ইত্যাদি শপিং সেন্টার, জয়কালী হাট বাজার, চাতরী ওয়ান মাবিয়া সিটি সেন্টার, আমিন কমপেক্স, ছত্তারহাট মার্কেটসহ এখানে জনসমাগমও ঘটে অনেক বেশি।
জানা যায়, আনোয়ারার ঈদ বাজারগুলোতে স্থানীয় লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বাঁশখালি, পটিয়া, কর্নফুলী ও চন্দনাইশ থেকে আসছেন ক্রেতারা। দাম নিয়েও সন্তুষ্ট তারা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সামর্থ্যরে কথা মাথায় রেখেই উপজেলার শপিংমল গুলোতে এবারের ঈদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক তুলেছে। মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের সংখ্যা বেশি থাকায় তাদের চাহিদাকেই গুরুত্ব দিয়েছে বিক্রেতারা। এখানে থ্রি পিচ ৬০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার, শাড়ি ৫০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার, লেহেঙ্গা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার, শার্ট ৫০০ থেকে দেড় হাজার, পাঞ্জাবি ৬০০ থেকে ২ হাজার, প্যান্ট ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তাছাড়া বাচ্ছাদের জামাও পাওয়া যাচ্ছে কম দামে। এবছর তরুণীদের নতুন আকর্ষন "সোনিয়া” ও “নিহারা” পোশাকে। বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ২৮০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত।
আনোয়ারায় রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই ছুটছেন নিজের ও প্রিয়জনের জন্য পছন্দের পোশাক কিনতে। তবে রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রভাব পড়েছে গ্রামের বাজারেও। এখানকার বড় শফিং মল গুলোর দোকানিরা বঙ্গবাজার থেকেই কাপড় আনতেন বলে জানা যায়। একারনে অগ্নিকাণ্ডের পর দামও বেড়ে যায়। তবে দোকানীরা জানায় সুতার দাম বাড়ার কারণেই কাপড়ের দাম বেড়েছে। এখানে ছোট দোকান গুলোতে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার এবং বড় দোকান গুলোতে দেড় থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ছত্তারহাট কাপড় ব্যবসায়ী লোকমান বলেন, সম্প্রতিক ঢাকার বঙ্গবাজারে আগুন লাগায় বেড়েছে ক্রয় মুল্য, মানুষের চাহিদা ও বিক্রয় মুল্য তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দোকানে দোকানে ঘুরে দেখছে। তবে ঈদের শেষ মূহুর্তে ভালো বিক্রি হবে ইনশাআল্লাহ।
ঈদ কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা মুনছুর উদ্দিন হৃদয় বলেন, এবার ঈদে পোষাকের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। সেইসাথে রমজানের যেহেতু তৃতীয় সপ্তাহ চলছে ভাবলাম একটু ভিড় কম হবে কিন্তু প্রচন্ড পরিমাণের ভিড় হচ্ছে মার্কেট গুলোতে।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মীর্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ও সড়কে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে। তাছাড়া আনোয়ারায় টহল পুলিশ জোরদার করেছি।