আজঃ রবিবার ১২ মে ২০২৪
শিরোনাম

নেত্রকোনার ছেলে নিহালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়ে ওঠার গল্প!

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মার্চ ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

Image

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সারা বাংলাদেশে দ্বিতীয় হয়েছেন নেত্রকোনার আসিফ রহমান নিহাল। তিনি শুধু ভালো চিকিৎসকই নয়; একজন ভালো মানুষও হতে চান।

আসিফ রহমান নিহাল জেলার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের মো. মিজানুর রহমান ও আফরোজা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। তারা এখন ময়মনসিংহ শহরের কিষ্টপুর দৌলত মুন্সি রোড এলাকায় বসবাস করেন।

আসিফ ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী ছিল। তিনি পঞ্চম শ্রেণিতে ময়মনসিংহ গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে ভর্তি হন। ভর্তি পরীক্ষায়ও তিনি প্রথম হন। পরে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে এসএসসি পাশ করেন। তিনি এইচএসসি পাশ করেন আনন্দ মোহন কলেজ থেকে। ভালো ফলাফলের মাধ্যমে তিনি মা-বাবাকে প্রতিবারই গর্বিত করেছেন।

আসিফের বাবা মিজানুর রহমান জানান, আসিফের মা আফরোজার ইচ্ছা ছিল ছেলে চিকিৎসক হবেন। শেষমেশ মায়ের স্বপ্নই পূরণ হলো। তার (আসিফের) ছোট চাচা ওয়াহিদুর রহমান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের নিউরো বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

আসিফের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই নিহাল (আসিফ) ভালো ছাত্র। তাই আমি তাকে লেখাপড়ায় কোনো চাপ দেইনি। আমি চাই ছেলে চিকিৎসক হোক আর অন্য কোনো পেশায় থাকুক, সে যেন একজন ভালো মানুষ হয়।

ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়া আসিফ রহমান জানান, কলেজে ভর্তির পর থেকেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হতে পেরে তার ভালো লাগছে। ছোট চাচাকে দেখে চিকিৎসা পেশার প্রতি আমার বেশ আগ্রহ বাড়ে। আমার মাও সব সময় চাইতেন আমি যেন আমি মেডিকেলে পড়ি। তাই নবম শ্রেণিতে পড়াকালে আমার মনে হয়েছে আমাকে ভালো কিছু করতে হবে। নিউরোর বিষয়গুলো ভালো লাগে আমার তাই ভবিষ্যতে নিউরোসার্জন হতে চাই। শুধু ভালো চিকিৎসকই নয় একজন ভালো মানুষও হতে চাই।


আরও খবর



প্রবাসে নিয়ে দালালের হাতে বিক্রি, দেশে ফেরাতে পরিবারের আকুতি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
উপজেলা প্রতিনিধি

Image

উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে পাথরঘাটার একাধিক ব্যক্তিকে প্রবাসে পাঠিয়ে দালালের হাতে বিক্রি করেছে প্রতারক আ. জলিল চৌধুরী। সৌদিতে থাকা সন্তানদের ফিরে পেতে বরগুনার পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বেলা ১১ টায় পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সৌদি আরব থেকে সদ্য ফিরে আসা ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানসহ ফোরকানের বাবা আ. কাদের, সুমনের বাবা শাহ আলম, ইমরানের মা শাহিনুর বেগম, মামুনের বাবা আবুল হোসেনসহ ৬ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলো।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মামুন মিয়া, মো.সুমন, ইমরান ও ফোরকানকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নিয়ে বিদেশে পাঠায় পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা প্রতারক আ. জলিল চৌধুরীর। সৌদি আরব যাওয়ার পরে একের পর এক দালাল বিক্রি করে তাদের। সেখানে কাজ না দিয়ে আটকে রাখা হয় তাদের।

তারা আরো জানান, পাথরঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক লোককে সৌদি আরব পাঠিয়ে ৭০ লাখ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে জলিল। প্রবাসে পাঠাতে অনেকে ঋণ, ধার কর্জ এবং জমি বিক্রি করে পরিবার গুলো এখন প্রায় নিঃস্ব। দেশে টাকা পাঠানো দূরে থাক সেখানে নিজেরাই খেতে পারছে না।

ফোরকানের বাবা আ. কাদের বলেন, আমি ও ছেলে রিকশা চালাতাম অনেক কষ্ট করে জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাই। আজ বাবায় বড় কষ্টে আছে।

সৌদি থেকে সদ্য দেশে আসা মিজানুর রহমান বলেন, অঙ্গীকার অনুযায়ী বিদেশে যাওয়ার পর ভিসার মেয়াদ শেষ হলে ইকামা না দেয়ার কারনে ওই দেশের পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আ. জলিল চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, আমি সরকারের নিয়ম মেনেই তাদের বিদেশে পাঠিয়েছি। শর্ত অনুযায়ী তাদের ভিসা এবং কাজ দিয়েছি। কাজ না করে যদি দেশে চলে আসে এর দায়ভার তো আর আমি নিব না।

তিনি আরও বলেন, তাদের ছাড়াও অনেক মানুষকে আমি বিদেশে পাঠিয়েছি তারা তো ঠিকঠাক মতো কাজ করছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সকল কাগজপত্র আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

সাকিল আহমেদ, পাথরঘাটা (বরগুনা)


আরও খবর



রাজধানীতে ফুটপাত বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

নানা শ্রেণিপেশার মানুষের চলাচলের জন্য রাজধানীর ফুটপাত, অবৈধভাবে দখল ও বিক্রির সঙ্গে কারা কারা জড়িত তাদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ফুটপাত বিক্রি ও অবৈধ দখলকারীদের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা আগামী ১৩ মে অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনকে জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


আরও খবর



মাদারীপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১০

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মাদারীপুর প্রতিনিধি

Image

মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুপক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মোটরসাইকেল ও আনারস প্রতীকের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া বাকীদের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।  আহতরা হলেন- ইদ্রিস  হাওলাদার (৫৫), বাদশা হাওলাদার (৬৫), বাবুল হাওলাদার (৫০), শাহিন হাওলাদার(৪৫), চানমিয়া হালাদার(৬০) ইউনুস হাওলাদার (৫০) জামাল হাওলাদার(৪৫) বিল্লু সর্দার (১৬) ফেরদৌস মাতুব্বর(২২)  বিউটি বেগম  (৪৫)। তাদের মধ্যেককটেল বিস্ফোরণে আহতরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সকালে ভোট কেন্দ্রের বাহিরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মোটরসাইকেল ও আনারস প্রতীকের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল হাসান জানান, ভোট কেন্দ্রের বাহিরে সমর্থকদের মাঝে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ৮/১০ জনের মত আহত হয়েছে।


আরও খবর



সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন, তদন্ত হলেও সমাধান নেই

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ৩২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবার এর কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্ঘটনা এড়াতে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগছেই। রবিবার (৪ মে) চাঁদপাই রেঞ্জের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বনরক্ষী ও স্থানীয়রা।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ তিনটি হলো, সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের সঙ্গে মিশে যাওয়া নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারির ব্যবস্থা করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদীর কোলঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলনের রশির নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় তিনটি সুপারিশই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৯০ একর বনভূমি। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের কটকাতে। ওই ঘটনায় পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় আগুন লাগে। এর কিছু দিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায়ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এর একদিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং ওই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে দানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না।

জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদই ধ্বংস করে চলছে প্রতিনিয়ত একশ্রেণির চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাঘ, হরিণ হত্যাসহ বনের সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। এই অবস্থার মধ্যে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনে আয়তন ছিল বর্তমানের দ্বিগুণ। কমতে-কমতে বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন এখন দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির সর্বমোট ৫১ ভাগ। ২৪ ঘণ্টায় দুবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবন।

সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। বর্তমানে যা সমগ্র সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এলাকা। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ দশমিক এক বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ এক হাজার ৬০৩ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটার।

এই জলভাগে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার।

ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।

করোনাকালে গোটা সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট জারি করে পর্যটক, জেলে-বনজীবীদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন অধিদফতর। এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও হুমকিতে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য বনে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে বনরক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বনজীবীদের বিড়ি সিগারেটের আগুনে অনেক সময় আগুন লাগে। এ জন্য আমরা বনজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে ওয়াচ টাওয়ার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ, হরিণ হত্যার পাশাপাশি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও আগুন দস্যুদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিংসহ সব ধরনের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর



কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবিতে তলব

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তথ্য-উপাত্ত পেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১২টায় রাজধানীর মিন্টো রোড ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে ওএসডি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে ডিবি অফিসে ডাকা হয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এতে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তার করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় যাদের নাম এসেছে সবাইকে পর্যায়ক্রমে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত ১ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সনদ জালিয়াতির অভিযোগে প্রথমে গ্রেপ্তার হন সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে একে একে উঠে আসে এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বোর্ড সংশ্লিষ্ট অনেক ছোট-বড় কর্মকর্তা ও দেশের কয়েকটি কারিগরি স্কুল ও কলেজের প্রধান আর অধ্যক্ষদের নাম।

সবশেষ গত শনিবার শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পরদিন রোববার চেয়ারম্যানকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদে শেহেলা পারভীনের নাম উঠে আসে। এছাড়া গত ৪ এপ্রিল এক সংবাদ সন্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেন, সনদ বাণিজ্যের নানা প্রক্রিয়ায় তার কাছে গ্রাহক নিয়ে আসতেন দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা কারিগরি স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ও প্রিন্সিপালরা।

যেসব প্রধান শিক্ষক ও প্রিন্সিপাল মধ্যস্থতা করে গ্রাহক নিয়ে আসতেন, তাদের নামের দীর্ঘ তালিকা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এসেছে। এছাড়া বোর্ডের ছোট-বড় সব কর্তারাই সনদ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতেন।


আরও খবর