আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

জান্তার আরও দুটি ঘাঁটি দখলে নিলো আরাকান আর্মি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

রাখাইনের ম্রাউক ইউ ও কিয়াকতাও শহরে জান্তা বাহিনীর আরও দুটি ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আরাকান আর্মি জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর দখলের অভিযানের সময় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মিয়ানমার জান্তার অনেক সৈন্য হতাহত হয়েছেন।

ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনের ঐতিহাসিক ম্রাউক ইউ শহরে কয়েক দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি)-৩৭৮ এর সদরদপ্তর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ম্রাউক ইউ শহরে জান্তা বাহিনীর এলআইবি-৫৪০ এর সদরদপ্তরের দখল ও এলআইবি-৩৭৭ ঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান আর্মি।

রাখাইনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই তিনটি ব্যাটালিয়ন ম্রাউক ইউ শহরের ঐতিহাসিক রাজধানী, ম্রাউক ইউ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, শহরের আবাসিক এলাকা এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে।

আরাকান আর্মি আরও জানিয়েছে, শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) তারা কিয়াকতাও শহরে এলআইবি-৩৭৬ সদর দপ্তর দখলে নিয়েছে। এছাড়া মিনবিয়া, কিয়াকতাও ও ম্রাউক ইউ শহরের অন্যান্য জান্তা ঘাঁটিগুলোতে হামলা চলমান রয়েছে।

গোষ্ঠীটি জানায়, আকাশ ও সমুদ্র থেকে জান্তা বাহিনীর বোমাবর্ষণের মধ্যেই রাথেডং, পোন্নাগিউন, রামরি ও অ্যান শহরে সংঘর্ষ চলছে। মংডু শহরের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া টাং পিয়ো ​​সীমান্ত ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে আরাকান আর্মি। রোববার ও সোমবার প্রায় ৯০ জন জান্তা সৈন্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর মোট ২৬৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া সোমবার মিয়ানমার থেকে ছোড়া কামানের গোলায় বান্দরবানে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন। প্রাণহানির এই ঘটনায় মিয়ানমার জান্তাকে দায়ী করেছে এএ।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরজুড়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটির দাবি, তাদের যোদ্ধারা রাখাইনের রাজধানী সিত্তের কাছের পাউকতাও শহর ও পুরো পালেতওয়াসহ অন্য এলাকায় জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৭০টি ঘাঁটি দখল করে নিয়েছেন।


আরও খবর



আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলা যশোরের তাপমাত্রা কমেছে। এই জেলায় শনিবার (৪ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ৩টায় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

গতকাল শুক্রবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল এই জেলায়। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, শনিবার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এপ্রিল মাসজুড়েই তীব্র তাপে পুড়েছে যশোর। এপ্রিলের শেষদিন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল এই জেলায়। সেদিন যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতেই ভেঙে গেলো চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সব রেকর্ড।

এদিকে মে মাসের শুরুতে তাপমাত্রা কমতে থাকে। কিন্তু গরম কমেনি। ১ মে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি, ২ মে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও গতকাল রেকর্ড হয় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ জানান, যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গায় ৩৮.৫ ও মোংলায় ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।


আরও খবর



৯ মে ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রস‌চিব

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আগামী ৯ মে (বৃহস্প‌তিবার) ঢাকা সফরে আস‌ছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে তার।

ঢাকার এক‌টি কূটনৈ‌তিক সূত্র কোয়াত্রার সফরের তথ্য নি‌শ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, আগামী ৯ মে ভারতীয় পররাষ্ট্রস‌চিবের ঢাকায় আসার তা‌রিখ চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা সফরে তার মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্রস‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের স‌ঙ্গে।

গত ২০ এ‌প্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের পূর্বনির্ধারিত সেই সফর স্থগিত হয়।

জানা গেছে, এক‌দিনের আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রস‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন কোয়াত্রা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দি‌ল্লি সফরসহ দুই দে‌শের স্বার্থ সং‌শ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কোয়াত্রা।

আশা করা হচ্ছে, সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন তি‌নি।


আরও খবর



ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ

আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে মেক্সিকো, কানাডা ও ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোতে চলা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য দেশেও। মেক্সিকো কানাডা ও ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বতার প্রতিবাদে অবস্থান নিয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই বছরের পর বছর ধরে গাজায় চলা সামরিক পদক্ষেপ জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ৭৪ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছে।

শুরু থেকেই এই সংঘাতে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সবচেয়ে সক্রিয় ছিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। গত মাসের শুরুর দিকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প উচ্ছেদ করার পর থেকে পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে একই ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

বিক্ষোভ এবং গ্রেফতার দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া (ইউসিএলএ) সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে। সেখানে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে ধেয়ে আসে। শত শত বিক্ষোভকারী মানব বন্ধন সৃষ্টি করে ইউসিএলএ ক্যাম্পাস থেকে চলে যাবার আদেশ উপেক্ষা করে। পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য সাউন্ড গ্রেনেড বা ফ্ল্যাশ-ব্যাং ব্যবহার করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস থেকে ২ হাজারেরও বেশে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।

সেই আন্দোলন এবার দেখা দিয়েছে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো ও কানাডায় অনেক শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করছে।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকের ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন। মেক্সিকো সরকারের কাছে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানান।

অন্যদিকে কানাডায় ইউনিভার্সিটি টরোন্টো, ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ওতাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া ফ্রান্সে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো চলছে আন্দোলন। তাদের দাবি ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।


আরও খবর



সৌদি পৌঁছেছেন ১৫ হাজার ৫১৫ হজযাত্রী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫১৫ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। অপরদিকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৫০ জনের ভিসা হয়নি। মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে হজ পোর্টালে আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সোমবার পর্যন্ত সর্বমোট ১৫ হাজার ৫১৫ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ১১ হাজার ৭৬৮ জন। এখন পর্যন্ত সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে ৩৯টি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

এখন পর্যন্ত ৭৪ হাজার ৮৯৭ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে। এবার বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনো ১০ হাজার ৩৫০ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্নের নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর সময় ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ভিসা আবেদন করার সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। সেই সময়ের মধ্যেও সকল হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়নি। পরে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়। এখনো ভিসা কার্যক্রম চলছে।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।


আরও খবর



সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন, তদন্ত হলেও সমাধান নেই

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ৩২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবার এর কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্ঘটনা এড়াতে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগছেই। রবিবার (৪ মে) চাঁদপাই রেঞ্জের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বনরক্ষী ও স্থানীয়রা।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ তিনটি হলো, সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের সঙ্গে মিশে যাওয়া নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারির ব্যবস্থা করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদীর কোলঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলনের রশির নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় তিনটি সুপারিশই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৯০ একর বনভূমি। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের কটকাতে। ওই ঘটনায় পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় আগুন লাগে। এর কিছু দিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায়ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এর একদিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং ওই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে দানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না।

জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদই ধ্বংস করে চলছে প্রতিনিয়ত একশ্রেণির চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাঘ, হরিণ হত্যাসহ বনের সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। এই অবস্থার মধ্যে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনে আয়তন ছিল বর্তমানের দ্বিগুণ। কমতে-কমতে বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন এখন দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির সর্বমোট ৫১ ভাগ। ২৪ ঘণ্টায় দুবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবন।

সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। বর্তমানে যা সমগ্র সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এলাকা। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ দশমিক এক বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ এক হাজার ৬০৩ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটার।

এই জলভাগে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার।

ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।

করোনাকালে গোটা সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট জারি করে পর্যটক, জেলে-বনজীবীদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন অধিদফতর। এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও হুমকিতে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য বনে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে বনরক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বনজীবীদের বিড়ি সিগারেটের আগুনে অনেক সময় আগুন লাগে। এ জন্য আমরা বনজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে ওয়াচ টাওয়ার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ, হরিণ হত্যার পাশাপাশি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও আগুন দস্যুদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিংসহ সব ধরনের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর