আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

ধানের উৎপাদন খরচ কমানোর কৌশল

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

একাধিক কৌশলে ধান উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। উৎপাদন খরচ কমাতে জমির ধরন, স্থানীয় আবহাওয়া, ধানের জীবনকাল, ধানের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ও বীজ নির্ধারণে বিশেষ সতর্ক করতে হবে। এ বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক উপপরিচালক কৃষিবিদ অসিত কুমার সাহা।

তিনি মনে করেন, দিনদিন ফসল চাষের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এখন দরকার কৃষকদের কৌশলী হওয়া। বিশেষ করে উৎপাদন খরচ কমানো খুবই জরুরি। স্থানীয় ডিলারদের কাছ থেকে বীজ ক্রয় করার সময় অবশ্যই বীজের মূল্য, বীজ গজানোর হার, হেক্টরপ্রতি ফলন অবশ্যই ধানবীজের বস্তার গায়ে উল্লেখ থাকতে হবে। ক্রয় রশিদে বীজের মূল্য উল্লেখ থাকতে হবে। বিএডিসির বীজের ট্যাগ লাগানো আছে কি না দেখে কিনতে হবে।

বীজ শোধন : বীজ শোধন করে নিলে বীজে রোগের আক্রমণ কম হয়। চারা সুস্থ-সবল হয়। বীজ শোধনকারী দিয়ে অথবা প্রতি কেজি ধান বীজের জন্য ১ গ্রাম হারে তুতের গুঁড়ো দিয়ে বীজ শোধন করা যেতে পারে।

বীজতলার যত্ন : বীজতলা উত্তমরূপে চাষ দিতে হবে। উপরিভাগ সমতল হতে হবে। দুটি বীজতলার মধ্যে নালা বা ড্রেন রাখলে বীজতলায় সেচ প্রদান করতে সুবিধা হয় এবং পরিমিত পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়। আদর্শ বীজতলায় ১০-১৫ শতাংশ কম বীজ প্রয়োজন হয়। এতে উৎপাদন খরচ কম হয়।

চারার বয়স : মৌসুম, ধানের জাতের বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে চারার বয়স। বেশি বয়সের চারা রোপণ করতে নেই। আমন মৌসুমে ২০-২৫ দিনের, বোরো মৌসুমে ২৫ থেকে ৩০ দিনের চারা নির্বাচন করা উত্তম।

চারার সংখ্যা : প্রতি গর্তে সুস্থ-সবল-নীরোগ চারা রোপা আমন মৌসুমে ২টি দিতে হয়। গর্তে বেশি চারা দিলে ফলন বেশি হয় না। সে কারণে সঠিক চারার সংখ্যা নির্ধারণ করে উৎপাদন খরচ কমানো যায়।

রোপণ দূরত্ব : মৌসুম, জাতের বৈশিষ্ট্য জীবনকালের ওপর ভিত্তি করে ধানের চারার রোপণ দূরত্ব নির্ধারণ করতে হয়। সারি থেকে সারি ২৫ সেন্টিমিটার, গাছ থেকে গাছ ২০ সেন্টিমিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ করা হলে চারার সংখ্যা কম লাগে। এতে চারার খরচ কমে যায়।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি : সার হলো গাছের খাদ্য। গাছ মাটি থেকে শিকড়ের মাধ্যমে সার গ্রহণ করে। জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করা হলে অতি সহজে শিকড় মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। ধান ফসলে ব্যবহৃত ইউরিয়া সারের ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কাজে লাগে।  ধানের জমিতে সার প্রয়োগের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত রস থাকতে হবে। ধানের চারা রোপণের ১০ থেকে ১২ দিন পর প্রথম ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করলে ভালো হয়। ওই সময় জমিতে ছিপছিপে দুই ইঞ্চি পানি থাকলে ভালো হয়। গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে সারের কার্যকারিতা বাড়ে, ফলন বাড়ে। ২৫ থেকে ৩০ ভাগ ইউরিয়া সারের পরিমাণ কম লাগে। এতে করে সারের খরচ অনেকটা কমে যায়।

খরচ কমাতে সেচ ব্যবস্থাপনা : সেচ খরচ কমানোর জন্য সঠিকভাবে ধানের জীবনকালের স্তর অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হয়। যদি সম্ভব হয় পর্যায়ক্রমে জমি শুকনো ও ভেজা করলে ভালো হয় (থোড় আসার পূর্ব পর্যন্ত)।  বীজতলা তৈরির সময় ও বীজ বপনের পর শুকিয়ে গেলে দুবার। জমি কাদা করবার সময় ১ বার। রোপণের সময় প্রায় ৭.৫ সেমি. পানি থাকা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ৪-৫ বার সেচ দেওয়া যেতে পারে। রোপণের পর হতে দানাপুষ্ট হবার পূর্ব পর্যন্ত ৫-৭.৫ সেমি. পানি থাকা প্রয়োজন। ফসলে সার প্রয়োগের সময় পানি বের করে দিতে হবে। সার প্রয়োগের ২-৩ দিন পর পুনরায় পানি দিতে হবে ৭-৮ দফায়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধানের স্তর হলো ফুল ও দুধ অবস্থা। ফুল অবস্থায় বোরো ধানের/রোপা আমন ধানের জমিতে কমপক্ষে ২ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখলে ভালো হয়। বিকেলে সেচ দিলে পানি বাষ্পীভবন কম হয়। মাটির গর্ত বা ফাটল বন্ধ করা উচিত। জমির আইল ঠিক রাখতে হবে। রোপা আমন মৌসুমে বর্ষার অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে হবে।

পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ : ধান উৎপাদনে রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ উৎপাদন খরচ বেশি  হয়। ধানক্ষেত থেকে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদের ব্যবস্থা করতে হবে। সবুজপাতা ফড়িং, মাজরা পোকার মতো পাতা মোড়ানো পোকা আলোতে আকৃষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। পার্চিং বা ডাল পুঁতে দিতে হবে ধানক্ষেতে। হাতজাল দ্বারা পোকা ধরে মারতে হবে। লোগো পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ করতে হবে। এতে ধানক্ষেতে আলো ও বাতাস প্রবাহিত হবে। বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণ কম হবে। বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণকালে ধানের জমিতে পানি থাকলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ সময় ইউরিয়া সার প্রয়োগ বন্ধ রাখুন। কীটনাশক প্রয়োগ করার সময় গাছের গোড়ায় কীটনাশক দিতে হবে। জমির আইলে কিছু নাড়া খড়কুটো দিয়ে রাখলে শীষকাটা লেদা পোকার কীড়া এখানে আশ্রয় নেয়। ধান কাটার পর ধানের খড় সম্ভব হলে পুড়িয়ে ফেলুন। শীষকাটা লেদাপোকা গাছ বেয়ে ওপরে ওঠে এবং শীষ কেটে দেয়। সম্ভব হলে ধানগাছ বাঁশ দিয়ে শুইয়ে দিন। চুঙ্গি পোকার ধানক্ষেতে দেখা দিলে জমির পানি শুকিয়ে দিন। ক্ষেতে পানি না থাকলে পোকা পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না।

ধানের রোগ দমন ব্যবস্থাপনা : ধানের রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার বাড়াতে হবে। অধিক মাত্রায় নাইট্রোজেন জাতীয় সার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। ঝড়ের পর নাইট্রোজেন জাতীয় সার উপরিপ্রয়োগ করা যাবে না। ফসল সংগ্রহের পর জমির নাড়া পুড়িয়ে দিতে হয়। ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতাংশ) ৫ কেজি পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। ব্লাস্ট রোগসহনশীল ধানের জাত ব্রি ধান ২৮, বিআর১৬ ব্যবহার করতে হবে। এই রোগ দেখা দিলে জমিতে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সকল ধানের জমিতে নাইট্রোজেন ও পটাশ সারের ঘাটতি রয়েছে, ওই সব জমিতে বাদামি দাগ রোগ দেখা যায়। সে কারণে দাগি ধানবীজ ব্যবহার করা যাবে না। সুস্থ-সবল বীজ ব্যবহার করুন। জমিতে অনুমোদিত মাত্রায় ইউরিয়া ও পটাশিয়াম ব্যবহার করুন। খোল পচা রোগের ক্ষেত্রে রোগ সহনশীল জাত যেমন- ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১ ব্যবহার করতে হবে। উফরা রোগ, এটি কৃমিবাহিত (নিমাটোড) রোগ। আক্রান্ত খেতের পানি অন্য খেতে দেওয়া যাবে না। জমির ফসল সংগ্রহের পর অন্য ফসল চাষের পূর্বে জমি চাষ দিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন ফেলে রাখতে হবে। ধানের জমিতে আগাছার আক্রমণে নিচু জমিতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ফলন কম হতে পারে। আগাছামুক্ত ধানবীজ ব্যবহার করতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে, আইল, সেচনালা পরিষ্কার রাখতে হবে। আধা পচা গোবর সার ব্যবহার করা যাবে না। সার উপরি প্রয়োগকালীন একই সময় হাত দিয়ে আগাছা তুলে মাটি চাপা দেওয়া যেতে পারে। ধানক্ষেতে চারা রোপণের পর কিছুদিন পানি রাখলে আগাছা কম হয়। আগাছার ফুল অথবা পরিপক্ব হওয়ার আগেই আগাছা তুলে ফেলতে হবে।

নিউজ ট্যাগ: ধান

আরও খবর



বোলারদের তোপে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে জিম্বাবুয়ে

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

পাওয়ার প্লে একদমই ভালো কাটলো না জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের বোলারদের তোপে তিন বলের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়লো সফরকারীরা।

পঞ্চম ওভারের শেষ বল আর ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে উইকেট হারিয়েছে দলটি। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষ করে ৪ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে।

সপ্তম ওভারে এসে আবার তাসকিন টানা দুই বলে করেছেন দুই শিকার। অষ্টম ওভারে সাইফউদ্দিন এসে একটি উইকেট শিকার করে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৮ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৪২ রান।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি হজম করেন শরিফুল ইসলাম।

দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণে নিয়ে আসেন শান্ত। শেখ মেহেদী অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি। নিজের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক টার্নিং ডেলিভারিতে অভিজ্ঞ ক্রেইগ আরভিনকে (০) বোল্ড করেন এই অফস্পিনার। আরভিন ডিফেন্ড করেও উইকেট বাঁচাতে পারেননি।

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। প্রায় ১৯ মাস পর দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পান। লেগসাইডের বল ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন আহমেদের ক্যাচ হন অভিষিক্ত জয়লর্ড গাম্বি (১৪ বলে ১৭)।

শেখ মেহেদীর করা পরের ওভারে জোড়া উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম বলে রানআউট হন ব্রায়ান বেনেট (১৫ বলে ১৬)। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে মাহমুদউল্লাহর থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক জাকের আলি।

পরের বলে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (০) প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে হন টার্নে পরাস্ত। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে লিটন দাসের হাতে।


আরও খবর



সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন, তদন্ত হলেও সমাধান নেই

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ৩২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবার এর কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্ঘটনা এড়াতে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগছেই। রবিবার (৪ মে) চাঁদপাই রেঞ্জের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বনরক্ষী ও স্থানীয়রা।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ তিনটি হলো, সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের সঙ্গে মিশে যাওয়া নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারির ব্যবস্থা করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদীর কোলঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলনের রশির নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় তিনটি সুপারিশই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৯০ একর বনভূমি। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের কটকাতে। ওই ঘটনায় পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় আগুন লাগে। এর কিছু দিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায়ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এর একদিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং ওই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে দানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না।

জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদই ধ্বংস করে চলছে প্রতিনিয়ত একশ্রেণির চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাঘ, হরিণ হত্যাসহ বনের সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। এই অবস্থার মধ্যে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনে আয়তন ছিল বর্তমানের দ্বিগুণ। কমতে-কমতে বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন এখন দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির সর্বমোট ৫১ ভাগ। ২৪ ঘণ্টায় দুবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবন।

সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। বর্তমানে যা সমগ্র সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এলাকা। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ দশমিক এক বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ এক হাজার ৬০৩ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটার।

এই জলভাগে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার।

ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।

করোনাকালে গোটা সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট জারি করে পর্যটক, জেলে-বনজীবীদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন অধিদফতর। এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও হুমকিতে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য বনে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে বনরক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বনজীবীদের বিড়ি সিগারেটের আগুনে অনেক সময় আগুন লাগে। এ জন্য আমরা বনজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে ওয়াচ টাওয়ার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ, হরিণ হত্যার পাশাপাশি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও আগুন দস্যুদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিংসহ সব ধরনের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর



ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গত রাতে বাগদাদের পূর্বাঞ্চলীয় জাইউনা জেলায় নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। টিকটকে তার হাজার হাজার অনুসারি রয়েছে। খবর আল জাজিরা

নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার রাতে কালো পোশাক ও হেলমেট পরা একদল লোক মোটরবাইকে করে এসে কিছুটা পথ হেটে একটি কালো রংয়ের এসইউভি গাড়িতে গুলি চালায়। ওই গাড়িতেই টিকটক তারকা ওম ফাহাদ বসে ছিলেন।

ইরাকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাকে হত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওম ফাহাদের প্রকৃত নাম গুফরান সায়াদি, টিকটকে তার অর্ধ মিলিয়ন অনুসারি রয়েছে। পপ মিউজিকের সঙ্গে নেচে ভিডিও তৈরি করে সেগুলো টিকটিকে শেয়ার করতেন তিনি। তার তৈরি ভিডিওতে শালীনতা নষ্ট করে এমন বক্তব্য এবং জনসাধারণের নৈতিকতা ভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। যদিও তার ভিডিওগুরো ১০ লাখের অধিক ভিউ হয়েছে।

ওই সময়ে পাঁচ কনটেন্ট ক্রিয়েটরকেও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়। ওম ফাহাদের ওই ধরনের অশালীন ভিডিও তৈরি ইরাকি সমাজ এবং পারিবারিক সংস্কৃতিতে কতটা প্রভাব পড়ে তা জানার জন্য ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি কদন্ত কমিটি গঠন করে।

ওম ফাহাদের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জারকে হত্যার মতো ঘটনা এটাই প্রথম নয়, দেশটিতে অনলাইনে মুক্তমত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপক কঠোরতা রয়েছে। এটি দিন দিন বাড়ছে। এর আগেও ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ২০২৮ সালে ২২ বছর বয়সী মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার তারা ফারেজকেও বন্দুকধারীরা হত্যা করে।

ইরাকে অনার কিলিং (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) এর মতোও ঘটনা রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে ২২ বছর বয়সী ইউটিউবার তিবা আল আলীকে তার বাবা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।


আরও খবর



রাজধানীতে রাত ১১টার পর চা-সিগারেটের দোকান বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীতে রাত ১১টার পর পাড়া-মহল্লার সকল চায়ের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মার্চ মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের এ নির্দেশ দেন তিনি।

দ্রুত এটি কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ছিনতাই ও অপরাধ প্রতিরোধে রাতে রাস্তার মোড়ের দোকানগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় এসব অস্থায়ী দোকানে অপরাধীরা সারা রাত আড্ডা দেয়, আর সুযোগ পেলেই ছিনতাই করে। রাস্তার পাশের সিগারেট, পান ও চায়ের দোকান রাত ১১টার পর বন্ধ করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠী যেন কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর থাকারও নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার।

এবার রমজানে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে ক্রাইম বিভাগও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানান তিনি।

হাবিবুর রহমান বলেন, রাস্তায় পুলিশের স্টিকার লেখা কোনো গাড়ি দেখলে ডিউটিরত পুলিশ অবশ্যই যাচাই করে দেখতে হবে যে, সেটা আসলেই কোনো পুলিশ অফিসারের গাড়ি কি না। কারণ, গাড়িতে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে বা ডিএমপির লোগো লাগিয়ে সন্ত্রাসীদের চলাফেরার তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, যদি যাচাই করে দেখা যায় সেটা পুলিশের গাড়ি নয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ডিএমপির ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগ এ বিষয়টি নজর রাখবে।


আরও খবর



শূন্য রানে ৭ উইকেট, অভিষেকেই বিশ্বরেকর্ড রোহমালিয়ার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অবিশ্বাস্য এক বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ইন্দোনেশিয়ার অফ-স্পিনার রোহমালিয়া। ৩ দশমিক ২ ওভারে শূন্য রানে ৭ উইকেট নিয়ে এই বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন রোহমালিয়া।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বালিতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে এই কীর্তি গড়েন ১৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইন্দোনেশিয়া অধিনায়ক নি ওয়ান সারিয়ানি। এরপর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। ৪৪ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন ওপেনার সাকারিনি। অন্যদিকে মঙ্গোলিয়ার হয়ে ২৯ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪ ‍উইকেট শিকার করেন এনখজুল।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রোহমালিয়ার বোলিং তোপে ১৬ দশমিক ২ ওভারে মাত্র ২৪ রানেই গুটিয়ে যায় মঙ্গোলিয়া। ৩ দশমিক ২ ওভারে কোনো রান না দিয়েই ৭ উইকেট নেন ডানহাতি এই অফস্পিনার।

মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ নিয়ে তৃতীয়বার ৭ উইকেট নেওয়ার ঘটনা দেখা গেল। আগের রেকর্ডটি ছিল নেদারল্যান্ডসের ফ্রেডেরিক ওভারডাইক ও আর্জেন্টিনার অ্যালিসন স্টকসের। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইউরোপ বাছাইপর্বে ৩ রানে ওভারডাইক ৭ উইকেট এবং ২০২২ সালে পেরুর বিপক্ষে ৩ রানে ৭ উইকেট নেন অ্যালিসন।


আরও খবর