আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে আগারগাঁওস্থ কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্‌যাপিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান, এমপি। পাশাপাশি উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল(অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, মহাপরিচালক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, এনবিপি, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামরিক ও অসামরিক অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর নবনির্মিত স্টেশন লক্ষীপুর এর ০২ টি ভবন (ভার্চুয়ালি) উদ্বোধন করেন পাশাপাশি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কর্মকর্তা, নাবিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক প্রদান করেন এবং মহাপরিচালক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক প্রদান করা হয়।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূর প্রসারী ভাবনার ফলেই আমাদের নিজস্ব সমুদ্র এলাকা দাবী সম্বলিত The Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974 প্রণীত হয়। পরবর্তীতে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড প্রতিষ্ঠার সোপান রচনা করেন। বিগত ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় মহান জাতীয় সংসদে ‘‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বিল’’ উত্থাপন করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এ বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে ২টি জাহাজ ও ২টি বোট এবং প্রেষণে আগত ২২০ জন নৌ সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তার পথ চলা শুরু করে। পরবর্তীতে কালের পরিক্রমায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এ বাহিনীতে নতুন নতুন প্লাটফর্ম ও অবকাঠামো সংযোজিত হয়েছে। এর ফলে বাহিনীর অপারেশনাল কর্মকান্ডে ব্যাপক গতি সঞ্চার হয়েছে এবং অর্জিত হয়েছে নানা সাফল্য। কোস্ট গার্ডের নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর ঝুঁকিপূর্ণ বন্দরের তালিকা থেকে মুক্ত হয়ে একটি নিরাপদ বন্দরে পরিনত হয়েছে।

আসন্ন দিনগুলোতে দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণে সততা, পেশাদারিত্ব এবং দেশপ্রেমের চেতনাকে বুকে ধারণ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে বদ্ধ পরিকর কোস্ট গার্ড। সর্বোপরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণে নিরলস কাজ করে যাবে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। 


আরও খবর



অস্ত্র মামলায় যুবকের ১৭ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

Image

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জুয়েল চন্দ্র ওরফে জুয়েল রানা (২৭) নামে এক যুবকের ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রবিবার (১২ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় দেন ।

জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানাধীন চরবাটা গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের ছেলে। আদালতের রায়ের সময় আসামী অনুপস্থিত ছিলেন। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অস্ত্র মামলায় আসামী জুয়েল রানা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

আদালত তাকে অস্ত্র আইনের ১৯ ধারায় ১০ বছর ও ১৯ এফ ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালত মো. সুজন (৩৩) নামে অপর আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। সুজন রামগতির চরগাজী গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। মো. জুয়েল নামে এ মামলার আরেক আসামী কিশোর হওয়ায় তার মামলাটি বিচারের জন্য কিশোর আদালতে পাঠানো হয়।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতির হাজিরহাট বাজার থেকে পুলিশ একটি একনলা দেশীয় বন্দুক ও নয়টি কার্তুজসহ জুয়েল রানা ও জুয়েলকে আটক করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানান, অস্ত্রটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য মো. সুজন নামে এক ব্যক্তি জুয়েলের কাছ থেকে অস্ত্র ভাড়া করেন। পরে নির্বাচন শেষে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আটক করে।

এ ঘটনায় রামগতি থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের বাদী হয়ে আটক দুজনসহ পলাতক সুজনকে আসামী করে অস্ত্র আইনে মামলা করেন। একই বছরের ১১ এপ্রিল থানার এসআই মামলাটি তদন্ত করে অভিযুক্ত জুয়েল ও সুজনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেন। অন্য আসামী জুয়েল কিশোর হওয়ার বিচারের জন্য পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন কিশোর আদালতে দাখিল করা হয়। 


আরও খবর



উপজেলা নির্বাচন: প্রচারণায় জমজমাট জৈন্তাপুর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিলেট প্রতিনিধি

Image

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, মাইকিং আর বাড়িতে বাড়িতে কুশল বিনিময়ের মধ্যে চলছে শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী তৎপরতা।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্দিতায় থাকলেও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমদ ও হোসেন আহমদ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

তাই এ পদে জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী (আনারস), আমেরিকা প্রবাসী আওয়ামী লীগনেতা আবদুল গাফফার চৌধুরী খসরু (কাপ-পিরিচ), ইসমাইল আলী আশিক (দোয়াত কলম) প্রতিক নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভোটারদের মতে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতিকের ইসমাইল আলী আশিকের নাম তেমন আলোচিত না হলেও ফ্রন্টলাইনে রয়েছেন আনারস প্রতিকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী। তার সাথে আলোচনায় আছেন কাপ পিরিচ প্রতিকের প্রার্থী আমেরিকা প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল গাফফার চৌধুরী খসরু।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে কথা হয় ভোটারদের সাথেও। আলুবাগানের রিসোর্ট ব্যবসায়ী রাজু আহমদ, আসামপাড়া মানিক চৌধুরী হরিপুরের বাসিন্দা শামসুদ্দিন বলেন, এবারের নির্বাচনে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন আনারস প্রতিকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী। কারণ, তিনি জনগণের জন্য মাঠেঘাঠে সবসময় তাকে পাওয়া যায়। তাই আমরা আসন্ন নির্বাচনে তাকে আনারস প্রতিকে ভোট দিবো।

ছাতারখাই দরবস্ত এলাকার আব্দুস ছালাম বলেন, এবারের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আমি আবদুল গাফফার চৌধুরী খসরু ভাইকে কাপ পিরিচ প্রতিকে ভোট দিবো। বিপদে-আপদে আমরা তাকে পাশে পাই।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অপরাপর প্রার্থীদের মতো বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় শুরু থেকেই প্রচারণায় নজর কাড়ছেন  লিয়াকত আলী। ইতিমধ্যে তার আনারস প্রতিকের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী বা প্রতিক না থাকলেও দলের পরীক্ষিত কর্মি এম লিয়াকত আলীর পক্ষে প্রকাশ্যে ও আড়ালে কাজ করছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

নিউজ ট্যাগ: সিলেট

আরও খবর



সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন, তদন্ত হলেও সমাধান নেই

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ৩২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবার এর কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্ঘটনা এড়াতে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগছেই। রবিবার (৪ মে) চাঁদপাই রেঞ্জের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বনরক্ষী ও স্থানীয়রা।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ তিনটি হলো, সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের সঙ্গে মিশে যাওয়া নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারির ব্যবস্থা করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদীর কোলঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলনের রশির নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় তিনটি সুপারিশই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৯০ একর বনভূমি। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের কটকাতে। ওই ঘটনায় পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় আগুন লাগে। এর কিছু দিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায়ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এর একদিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং ওই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে দানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না।

জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদই ধ্বংস করে চলছে প্রতিনিয়ত একশ্রেণির চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাঘ, হরিণ হত্যাসহ বনের সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। এই অবস্থার মধ্যে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনে আয়তন ছিল বর্তমানের দ্বিগুণ। কমতে-কমতে বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন এখন দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির সর্বমোট ৫১ ভাগ। ২৪ ঘণ্টায় দুবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবন।

সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। বর্তমানে যা সমগ্র সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এলাকা। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ দশমিক এক বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ এক হাজার ৬০৩ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটার।

এই জলভাগে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার।

ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।

করোনাকালে গোটা সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট জারি করে পর্যটক, জেলে-বনজীবীদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন অধিদফতর। এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও হুমকিতে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য বনে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে বনরক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বনজীবীদের বিড়ি সিগারেটের আগুনে অনেক সময় আগুন লাগে। এ জন্য আমরা বনজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে ওয়াচ টাওয়ার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ, হরিণ হত্যার পাশাপাশি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও আগুন দস্যুদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিংসহ সব ধরনের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর



অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় পুলিশের এসআই নিহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

Image

কুষ্টিয়ার মিরপুরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের কাটদহচর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার নাম সাইদুর রহমান (৪৫)। তিনি উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাজিহাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাইদুর রহমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তি পরীক্ষার ডিউটি শেষ করে মোটরসাইকেল যোগে ক্যাম্পে ফিরছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে কাটদহচর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় রেলক্রসিং পারাপারের সময় ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে আসা দর্শনাগামী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার তাকে ও মোটরসাইকেলটি টেনে নিয়ে যায় ট্রেনটি। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।

মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মাজিহাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাইদুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।


আরও খবর



সিআইপি কার্ড পেলেন চট্টগ্রামের ১২ ব্যবসায়ী

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

দেশের বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ১৪০ জন ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) নির্বাচিত করেছে সরকার। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১২ ব্যবসায়ী রয়েছেন। অন্যদিকে পদাধিকার বলে ট্রেড ক্যাটাগরি থেকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ৪৪ পরিচালকও পেয়েছেন সিআইপি মর্যাদা।

দুই ধরনের সিআইপি মিলিয়ে ২০২২ সালের জন্য মোট ১৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে গেজেট প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকার ওয়াটার গার্ডেনে ১৮৪ ব্যবসায়ীর হাতে সিআইপি কার্ড তুলে দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান ও এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।

চট্টগ্রামের নির্বাচিত ১২ সিআইপি হলেন, কৃষিজাত দ্রব্য একক ক্যাটাগরিতে (একক) নগরীর আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের মেসার্স এস আর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ফোরকান, এগ্রোপ্রসেসিং (একক) ক্যাটাগরিতে আগ্রাবাদ কিষোয়ান স্ন্যাকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, নীটওয়্যার (একক) ক্যাটাগরিতে ডবলমুরিং এলাকার ডিভাইন ইন্টিমেটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাওহার সিরাজ জামিল, নীটওয়্যার গার্মেন্টস (গ্রুপ) ক্যাটাগরিতে নাসিরাবাদ শিল্প এলাাকর কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, নীটওয়্যার গার্মেন্টস (গ্রুপ) ক্যাটাগরিতে বায়েজিদ কুলগাঁও জালালাবাদের রিটজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা মো. জামশেদ আলী, টেঙটাইল (ফেব্রিঙ) একক ক্যাটাগরিতে পটিয়ার কালারপুল এলাকার ফোর এইচ ডাইং এন্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান মিস সাহারা চৌধুরী, বিবিধ (একক) ক্যাটাগরিতে পাহাড়তলী সাগরিকা রোড বিসিক শিল্প এলাকার মেরিন সেফটি সিস্টেমের ব্যবস্থাপনা অংশীদার গাজী মোকাররম আলী চৌধুরী, বিবিধ (একক) ক্যাটাগরিতে নগরীর সদরঘাট রোডের বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমের আলী হুসাইন, বিবিধ (একক) ক্যাটাগরিতে পাহাড়তলী সরাইপাড়া সাগরিকা রোডের মনির ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. মনির হোসেন, ইপিজেডভুক্ত সি (একক) ক্যাটাগরিতে সিইপিজেড প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর এবং ইপিজেডভুক্ত সি (একক) ক্যাটাগরিতে সিইপিজেডের ইউনিটি স্টাইল এন্ড এঙেসরিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ অহীদ সিরাজ চৌধুরী। অন্যদিকে সিআইপি ট্রেডে নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি এবং এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ নুরুন নেওয়াজ।

উল্লেখ্য, নির্বাচিত সিআইপিরা এক বছর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সুযোগসুবিধা ভোগ করবেন। সিআইপি কার্ডের মেয়াদকালীন বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশপত্র গাড়ির স্টিকার পাবেন। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে বিদেশে ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভিসাপ্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে উদ্দেশ্য করে লেটার অব ইন্ট্রুডাকশন ইস্যু করবে। সিআইপি ব্যক্তিদের স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। একইসঙ্গে বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। সিআইপি কার্ডের মেয়াদকাল উত্তীর্ণ হওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে কাউকে প্রদত্ত সিআইপি সুবিধা প্রত্যাহার করার ক্ষমতা সরকার সংরক্ষণ করে।


আরও খবর