যুক্তরাষ্ট্রের
হামলায় ইরাকে বেসামরিক নাগরিকসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন।
এ হামলার নিন্দা জানিয়ে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি ইরাকের সার্বভৌমত্বের
বিরুদ্ধে। এই হামলার ফলে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
খবর আল জাজিরার।
আজ শনিবার এক
সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, বেসামরিক ও নিরাপত্তা উভয় এলাকা লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র
বোমা হামলা করেছে। হামলায় অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
এছাড়াও হামলায় মোট ২৫ জন আহত হয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে জর্ডানে আমেরিকান সৈন্যদের হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান নিয়ন্ত্রিত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য আঘাত করার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও প্রতিশোধমূলক হামলার সতর্ক করেছিল।
আরও পড়ুন>> ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দুই লাখ বাড়ি হস্তান্তর করবে তুরস্ক
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী
মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলা ইরাক ও এ অঞ্চলের
নিরাপত্তাকে অতল গহ্বরের দ্বারপ্রান্তে ফেলবে। এ সময় বাগদাদের সঙ্গে বিমান হামলার সমন্বয়ে
ওয়াশিংটনের দাবিকে ‘মিথ্যা’ ও ‘আন্তর্জাতিক জনমতকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে’ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে আরও
বলা হয়, এই অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের উপস্থিতি ‘ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে
হুমকি’র কারণ
হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংঘাতে ইরাককে জড়িত করা
হয়েছে। এর প্রতিবাদে বাগদাদের মার্কিন চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে পাঠায় ইরাকের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ২৮ জানুয়ারি
জর্ডানের একটি ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হন। এতে আহত হন আরও ২৫
সেনা। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো
বাইডেন। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের চরম মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
গত ১৭ অক্টোবর
থেকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চলছে। ২৮ জানুয়ারির হামলার আগে আরও অন্তত দেড়শ হামলা হয়েছে।
মূলত গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহী রণতরী,
এয়ার ফোর্স ফাইটার স্কোয়াড্রন এবং অন্য সেনাদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর পর থেকেই হামলা
হয়ে আসছে।
জর্ডানে মোতায়েন রয়েছে অন্তত ৩ হাজার মার্কিন সেনা। তাদের ঘাঁটি ইরাক, ইসরায়েল, সিরিয়া, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চল এবং সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত।
হামাস-ইসরায়েল
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলায় সেনাদের মৃত্যুর
ঘটনা ঘটল। এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন জায়গায় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের
সেনাবাহিনী হতাহতের কোনো খবর দেয়নি।
তবে সম্প্রতি
ইরানের অস্ত্রবাহী জাহাজে অভিযান চালাতে গিয়ে নিখোঁজ দুই নেভিসিলকে ১০ দিন পর মৃত
ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তারা সাগরের ঢেউয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। টানা ১০ দিন অনুসন্ধান
চালিয়েও তাদের সন্ধান মেলেনি।