যুক্তরাজ্যে পাওয়া উচ্চ সংক্রমিত করোনার নতুন ধরনের (স্ট্রেন) এবার দেখা মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটির কলোরাডো রাজ্যে একজনের শরীরে নতুন ধরনের এই করোনা শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি ২০ বছর বয়সী ওই রোগী কোন দেশ ভ্রমণ করেননি। বর্তমানে তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কলোরাডোর গভর্নর জারেড পলিস বলেছেন, করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ডেনভারের কাছে এলবার্ট কাউন্টিতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পুরোপুরি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তারা এখন পর্যন্ত ওই বক্তির সংস্পর্শে আসা কারও শরীরে করোনার নতুন ধরনের উপস্থিতির প্রমাণ পাননি।’
রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তারা করোনার নতুন বৈকল্পিকের পরিচিতি এবং অন্যান্য সম্ভাব্য কেস শনাক্ত করতে কাজ করছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এমন সময়ে নতুন ভাইরাস শনাক্তের ঘটনা ঘটলো যখন করোনা টিকার বিতরণ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলছেন, টিকা দেওয়ার কার্যক্রম যথাযথভাবে হচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৯০ লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩ লাখ ৩৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। ধারণা করা হয় যে, করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনটি আগেরটির তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সেটি আগের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, করোনার নতুন রূপটি পূর্ববর্তী স্ট্রেনের তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে সংক্রমণযোগ্য। তবে সংক্রামিতদের জন্য আরও বিপজ্জনক নয়।
এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, তাদের বিশ্বাস দেশে ইতোমধ্যে নতুন ধরনের এই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনার নতুন ধরন নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী। ইতোমধ্যে অন্যান্য দেশেও পাওয়া গেছে উচ্চ সংক্রমিত এই নতুন ধরন। কানাডায় দুই ব্যক্তির শরীরে পাওয়া যায় করোনার নতুন ধরন। ছয় ভারতীয়র শরীরেও করোনার এই নতুন ধরন পাওয়া গেছে বলে মঙ্গলবার দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার জাপানে দুই ব্যক্তির শরীরে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া ফ্রান্স ও হংকংয়েও এই নতুন করোনা শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন নিয়ে বেশ চাপে রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ পুরো বিশ্ব। সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে নতুন করে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।