যুক্তরাষ্ট্রে
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার একটি তিনতলা বাড়ির খোঁজ পেয়েছে
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় এস কে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে
মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুদকের উপপরিচালক মো.
গুলশান আনোয়ার প্রধান মামলাটি দায়ের করেন।
দুদকের মামলার
এজাহারে বলা হয়েছে, ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে সিনহা তার
ভাইয়ের নামে ২০১৮ সালের ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ১৭৯, জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউ
জার্সি ০৭৫২২ এলাকায় তিন তলাবিশিষ্ট বাড়িটি কেনেন। এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকার
সময় অপরাধলব্ধ অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় আমেরিকায় পাচার করেন। পরে তার ছোট ভাই
অনন্তর অ্যাকাউন্টে এসব অর্থ ট্রান্সফার করেন।
দুদক সচিব মো.
মাহবুব হোসেন বলেন, এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অর্জিত অর্থ
হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় আমেরিকায় পাচার করে তার ছোট ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার
হিসাবে ট্রান্সফার করেন। তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার নগদ প্রদান করে
বাড়িটি ক্রয় করেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং
১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ হওয়ায় মামলা রুজু করা হয়।
মামলার এজাহারে
আরও উল্লেখ করা হয়, সিনহার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা যুক্তরাষ্ট্রে ডেন্টিস্ট হিসেবে
কর্মরত। আমেরিকার একটি ব্যাংক থেকে ৩০ বছরের জন্য ঋণ নেন ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ ডলার।তারপর
১ লাখ ৪৫ হাজার ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার
ডলার নগদ অর্থ দিয়ে আরেকটি বাড়ি কেনেন তিনি।
দুদক সূত্রে জানা
গেছে, অর্থ পাচারের অভিযোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এস কে সিনহার সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি
দেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে
এস কে সিনহার তিনতলা বাড়ির রেকর্ডপত্র হাতে আসে দুদকের।
রোববার (২৭ মার্চ)
এ বিষয়ে রেকর্ডপত্রের বরাত দিয়ে দুদকের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, এস কে সিনহা
তার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার মাধ্যমে বাড়ি কেনার অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন
বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া ২০২১ সালের
৭ অক্টোবর ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে
এস কে সিনহার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে ৭ কোটি
১৪ লাখ টাকার সম্পদ বেনামে অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।