বরগুনা থেকে অলিউল্লাহ ইমরান
বরগুনা শহরের কলেজ সড়ক খামারবাড়ি এলাকায় বাড়ীর মালিকের ছেলের যৌন হয়রানি ও মিথ্যা বদনাম সহ্য করতে না পেরে সামিয়া নামের ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী মাকে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ সকাল ১০টার দিকে বাসার বাথরুম থেকে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্বার করা হয়।
এলাকাবাসী অভিযুক্ত বাড়ির মালিকের ছেলে ২ সন্তানের জনক জামাল(৩২)কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
সামিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়, সামিয়ার বাবার সাথে মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ৫-৬ মাস পূর্বে দ্বিতীয় স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে কলেজের উত্তর পাশে খামার বাড়ির সামনে আবুল বাশার নামের জনৈক ব্যাক্তির বাসা ভাড়া নেয়। পাশে এক বাসায় আবুল বাশারের ছেলে জামাল স্ত্রী ও দুসন্তান নিয়ে বসবাস করছে।
স্থানীয়রা জানায়, জামাল প্রায়ই সামিয়া বাথরুমে গোসলে গেলে উকি দিয়ে দেখতো এবং অশ্লীল ইঙ্গিত করতো। বিষয়টি সামিয়া তার মাকে এবং জামালের স্ত্রীকে জানায়। এলাকার অনেকেই বিষয়টি জেনে যায়। জামাল বাহিরে দেখলেই অশ্লীল মন্তব্য ও ইঙ্গিত করতো। উল্টো জামাল সামিয়ার বিরুদ্বে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয়। দুদিন পূর্বে জামাল অশ্লীল মন্তব্য করলে সামিয়ার মা মোবাইলে জামালের বাবাকে জানায়।
সামিয়ার মা, সুমি আক্তার সাংবাদিকদের জানায়, শনিবার বাথরুমে সামিয়া গোসলকরার সময় জামাল উকি দিয়ে দেখলে সামিরা পানি ছুড়ে মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল অশ্লীল গালি দেয়।
আত্মহত্যার আগে সামিয়া তার মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করে,"মা আমার নামে তারা যে বদনান উঠিয়েছে তাতে আমি এই পৃথিবীতে থাকতে পারিনা। আমি একটি খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। মা তুমি ভালো থেক। আমাকে কেউ বিশ্বাস করেনা তুমি ছাড়া।
ইতি,তোমার, সামিরা।
বরগুনা সদর সার্কেল মেহেদী হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন গিয়ে জানান, আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি! এবিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা রজু করা হয়েছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। এলাকাবাসী উত্তাক্ত্যকারী একজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তদন্ত করে আত্মহত্যার কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।