আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

যেকোনো সময় গ্রেপ্তার তাহসান-মিথিলা-ফারিয়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ ডিসেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ ডিসেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

গ্রাহকদের সঙ্গে ইভ্যালির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জেরে গত সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। এবার গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত তিন তারকা তাহসান রহমান খান, তার সাবেক স্ত্রী রাফিয়াত রশীদ মিথিলা এবং অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া।

শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্যই জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান। সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহকের মামলার জেরে তাহসান-মিথিলা ও ফারিয়া গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

ইভ্যালিতে চিফ গুডনেস অফিসার হিসেবে ছিলেন অভিনেতা ও গায়ক তাহসান রহমান খান। তার সাবেক স্ত্রী মিথিলা ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এছাড়া শবনম ফারিয়া প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তবে ইভ্যালি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে নেন।

কিন্তু তাতে বোধহয় পার পাচ্ছেন না দেশের এই তিন তারকা। প্রতারণার অভিযোগে তাহসান-মিথিলা-ফারিয়া এবং ইভ্যালির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আরিফ আর হোসাইনের নামে মামলা করে দিয়েছেন, সাদ স্যাম রহমান নামে ওই ব্যক্তি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তাদের উপস্থিতি এবং তাদের বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তার কারণে আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেন সাদ স্যাম রহমান। এসব তারকার কারণে মামলার বাদী প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ মামলার এক নম্বর আসামি ইভ্যালি চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে। প্রতারণা ও অর্থআত্মসাতের মামলায় দুজনেই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।


আরও খবর



সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমানবাহিনী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন লতিফের ছিলা নামক এলাকায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। রবিবার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে বনরক্ষী-ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি এ কাজে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার।

শুরুতেই নৌবাহিনীর মোংলা ঘাঁটির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি ওঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দেন। তবে নদীতে জোয়ার না থাকায় পানি সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের উপপরিচালক মামুন আহমেদ জানান, সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসেছে। এর মধ্যে মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে। বাকি দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। তবে বনের পাশে ভোলা নদীতে এখন ভাটা থাকায় আগুন নেভানোর কাজে পাইপসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নেওয়া যাচ্ছে না। জোয়ার হলে এগুলো পার করা হবে। তবে আগুন অল্প অল্প করে জ্বলছে। শুকনো পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার শঙ্কা নেই।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। তবে আজ সকাল থেকে এ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরাও সব রকমের সহযোগিতা করছেন।

এদিকে আগুন লাগার কারণ, কী পরিমাণ এলাকায় আগুন লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ ইসরায়েলকে সাহায্যের জন্য মরিয়া: বাইডেন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ ইসরায়েলকে সাহায্যের জন্য মরিয়া বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ এক মতামত কলামে বাইডেন লিখেছেন, এই দুটি দেশ নিজেরা নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম, কিন্তু সেটা করতে তারা সমরাস্ত্র সহ আমেরিকান সাহায্যর উপর নির্ভর করে।

ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য সিনেটে পাস হওয়া সাহায্য প্রস্তাবকে বাইডেন শক্তিশালী এবং বিচক্ষণ’ বলে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, রিপাবলিকান দলের হাউস সদস্যদের ছোট একটি উগ্রবাদী গ্রুপের উচিত হবে না এই প্রস্তাবকে আটকে রাখা।

জার্নাল পত্রিকায় বাইডেন যুক্তি দেন যে এই সাহায্য ইউক্রেনের দরকার, যাদের গোলা-বারুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর গত সপ্তাহান্তে ইরানের ড্রোন আক্রমণের পর ইসরাইলের সাহায্য দরকার।

তবে তিনি বলেন, এই সাহায্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যও একই গুরুত্ব বহন করে।

বাইডেন বলেন, ইউক্রেন এবং ইসরায়েল দু’দেশই নির্লজ্জ প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে, যারা তাদের নিশ্চিহ্ন করতে চায়। পুতিন ইউক্রেনের জনগণকে বশে এনে নতুন রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে চান। ইরানের সরকার ইসরাইলকে চিরতরে ধ্বংস করে বিশ্বের মানচিত্র থেকে একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র মুছে ফেলতে চায়। এরকম ফলাফল আমেরিকার কখনোই মেনে নেয়া উচিত না। এটা শুধু আমাদের মিত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্যই নয়। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তাও এখানে জড়িত আছে।

তিনি রিপাবলিকানদের অভিযোগ, যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে টাকা খরচ করার সামর্থ্য আমেরিকার নেই, তার জবাবে বলেন, এই সাহায্য একটি সাদা চেক’ হিসেবে দেয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের জন্য সমরাস্ত্র কারখানা তৈরি করা হবে আমেরিকায়।


আরও খবর



হাসপাতাল থেকে শিশু অপহরণ, ১৪ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানে অপহরণের দায়ে মো. শহিদুল্লাহ (৫৭) নামে এক ব্যক্তিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা এই কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আসামি মো. শহিদুল্লাহ (৫৭) কক্সবাজারের মহেশখালীর ধইলের পাড় এলাকার আব্দুল হকের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ জুলাই ছেলে নাঈমকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করানোর জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করান বাবা। ওই সময় নাঈমের মা ও ৫ বছরের বোন জান্নাতুল নাঈমা হাসপাতালে অবস্থান করছিল। ওই দিন সন্ধ্যায় ক্লান্তিতে পাশের খালি সিটে নাঈমের মা ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙলে পাশে মেয়ে নাঈমাকে না দেখে চিৎকার করেন ও তাকে খুঁজতে হাসপাতালের নিচ তলায় আসলে নাঈমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালে অবস্থান করা অন্যান্য রোগীর স্বজনরা শহিদুল্লাহকে আটক করে পুলিশ সোপর্দ করেন। পরে নাঈমার বাবা মো. আবদুল মান্নান বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বাসিং থুয়াই মার্মা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামি মো. শহিদুল্লাহকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: বান্দরবান

আরও খবর



কসবায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ রাসেল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসান (২৬) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত হাসান ওই এলাকার দারু মিয়ার ছেলে।

নিহত হাসানের চাচাতো ভাই আরিফ জানান, হাসান বিভিন্ন সময় সীমান্তের ওইপার থেকে চিনি চোরাচালানে শ্রমিকের কাজ করতেন।

সোমবার সকালে সীমান্ত থেকে চিনি আনতে গেলে বিএসএফ গুলি চালায়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক হাসান উল্লাহ জানান, বিএসএফের গুলিতে একটি ছেলে মারা গেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

কসবা থানার ওসি রাজু আহমেদ জানান, বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। তার মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা আছে। তার শরীরে একটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।


আরও খবর



বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ২৭তম বছরে পদার্পণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রথমেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বিশ্বের মহান নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামক দেশের জন্ম হতো না। কৃতজ্ঞতা জানাই রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে- যিনি জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত এবং দেশের চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

ঢাকার প্রথম তিন তারকা হোটেল ছিল হোটেল শাহবাগ। নবাব সলিমুল্লাহ ১৯০৬ সালের ১৪ ও ১৫ এপ্রিল ভবনটি নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনের স্থান হিসেবে নির্বাচন করেন। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বরে এ ভবনেই অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে এটিকে সংস্করণ করে হোটেলে রূপান্তর করা হয়, যা ঢাকার প্রথম আন্তর্জাতিক হোটেল। পঞ্চাশের দশকে বিদেশি অতিথিদের আবাস ও আহারের ব্যবস্থা, বড় আকারের অভ্যর্থনা সবই এখানে হতো। এটিই বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। আগে এর নাম ছিল ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ। সাধারণ মানুষের কাছে পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিত। ইতিহাসবিদ শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ঢাকা কোষ” এবং ইফতিখার-উল-আউয়াল সম্পাদিত ঐতিহাসিক ঢাকা মহানগরী: বিবর্তন ও সম্ভাবনা বইটিতে এই হাসপাতাল তৈরির ইতিহাস লেখা রয়েছে।

এতে বলা হয়, ১৯৬৫ সালে ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চের জন্য শাহবাগের এই জায়গা অধিগ্রহণ করে সরকার। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯৬৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনজন সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ ব্রিটিশ কাউন্সিলের উপদেষ্টা স্যার জেমস ডি এস কেমেরন, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক এ কে এস আহম্মদকে নিয়ে এই ইনস্টিটিউট গড়ে ওঠে। পরে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠিত স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিনের সঙ্গে এটি যুক্ত হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে অধ্যাপক নুরুল ইসলামের অনুরোধে তৎকালীন মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী মুসলিম লীগের পরিত্যক্ত ভবনটি (ব্লক-এ) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে এখানেই পিজি হাসপাতালের কার্যক্রম চলে। তবে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। উচ্চতর মেডিকেল শিক্ষা এবং গবেষণার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল পিজি হাসপাতালে। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে তৎকালীন সময়ে দেশের ১৩টি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং নিপসমসহ পাঁচটি পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছিল না। বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন দেশে একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণা সমৃদ্ধ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও সব মেডিকেল কলেজের স্বায়ত্বশাসন দাবি করে আসছিল।

এখানে উল্লেখ্য যে, ৬৯-এর ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দেওয়া ১১দফার মধ্যেও চিকিৎসকদের দাবির কথা উল্লেখ ছিল। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মেডিকেল শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও আইপিজিএমআর শিক্ষক সমিতি একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণা সমৃদ্ধ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে।

জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসক সমাজ আন্তর্জাতিক মান অর্জন করে দেশের আপামর জনসাধারণের সুচিকিৎসায় নিয়োজিত হবেন এ আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর কেবলমাত্র হীন রাজনৈতিক সংকীর্ণতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে আবারও আইপিজিএমআর করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি-জামাত জোট সরকার। এমনকি তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা থেকে গাজীপুর, টুঙ্গিপাড়া বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার হীন উদ্যোগ গ্রহণ করে।

জনসাধারণের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আবারও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগ নেন।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৫টি পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অন্যান্য ৫১টি অধিভুক্ত মেডিকেল/নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি রেসিডেন্সি কোর্স রয়েছে। চালু হয়েছে এমএসসি নার্সিং কোর্স। বাংলাদেশের ছাত্রদের বাইরেও ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সোমালিয়া, কানাডা, ইয়েমেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, বতসোয়ানা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশের প্রায় ১০০ বিদেশি ছাত্র বিভিন্ন কোর্সে লেখাপড়া করছেন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ১০ হাজার নতুন ও পুরাতন রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্টি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে এখন আটটি অনুষদসহ ৫৭টি পূর্ণাঙ্গ বিভাগ। আরও সুশৃঙ্খল এবং ডিজিটাল করা হয়েছে আর্থিক ব্যবস্থাপনা। আমাদের হাসপাতালে এখন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখানে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের সকল মানুষের কাছে পরিগণিত হয়েছে চিকিৎসার নির্ভরযোগ্য ভরসাস্থল হিসেবে।

রোগীদের আরও উন্নত চিকিৎসা দিতে ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে ভিট্রিও রেটিনা, গ্লুকোমা, কর্নিয়া, অকুলোপ্লাস্টি, ক্যাটারেক্ট ও রিফ্রেকটিভ সার্জারি, অর্থোস্কোপিক সার্জারী ও অর্থোপ্লাস্টি, হ্যান্ড এন্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি, শিশু এন্ডোক্রাইনোলজি, জেনারেল রিউম্যাটোলজি ও ইউমিনো রিউম্যাটোলজি।

মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় গবেষণাকে জোরদার করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কেন্দ্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সার্ভিস চালু আছে। এছাড়া কয়েকটি বিভাগে রোগীর ল্যাবরেটরি রিপোর্ট অনলাইনে মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ও কোরিয়া সরকারের যৌথ অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। ফলে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে কম খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পাবে। এছাড়া দেশে প্রথমবারের মতো পরপর দুটি ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, লিভারসহ অন্যান্য অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমও সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করি। তারপরও সকল শিক্ষক, ছাত্র, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে সাফল্য নিয়ে। প্রতিনিয়ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ- দেশি-বিদেশি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে। আমাদের ছাত্র এবং তরুণ চিকিৎসকরা এ সুযোগ নিয়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করছে নতুন নতুন জ্ঞান/অভিজ্ঞতা নিয়ে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সোসাইটির সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চার প্রাণকেন্দ্র।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের চিকিৎসক সমাজের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি যেমন বাস্তবায়ন করছেন, তেমনি এদেশের উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রযাত্রার সূচনা করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান চিকিৎসক সমাজ কৃতজ্ঞতার সাথে চিরদিন স্মরণ করবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের বুকে একটা রোল মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং উন্নত চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংযুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই প্রত্যাশা আমাদের সবার।

রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতা এবং সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাব, ইনশাল্লাহ।


আরও খবর