রংপুর বিভাগের
৮ জেলা ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। কোনো ঘোষণা ছাড়াই শুরু হয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং।
এক-দুদিন নয়, টানা পাঁচদিন ধরে এ অবস্থা চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ
মিলছে। বাকি সময়টা লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে উঠছে জনজীবন।
রংপুর বিভাগের
পুরো ৮ জেলার নগর-বন্দর, হাট-বাজার ও গ্রামে বিদ্যুৎ নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন
গ্রাহকরা। একবার লোডশেডিং হয়ে তা কখনো কখনো তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে।
এই অব্যাহত সমস্যার কারণে বিভাগের শত শত বড়-ছোট বিদ্যুৎ ভিত্তিক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
হয়ে গেছে। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভরা মৌসুমেও শপিংমল ও বিভিন্ন দোকানে বিদ্যুতের
অভাবে ক্রেতা কমে গেছে।
রংপুরের বিদ্যুৎ
বিভাগ বলছে, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং
দিতে হচ্ছে। তবে অবস্থা স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে তা জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা।
রংপুর বিদ্যুৎ
বিভাগের নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন
প্রকৌশলী বলেছেন, রংপুর বিভাগে পিক আওয়ারে বিকাল ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নেসকো ও
পল্লী বিদ্যুৎ মিলিয়ে চাহিদা রয়েছে ৭০০ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ
৫০০ মেগাওয়াট। ফলে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করে রেশনিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
রংপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, রংপুর বিভাগে তিন দিন ধরে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। রংপুর নগরীতে আরও ভয়াবহ অবস্থা। বিদ্যুতের অভাবে শপিংমলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা বন্ধ হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছে না। বিদ্যুতের অনিয়মিত লোড শেডিংয়ের কারণে লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী।
নীলফামারী পল্লী
বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সুলতান নাছিমুল হক জানান, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের
চাহিদা ৭০ মেগাওয়াট। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাস
ও জ্বালানি সংকটের কারণে সারাদেশেই লোডশেডিং হচ্ছে। সবকিছু বিবেচনা করে লোডশেডিং দেওয়া
হচ্ছে।
রংপুরের নেসকোর
প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেনের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
‘রংপুর বিভাগে
নেসকো আর পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে
লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। দিনের বেলায় রংপুর বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ৬০০ মেগাওয়াট। সরবরাহ
পাওয়া যাচ্চে সর্বোচ্চ ৪০০ মেগাওয়াট। সন্ধ্যার পর থেকে চাহিদা ৭০০ মেগাওয়াট। পাওয়া
যাচ্চে সর্বোচ্চ ৫০০ মেগাওয়াট। এ অবস্থা সাময়িক দাবি করে প্রকৌশলী বলেন, ‘আশা করি দুই থেকে
তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।