পাকিস্তানে ভয়াবহ
বন্যার তাণ্ডব অব্যাহত। এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রলয়ংকারী এই বন্যায় এক হাজার ৩০০ জনের
বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষ। এর মধ্যে
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ছড়াচ্ছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের
খবরে বলা হয়েছে, দেশটিতে বাস্তুচ্যুত হওয়া লাখ লাখ মানুষের জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য
দরকার। অন্যথায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সেইসঙ্গে পরিস্থিতি বাজে অবস্থায় পৌঁছাতে
পারে।দেশটিতে ত্রাণকর্মীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত এতো লোকের জন্য যে সাহায্য আছে তা অপ্রতুল।
আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী
সংস্থাগুলো সতর্ক করছে, বন্যা বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া এবং ম্যালেরিয়া রোগের
প্রকোপ অনেক বাড়ছে। এতে হাজার হাজার লোক বিশেষ করে শিশুরা অনেক ঝুঁকিতে আছে।
পাকিস্তানের সিন্ধু
এবং প্রতিবেশী বেলুচিস্তান প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্য অবকাঠামো ইতিমধ্যেই
খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। বন্যায় বিপর্যস্ত দেশটি এমনিতেই অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে।
যদিও পাকিস্তানের
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সরকার আইএমএফ থেকে এক দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার লোন নিশ্চিত
করেছে। তবে এটিও বন্যায় বিধ্বস্ত দেশটির জন্য যথেষ্ট নয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বন্যায় দেশটির কৃষি সেক্টর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘ অনুমান করছে, শুধু
সিন্ধু প্রদেশেই দুই-তৃতীয়াংশ শস্য পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।
খাদ্য ঘাটতির
কারণে গত মাসে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ৪৭ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর মধ্যে খাবার
সরবরাহে বিঘ্ন ঘটা ও শস্যক্ষেত ভেসে যাওয়ায় দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের দাম এখন
আকাশচুম্বী। এরে আরও চরম বিপাকে পড়েছে দেশটির সাধারণ মানুষ।
টিআরটির প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, দেশটির সবখানে এখন ক্ষুধার্ত ও দুর্ভোগের চিত্র। দেশটির নারী ও শিশুরা গাড়ি
দেখলেই সামান্য কিছু খাবার পাওয়ার আশায় তার পিছু ছুটছে।
দেশটিতে এইমুহূর্তে
এখন বিশেষ করে মশারি এবং বিশুদ্ধ খাবার পানিও ভীষণভাবে দরকার। পাকিস্তান মেডিক্যাল
এসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত চিকিৎসক আব্দুল গফুর বলেন, এখন আমাদের সামনে যা উন্মোচন হচ্ছে
তা হলো স্বাস্থ্য বিপর্যয়।
তিনি আরও বলেন,
সিন্ধু প্রদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা ত্বকের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রদেশটি
এখনো পানিবন্দি।
এই চিকিৎসক বলেন,
আমাদের জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য দরকার নাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। গফুর বলেন, আমাদের
যাদের চিকিৎসা দিচ্ছি তাদের দুই-তৃতীয়াংশই ম্যালেরিয়া রোগী।