রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের প্রধান
ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের একটি পুরোনো ভিডিও থেকে নেওয়া ৪০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ নতুন করে
জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি করেছে। রোববার (২৭ আগস্ট) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দেশের কাছে মিথ্যে
বলার চেয়ে মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়। এছাড়াও তিনি আকাশে উড়োজাহাজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার কথাও
উল্লেখ করেন। যার ফলে, রোববার তার রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে নতুন জল্পনা সৃষ্টি হয়।’
রুশ উড্ডয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওয়াগনার
গ্রুপের প্রধান একটি ব্যক্তিগত জেট বিমানে ছিলেন, যেটি বুধবার মস্কোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে
বিধ্বস্ত হয়। জেট বিমানের ১০ যাত্রীর কেউই বেঁচে নেই বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ঠিক ২ মাস
আগে প্রিগোজিন রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা ব্যর্থ হয়।
পশ্চিমা নেতারা সন্দেহ প্রকাশ করেন, ক্রেমলিনের
নির্দেশেই প্রিগোজিনকে হত্যা করা হয়েছে। ক্রেমলিন এই দাবি অস্বীকার করে এবং একে 'একেবারেই
মিথ্যে' বলে অভিহিত করে।
২৯ এপ্রিল রুশ সামরিক ব্লগার সেমিওন পেগভের
কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে নেওয়া ভিডিও ক্লিপে প্রিগোজিন বলেন, ‘রাশিয়া ধ্বংসের
দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে, কারণ যারা প্রকৃত সত্যবাদী ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে
সুর মেলাতে রাজি নন, তাদেরকে প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্টরা ধীরে ধীরে লাথি দিয়ে বের করে দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা একটি
ক্রান্তিলগ্নে এসে পৌঁছেছি। কেন আমি এত সততা নিয়ে কথা বলছি? কারণ এ দেশে যেসব মানুষ
থাকে, তাদের সামনে মিথ্যে বলার কোনো অধিকার আমার নেই। তাদের কাছে মিথ্যা বলতে বাধ্য
করার চেয়ে আমি মনে করি আমাকে মেরে ফেলাই শ্রেয়।’
তার এই সাক্ষাৎকারের ক্লিপটি ওয়াগনারের
টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘গ্রে জোনে’ প্রকাশ করা হয়েছে।
সেখানে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমি মিথ্যা বলব না। আমি সততার সঙ্গে
বলতে চাই, বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে রাশিয়া এবং যদি সব কিছু ঠিক করা না হয়, তাহলে বিমানটি
মধ্য আকাশে ধ্বংস হবে।’
গ্রে জোনে এই ভিডিও প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার
মধ্যে হাজারও রিপ্লাই এসেছে। প্রথম মন্তব্যকারী হিসেবে আউটপোস্ট (অনূদিত) এক টেলিগ্রাম
ব্যবহারকারী বলেন, ‘কিন্তু তিনি জানতেন।’
কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেন, প্রিগোজিন
এখনো জীবিত আছেন। একজন বলেন, তিনি কফিন থেকে বের হয়ে আসবেন আর স্বয়ং শয়তানও ভিরমি খাবে।
অনেকে মজার মজার মন্তব্যও করেন। সম্প্রতি
প্রিগোজিনের বন্ধু হিসেবে পরিচিত রুশ বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল সুরোভিকিনকে তার
পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। প্রিগোজিনকে বহনকারী উড়োজাহাজ ভূপাতিত হওয়ার ১ দিন আগেই
এটি করা হয়।
এক টেলিগ্রাম ব্যবহারকারী বলেন, হয়তো প্রিগোজিন
ও সুরোভিকিন জ্যামাইকায় বসে অবকাশ যাপন করছেন। পিনা কোলাডার গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে
গাঁজা সেবন করছেন।
এক পোস্টে দাবি করা হয়, মার্কিন সিক্রেট
সার্ভিস ও অ্যাংলো স্যাক্সনদের নির্দেশে ইউক্রেন প্রিগোজিনকে হত্যা করেছে। এরকম একজন
বীরকে হত্যা করা আমাদের জন্য এটা খুবই অসুবিধাজনক, যোগ করেন এক ব্যবহারকারী।