মহাভারতের ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের কথা আমরা অল্প বিস্তর সবাই জানি এবং পড়েছি। এই শ্রীকৃষ্ণ হলেন শ্রী বিষ্ণুর
অষ্টম অবতার। তিনি হিন্দু সমাজে পূজিত হন। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে তাঁর
জম্ম যেই দিনটি আজও প্রতি বছর জম্মাষ্টমী হিসেবে পূজিত হয়।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
বাণী, যথার্থ সাহসী তথা বীরের কথা বলে যারা শুধুমাত্র জয়ের চিন্তা করে, তাদের
ভুল শুধরাতে নিজের অপমান বোধ হয় না বরং তাতে তারা সঠিক শিক্ষা পাওয়ার আনন্দ খুঁজে
পান। সেই সময়ের জন্য হেরে গেলেও বারবারের জন্য উঠে দাঁড়াতে শিখে যায়।
“জীবন না ভবিষ্যতে আছে আর না আছে অতীতে, জীবন তো কেবল এই মুহূর্তে আছে; অর্থাৎ এই মুহূর্তের অনুভব করাকেই জীবন বলে।”
“যে সব ইচ্ছাকে ত্যাগ করে দেয় এবং ‘আমি’ ও ‘আমার’ এই লালসাপূর্ণ ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। সেই একমাত্র প্রকৃত শান্তিলাভ
করে।”
“অনেকে মনে করে থাকেন যে সংসারে কাজর্কম ত্যাগ করাই হল সন্ন্যাস। কাজ
মাত্রকইে তারা বন্ধন বা দুঃখরে কারণ মনে করনে, তাই সকল রকম কাজই পরিত্যাজ্য মনে করনে
। কিন্তু তারা ভুল করেন, কর্ম ত্যাগ করা নয়, র্কমফলের লোভকে ত্যাগ করাই হল আসল ত্যাগ
বা সন্ন্যাস।”
“নরকের তিনটে দরজা হয়- কামনা, ক্রোধ এবং লোভ।”
“যখন কোনো ব্যক্তি তার লক্ষ্যকে প্রাপ্ত করে ফেলে, তখন তার জীবনের সব
দুঃখ ঘুঁচে যায় এবং জীবনে নতুন আনন্দ ও খুশি ভরে ওঠে।”
“যার কাছে সুখ, দুঃখ, মান ও অপমান সবই সমান, সেই একমাত্র সিদ্ধপুরুষ।”
“দুর্বলই কেবল ভাগ্যের দোষারোপ করে আর-বীর ভাগ্যকে অর্জন করে।”
“যেকোনো ব্যক্তি যা চায় জীবনে সেটাই হতে পারে, যদি সে বিশ্বাসের সাথে
সেই বিষয়ের উপর চিন্তা করে।”
“কর্ম করে যাও কিন্তু ফলের চিন্তা করো না।”
“অহংভাবই মানুষের মধ্যে বিভিন্নতা সৃষ্টি করে। অহংভাবের অভাব থাকলে পরমাত্মার
সাথে বিভিন্নতার কোনো আর কারণই থাকেনা।”
“যেটা ঘটতে চলেছে সেটা ঘটবেই, যা ঘটবে না তা কখনোই ঘটবে না এরকম নিশ্চয়তাপূর্ণ
মনোভাব যার মধ্যে আছে; তাকে দুশ্চিন্তা কখনোই কষ্ট দিতে পারেনা।”
“বাহ্যিক বস্তুর ত্যাগকে বাস্তবে ত্যাগ বলেনা, আন্তরিক ত্যাগই হচ্ছে প্রকৃত
ত্যাগ। আমাদের কামনা, মমতা, আসক্তিই হচ্ছে বন্ধনযুক্ত কিন্তু সংসার তা নয়।”
“আত্মার জন্ম নেই , না কখনো মৃত্যু হয়। শরীর নষ্ট হয়ে গেলেও , আত্মা নষ্ট
হয় না।”
“খালি হাত এসেছো খালি হাত চলে যাবে , যা কিছু আজ তোমার সেটা অন্যদিন কারো
ছিল ,পরশু সেটা আরো কারো হয়ে যাবে । আজ তুমি যে জিনিস নিজের বলে প্রসন্ন , সেটাই তোমার
দুঃখের কারণ।”
“যখনই সত্যের সাথে অসত্যের লড়াই হয় তখন সত্য একা দাঁড়ায় অসত্যের বাহিনী হয় বিশাল, কারণ তার পেছনে মূর্খ, লোভী, স্বার্থপর ও বিশ্বাসঘাতকেরা থাকে।”
“হে অর্জুন , যবে যবে এই সংসারে ধর্মের অনিষ্ট হয় , এই সংসারে অধর্ম বৃদ্ধি
পায় , তখন তখন ধর্মের রক্ষার জন্য এই পৃথিবীতে আমি আবার ঘুরে আসি।”
“যে ব্যক্তি পঞ্চ – কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ , রস আদি ইন্দ্রিয় বিষয়গুলি
স্মরণ করে , সেই মূঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভন্ড বলা হয়ে
থাকে।”
“যে ব্যক্তি পঞ্চ-কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ , রস আদি ইন্দ্রিয়
বিষয়গুলি স্মরণ করে , সেই মূঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভন্ড
বলা হয়ে থাকে।”
“সজ্জন ব্যক্তি আরো ভালো চরিত্রের সজ্জন ব্যক্তির সাথে, নীচ ব্যক্তি আরো
নীচ চরিত্রের ব্যক্তির সাথেই থাকতে চায় । স্বভাব দ্বারা জন্ম যার যেমন প্রকৃতি হয়,
সে তার সেই প্রকৃতিকে কখনোই ছাড়েনা।”
“যদি কোন ঘটনার মানুষ ভয়প্রাপ্ত হয় তবে তার পরাজয়ই হয়। আর জে মানুষ সব হারিয়েও শান্ত আর একাগ্র থাকে সেই জয়ী।”
“তোমার কি চলে গেছে ,
যে কারণে তুমি
কাঁদছো ?
তুমি কি নিয়ে
এসেছিলে ,
যা তুমি হারিয়ে
ফেলেছো ?
তুমি কি সৃষ্টি
করেছিলে ,
যা নষ্ট হয়ে
গেছে ?
তুমি আসার সময়
কিছু নিয়ে আসো নি ,
যা নিয়েছো এখান
থেকে নিয়েছো
যা দিয়েছো এখান
থেকে দিয়েছো।”
“যে প্রাণী লোভ , মায়া , ক্রোধ , অশান্তি , ঈর্ষা , থেকে মুক্তি আমি তার
মধ্যে বিরাজ করি ।”
“হে অর্জুন , আমিই অতীত , আমিই বর্তমান , আমিই ভবিষ্যৎ , আমি সর্ব প্রাণীর
মধ্যে বিরাজ করি ,যে প্রাণী আমাকে মন দিয়ে স্মরণ করে , আমি সর্বদা তাদের পাশে থাকি
।”
“শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যেভাবে আচরণ করেন , সাধারণ মানুষেরা তার অনুকরণ করে।
তিনি যা প্রমাণ বলে স্বীকার করেন , সমগ্র পৃথিবী তারেই অনুসরণ করে।”
“সর্বদা সন্দেহ করে যাওয়া মানুষের প্রসন্নতা পাওয়া, না এই জীবনে সম্ভব
আর না অন্য জীবনে।”
“উৎসাহ এর চেয়ে বড় বল আর কিছুই নেই,উৎসাহী ব্যাক্তি জগত ও জয় করতে
পারে।”
“শুধুমাত্র মনই মানুষের মিত্র কিংবা শত্রু হয়ে থাকে।”
“এই সংসার প্রতিটা মূহুর্তে পরিবর্তন হচ্ছে, আর পরিবর্তনশীল বস্তু সর্বদা
অসত্যই হয়।”
“সময় কখনও মানুষের নির্দেশিত পথে চলে না, মানুষকে সময়ের নির্দেশিত পথে
চলতে হয়।
“যে বিষয় টি তোমার হাতে নেই , সেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করে কোনো লাভ নেই।”
“অগ্নি যেমন ধুম দ্বারা আবৃত থাকে, দর্পণ যেমন ময়লা দ্বারা আবৃত থাকে,
অথবা গর্ভ যেমন জরায়ুর দ্বারা আবৃত থাকে ,তেমনি জীবাত্মা বিভিন্ন মাত্রায় এই কামের
দ্বারা আবৃত থাকে।”