সমলিঙ্গের বিয়ে
নিয়ে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রায় ঘোষণা করছে। সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
ঐতিহাসিক রায়
ঘোষণা করছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সমলিঙ্গের বিয়ে নিয়ে এই রায় ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছেন, আইনের পরিবর্তন করার কাজটি পার্লেমেন্টের
হাতে। আইন পরিবর্তনের কাজ আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তবে সমলিঙ্গের মানুষ যাতে তাদের
অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, সে দিকে নজর রাখা জরুরি। এবিষয়ে বলতে গিয়ে বিচারপতি জানিয়েছেন,
বিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কোনো অনঢ় বিষয় নিয়। এর বিবর্তন হয়েছে ঐতিহাসিক সময় ধরেই। ফলে এবিষয়ে
আলোচনার সময় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এর আইনের দিকটি দেখার জন্য একটি কমিটি তৈরির
নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সমলিঙ্গের মানুষের
অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাতে কোনো বৈষম্য না হয়, সে বিষয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। সেখানে বলা হয়েছে, সমলিঙ্গের কোনো যুগলকে থানায় ডেকে
বা বাড়িতে গিয়ে হেনস্থা করতে পারবে না পুলিশ। তাদের লিঙ্গ বিষয়ক কোনো প্রশ্ন তোলা
যাবে না।
সমলিঙ্গের যুগল যাতে স্বাধীনভাবে থাকতে পারেন, তাদের বাড়ি পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাষ্ট্র ব্যক্তিকে যে যে অধিকার দেয়, সমলিঙ্গের মানুষদেরও সেই সেই অধিকার পাওয়ার প্রাপ্য। এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। সেই অধিকার রক্ষা করতে হবে রাষ্ট্রকে।
আরও পড়ুন>> গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ৭১
পার্লামেন্টের
একটি বিশেষ কমিটি এর আইনি দিকগুলি বিচার করবে। সেই কমিটিতে কারা থাকবেন, তা-ও নির্দিষ্ট
করে দিয়েছেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
দশ দিন ধরে
আদালত সমলিঙ্গের বিয়ে সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুনেছে। এবিষয়ে সমস্ত রাজ্যে যে মামলাগুলি
উঠেছিল, সেই সবকটি মামলার একত্র শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও
এই মামলায় ছিল বেশ কয়েকটি রাজ্য। এর মধ্যে আসাম, রাজস্থান এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার এর বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার আদালতকে জানিয়েছে,
ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সেখানে দুই বিষম লিঙ্গের
ব্যক্তির মধ্যেই বৈধ প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এটাই সামাজিক বিধি।
রায় পড়ার সময়
এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেছেন, বিয়ে কোনো অনঢ় প্রতিষ্ঠন
নয়। এর বিবর্তন হয়। অতীতেও হয়েছে। সমলিঙ্গের সম্পর্ক সামাজিক সম্পর্ক। একেও একইরকম
গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমলিঙ্গের অধিকারের
বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন বিচারপতি।