সারাদেশে কৃষি
ও কৃষকের মান উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হলেও সেই প্লটের বরাদ্ধকৃত
বাজেটের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান
ও গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে। কৃষকদের দাবি নামমাত্র কৃষি উৎপাদন
সামগ্রী দিয়ে তুলে নেয়া হয় তাদের প্লট বরাদ্ধের বাজেটের টাকা। বাজেটের
তথ্য চাইলে বদলির হুমকি ও বদলি করা হয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের। আর এসব বিষয়ে
কিছুই জানেন না বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
কৃষি ও কৃষকের
মান উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হলেও সেই প্লটের টাকা আত্মসাতের
অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান এর বিরুদ্ধে। এর মাধমে
আধুনিক চাষাবাদ সম্প্রসারণে প্রদর্শনী খামারে বরাদ্ধ রাজস্ব খাতের হাজার হাজার টাকা
লোপাট করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র
জানায়, খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারি সহায়তায় কৃষি গবেষণাগারে উচ্চ
ফলনশীল জাতের খাদ্য শস্যের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এসব উচ্চ ফলনশীল জাত চাষাবাদে
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। প্রশিক্ষণ লুদ্ধ জ্ঞান
বাস্তবে প্রয়োগের জন্য কৃষকদের সংশ্লিষ্ট ফসলের প্রদর্শনী খামার স্থপানে আর্থিক সহায়তা
করা হয়। ফসল ভেদে প্রদর্শনী খামার ৫০ শতক বা ৩৩ শতক বা ২.৪৭ শতক হয়ে থাকে। প্রদর্শনী
খামারে বীজ, বিভিন্ন প্রকার সার, পরিচর্যা, পরিবহন, বীজ সংরক্ষণসহ নগদে আনুসঙ্গিক খরচ
প্রদান করে থাকে। তবে ফসল ভেদে এই খরচের হার ভিন্ন হয়ে থাকে। মেহেরপুরে সদরে দুর্নীতিবাজ
কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য প্রদত্ত সরকারি অর্থ বিভিন্ন অপকৌশলে
লোপাট করছে।
আর কৃষকরা বলছে,
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা নামমাত্র কিছু সহযোগিতা দিয়ে তুলে নেয়া হয় প্রদর্শনী প্লটের
অর্থ। তবে কখনো দেখানো হয়নি বরাদ্দের পরিমাণ বলে দাবি কৃষকের।
ট্রাইকো কম্পোস্টসার
চাষি বলেন, আমাকে টাইকো কম্পোস্টের প্রদর্শনী দিয়েছিলো। প্রদর্শনীতে উপকরণ হিসাবে
আমাকে ১০টা রিং, ১০টা ১৫মিলির টিনও ৬ খুটি এই গুলো ছিলো খুবিই নিন্মমানের যা আমাদের
কোনো কাজে আসবেনা। আমরা শুনেছিলা যে ২০ হাজার টাকা বাজেট আছে আমাদের এসব উপকরণের জন্য।
রিং গুলো উঠালে ভেঙ্গে যাচ্ছে আর টিনগুলো খুবই নিম্নমানের দিয়েছে যা আমাদের কোনো কাজে
আসবেনা একই কথা যানান ট্রাইকো কম্পোস্ট প্রদর্শনী পাওয়া খামারীরা ।
ড্রাগনচাষী
চাষীরা জানান, আমার বাণিজ্যিক ভাবে ড্রাগন
চাষ আছে। তিন বিঘা ড্রাগনচাষে প্রায় ১২ লাখ
টাকা খরচ। একদিন উপসহকারী কৃষি অফিসার আসে দেখ
আমাকে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা বলে
যাতে আমাকে কিছু সার বিষ দেওয়ার কথা বলেন। আমাকে দেড় হাজার টাকার মতো সার
দিয়েছে আর বাকিটা দেব দেব করে দিবে কিনা জানিনা। তবে যারা আওয়ামী লীগ করে তারা ছাড়া
কেউ কৃষি অফিস থেকে সুবিধা পাইনি। এমনকি যাদের আবাদ নেই তারা বেশি পেয়েছে । যারা সাধারণ
চাষী তারা কেউ পাইনি বলেই চলে। কৃষি অফিস থেকে
কোনো ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়নি।
উপসহকারী কৃষি
কর্মকর্তা জানান, কখনো দেখানো হয় না বরাদ্দের চিঠি, শুধুমাত্র আমরা সিলেক্ট করে দেই
কৃষক তালিকা। বরাদ্দের তথ্য চাওয়া হলে বদলি
ও দেওয়া হয় বদলির হুমকি বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
মেহেরপুর সদর
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি প্রদর্শনী
প্লট ও এর বরাদ্দের তথ্য ।
মেহেরপুর জেলা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, বরাদ্দের বিষয়ে
কোন কিছু জানানেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।