ভারতের বেঙ্গালুরুতে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ ও নির্যাতনের
সেই আলোচিত ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের একটি দলের কাছে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে
ভারত।তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের
একটি দল তাদের জিম্মায় বুঝে নিয়েছে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে। এখন তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে
রওনা হয়েছে দলটি। রোববার হাসপাতালে তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। তাকে পাচার ও নির্যাতনের
বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আদালতে হাজির করা হবে।
এদিকে গতকাল (শুক্রবার) ওই ঘটনায় ৯ বাংলাদেশিকে
দোষী সাব্যস্ত করে শুক্রবার তাদের ৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছে ভারতের
বেঙ্গালুরুর একটি আদালত।
বেঙ্গালুরুর আদালত ওই ধর্ষণ মামলার রায়ে চাঁদ মিয়া,
মোহাম্মদ রিফাকদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ,
মোহাম্মদ ডালিম ও আজিম হোসেনসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া তানিয়া খানকে
২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামাল নামে দুজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আরও দুই নারী
আসামিকে ৯ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ভুক্তভোগীসহ অভিযুক্তরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা
ভারতে প্রবেশ করে বেঙ্গালুরুতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন। মামলায় এক অভিযুক্ত ছিলেন
ভারতীয়, তবে তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই
মামলার অভিযোগপত্র দাখিল এবং ৩ মাসে বিচার শেষ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মে মাসে ওই তরুণীকে বিবস্ত্র
করে তার ওপর চালানো বর্বর যৌন নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওর
সূত্র ধরেই তদন্তে নামে পুলিশ। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ওই ভিডিওর উৎস খুঁজতে
গিয়ে আসাম পুলিশ জানতে পারে, নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিরা বেঙ্গালুরুতে আছেন। তারপর সেই
তথ্য কর্ণাটক পুলিশকে সরবরাহ করে তারা। পরে বেঙ্গালুরু পুলিশ ওই ভিডিওর সূত্র ধরে ছয়জনকে
গ্রেফতার করে। পরদিন সকালে তাদের নিয়ে ফের অভিযানে যায় পুলিশ। পালানোর চেষ্টার সময়
দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলেও জানিয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন- ঢাকার
মগবাজারের তরুণ রিফাজুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক বাবু ও তার সহযোগী সাগর।