উন্মাদনার আরেক নাম ‘বিটিএস আর্মি’। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ব্যান্ডটি তাদের জনপ্রিয়তার জাল বিছিয়ে রেখেছে বিশ্বজুড়ে। দুদিন আগেও অনুরাগীরা তাদের সদ্য প্রকাশিত গানের দোলায় দুলছিলেন। তবে এই মুহূর্তে মন ভালো নেই তাদের। কেননা আর একসঙ্গে দেখা যাবে না বিটিএসের সদস্যদের। ভেঙে যাচ্ছে ব্যান্ডটি। গত মঙ্গলবার ব্যান্ডটির বার্ষিক ‘ফিসটা’ ডিনারে এমন মন খারাপ করা ঘোষণা দেন বিটিএসের অন্যতম সদস্য আরএম। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় বিটিএসকে অন্য ব্যান্ডদের চেয়ে আলাদা ভেবেছি। কিন্তু কে-পপের আদর্শগত সমস্যা হলো, এটি আপনাকে পরিণত হওয়ার সুযোগ দেবে না। আপনাকে গান চালিয়ে যেতে হবে এবং কিছু না কিছু করতে হবে।’
এ সময় ব্যান্ডটির ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে জানানো হয়, সদস্যরা নিজদের একক ক্যারিয়ারের দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছেন। সে কারণেই আলাদা হতে হচ্ছে তাদের। ব্যান্ডটির আরেক সদস্য জিমিনের বক্তব্যেও উঠে এসেছে এমনটা। তিনি অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখন থেকে আমাদের নতুন ভাবনা শুরু হলো। কী ধরনের শিল্পী হিসেবে ভক্তরা আমাদের মনের রাখবেন সেটাই এখন ভাববার বিষয়।’ ব্যান্ডটির অন্য এক সদস্য সুগাও এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তার কণ্ঠেও শোনা গেছে ভাঙনের গান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখন আলাদা হয়ে যাব।’
বার্ষিক সেই ডিনারে বিটিএস সদস্যদের চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত। বোঝা যাচ্ছিল, দীর্ঘ নয় বছরের এই পথচলা থেমে যাওয়ার ভারটা তাদের নিতে কষ্ট হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে আবার একসঙ্গে দেখা যাবে তাদের— এমন আশা ব্যক্ত করে ব্যান্ডটির সদস্য জাংকুক বলেন, ‘প্রতিজ্ঞা করছি অবশ্যই কোনো না কোনো সময় এখনকার চেয়ে পরিণত হয়ে ফিরে আসব আমরা।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে সুগাও জানান, তাদের এই বিচ্ছেদের অর্থ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যান্ড ভেঙে যাওয়া নয়।
এদিকে এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে ব্যান্ডটির প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছিল সংবাদমাধ্যম এএফপি। কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সাত সদস্য বিশিষ্ট বিটিএস আত্মপ্রকাশ করে ২০১৩ সালে। খুব দ্রুত সময়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করে তারা। বিটলসের পর তারা হয়ে ওঠে সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় ব্যান্ড। ১০ জুন মুক্তি পেয়েছে তাদের নতুন গান ‘ইয়েট টু কাম ’। গানটির জয়যাত্রা অব্যহত থাকতেই নিজেদের যাত্রা থামিয়ে দিল ব্যান্ডটির সদস্যরা।