চুয়াডাঙ্গা শহরের রেল বাজারের প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে রেল ওভারপাসের দৃশ্যমান নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে রেল বাজারের প্রধান সড়কের যানজটের দুর্ভোগ থাকবে না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই দুর্ভোগ নিরোসন হচ্ছে। এই উড়াল সড়কে পাল্টে যাবে চুয়াডাঙ্গার চিত্র।
গত বুধবার বিকাল ৫টা বাজে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি চলন্ত ট্রেন চুয়াডাঙ্গা শহরের রেল বাজারের প্রধান সড়কের রেললাইনের ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে। এই ভাবে প্রতিদিন অন্তত ২০ জোড়া ট্রেন যাতায়াতের কারণে রেলগেইটটি অন্তত ৪০বার বন্ধ হওয়ায় ছোটবড় হাজারো যানবাহন আটকা পড়ে থাকে। এতে রেললাইনের দুপাশে দাড়িয়ে থাকে হাজারো গাড়ি আর বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণির মানুষ। এরা সকলেই দুপাশের রেলগেটে আটকে থাকে। এতে প্রধান সড়কের দুপাড়ে সৃষ্টি হয় মহাযানজট। এই রকম চিত্র শুধু আজ কালের না। এই চিত্র দশকের পর দশক ধরে হয়ে আসছে। দীর্ঘ যানজটের কারণে শহর স্থবির হয়ে পড়ে প্রতিনিয়ত। এমন যানজট নিরসনের জন্য। এখানে একটি ওভারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাই গত ১২ই আগস্ট শনিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন উপস্থিত থেকে এ কাজের দুপাশের ফলক উদ্বোধন করেন। এই রেল ওভার পাস নির্মাণের কাজে ৭৫ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয় ধরে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মানের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এই ধারাবাহিকায় এখন চুয়াডাঙ্গার মানুষের হাজার বার চাওয়া স্বপ্ন এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে। এখন রেল ওভারপাস নির্মাণের কাজের এক মহা কর্মযজ্ঞ চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাস্তবায়নে এ ওভারপাসের দৈর্ঘ্য ৪১৯ মিটার ও প্রস্থ ১০.২৫ মিটার। এই ওভারপাসের স্পেন বসবে ১৩ টি। ওভারপাসটি নির্মাণকাল সময় আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত। তারপরও এই উড়াল সড়ক দিয়ে শুরু হবে যাতায়াত।
রেলরাইনের এই ওভারপাসটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেপুরের যোগাযোগের ব্যাবস্থা সম্প্রসারণ আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে পাল্টে যাবে চুয়াডাঙ্গার সড়ক পথে ব্যবসা বাণিজ্যের চিত্র। যাতায়েত থেকে শুরু করে সবধরনের পরিবহনের চলাচলের সুবিধা পাবে দ্বিগুন। তবে একদিকে এই ওভারপাস নির্মাণ হচ্ছে। এই ওভারপাস নির্মাণের কাজ শেষ হলে চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নের রোল মডেলে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। এতে চুয়াডাঙ্গার রেল বাজারের প্রধান সড়ক থেকে দেখা যাবে স্বপ্নের উড়াল সড়ক।
চুয়াডাঙ্গা এক এনজিও কর্মী কানিজ সুলতানা অফিস শেষে বাড়ি ফিরতে যেয়ে আটকে আছে রেল গেইটে। এসময় কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস যাওয়ার সমশ ও ফেরার সময় পড়তে যানজটের কবলে। এতে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক রেল গেইট পড়াতে সবকিছুর সমস্যায় সম্মুক্ষিণ হতে হয়। তবে এই দুর্ভোগ কাটাতে সরকার ভালো উদ্দ্যোগ নিচ্ছে। এতে আমরা সবাই যাতায়েত থেকে শুরু করে সব ধরনের সুবিধা পাব। এতে আমাদের চুয়াডাঙ্গা হবে উন্নয়নের রোল মডেল।
অপর একজন শরিফ উদ্দিন হাসু বলেন, এই রেল ওভারপাস নির্মাণে চুয়াডাঙ্গার যোগাযোগ ব্যাবস্থা আরো বৃদ্ধি পাবে। যাতায়েত সুবিধা পাব সবাই। আর যানজটে পড়ে থাকতে হবে না। এবার আমরা উড়াল সড়ক দিয়ে চলাচল করবো। এই দুর্ভোগ নিরোসনের জন্য যে ভালো কাজটি তা প্রশংসনীয়। এই জনগণের ভালো জন্য কাজ। রেল ওভারপাস নির্মাণ কাজের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের সাধুবাধ জানায়। এতে বোঝা যাচ্চে আগামী চুয়াডাঙ্গা হবে স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, চুয়াডাঙ্গাবাসীর দীর্ঘ চাওয়া একটি রেল ওভারপাস নির্মাণ। তাই এখন এই রেল ওভারপাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে রেল লাইনের ওপর দিয়ে উড়াল সড়ক হবে। এই নির্মাণ কাজটি শেষ হলে যাতায়াতসহ সব ধরনের সুবিধা ভোগ করবে জেলাবাসী। এতে আর যানজট থাকবে না। এতে আগামী চুয়াডাঙ্গা হবে উন্নয়নের এক রোল মডেলের সড়ক। এই কাজের নির্মাণ শেষ হলে এ জেলার অর্থনেতিক অবস্থা আরো উন্নত হবে। এতে চুয়াডাঙ্গার দৃশ্যপট পাল্টে যাবে। এতে করে আর যানজটের দুর্ভোগ আর থাকবে না। এতে মানুষ খুব সহজে সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।