শরতের কাশফুল,
ঢাকের বাদ্য আর প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দূর্গার আগমনী
বার্তা। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠির মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে
বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ২৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি
ঘটবে। এবার দেবী আসবেন এবং ফিরে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে। এবছর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়
১৪৭ টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
পূজোর আর মাত্র
কয়েকদিন বাকি। তাই উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দিনরাত প্রতিমা তৈরি ও নানান রঙ-তুলির
আঁচরে শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় প্রতিমাকে সাজানো হচ্ছে অপরূপ রূপে। ঘুম নেই প্রতিমা
শিল্পীদের। দিনরাত রঙের আঁচড় আর মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত তারা। সেই
সাথে চলছে পূজা মণ্ডপগুলোতে বাহারি সাজসজ্জার কাজ।
অপরদিকে দুর্গোৎসব
উপলক্ষে পরিবার পরিজনের জন্য কেনা-কাটায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
ঘরে বাইরে পূজাকে ঘিরে চলছে ব্যস্ততা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম উপজেলার পৌরশহরসহ
আশপাশের বাজারে। শারদীয় দুর্গা উৎসবকে কেন্দ্র করে চারপাশে চলছে এখন উৎসবের আমেজ।
প্রতিমা তৈরির কারিগর সুর্য পাল জানান, এক-একটি মণ্ডপে চার-পাঁচজন কারিগর মিলে প্রতিমা তৈরির কাজ করছে। পঞ্চমীর রাতের আগেই প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। তাই রাত জেগে কাজ করতে হয় তাদের।
তারা আরও জানান,
বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িত আছেন তারা। বাপ দাদার কাছ থেকে শেখা কাদা-মাটি আর খড় দিয়ে
কিভাবে প্রতিমা তৈরি করতে হয়। বছরের এই সময়ে কাজের চাপ বেশি। এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে
তাদের সময় লাগে ১ সপ্তাহ থেকে ২ সপ্তাহ। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিতে মজুরি নিয়ে অসন্তোষ
জানান তারা।
পূজা আয়োজকরা
জানান, সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায়, আগের বছরগুলোর চেয়ে প্রতিমা গড়ার মজুরি যেমন বেড়েছে,
সেইসাথে বেড়েছে পূজার অন্যান্য খরচ। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম
খেতে হচ্ছে তাদের। এরপরও থেমে নেই তাদের আয়োজন। রকমারী আলোকসজ্জায় সাজানো হচ্ছে পুজা
মন্ডপ ও তার আশপাশ এলাকা। সব মিলে উৎসবের রংয়ে সাজছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা।
উপজেলা পূজা
উদযাপন পরিষদের আহবায়ক জিতেন চন্দ্র সরকার বলেন, এবার উপজেলায় ১৪৭ টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব
অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার পূজা আরো জাঁকজমকপূর্ণ হবে। এ জন্য মন্দিরের বিভিন্ন
সাজসজ্জার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, দূর্গা পূজাকে ঘিরে পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
থাকবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে পোশাকে ও সাদা-পোশাকে পুলিশসহ আনসার সদস্যরা ডিউটিতে থাকবে।
এছাড়া পুলিশের মোবাইল টিম সার্বক্ষনিক কাজ করবে।