মনোনয়নপত্রে সরকারি কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে
থাকার তথ্য গোপন করে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আদালতের যে আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন,
তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে খরচা হিসেবে এক লাখ টাকা ৭ দিনের মধ্যে সুপ্রিম
কোর্টের ডে কেয়ার সেন্টারে জমা দিতে বলা হয়।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে চাকরিরত সালাউদ্দিনের
বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের
সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আদালত জানান, স্বাস্থ্য বিভাগে
চাকরি করার তথ্য গোপন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন (সালাউদ্দিন), যা বড় ধরনের তথ্য গোপন।
ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবেও তার নাম রয়েছে। এত সাংঘাতিক ধরনের ফ্রড (প্রতারণা)।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনজীবী জানান,
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন সালাউদ্দিন। তবে ১ শতাংশ ভোটারের তথ্যে
অসংগতি থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি ইসিতে আপিল করলে তা নামঞ্জুর
হয়। এর বৈধতা নিয়ে এবং প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট করলে তা-ও খারিজ হয়। এর
বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন তিনি। শুনানি নিয়ে ২১ ডিসেম্বর চেম্বার আদালত তার
মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং
কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এ আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ২৭ ডিসেম্বর ইসি আবেদন করে। ২৮ ডিসেম্বর
আবেদনটি চেম্বার আদালতে ওঠে।
ওইদিন শুনানিতে ইসির আইনজীবী
খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, সালাউদ্দিন স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে ২০১২ সাল থেকে সীতাকুণ্ড
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করে আসছেন। অথচ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের ব্যক্তিগত
তথ্যে তিনি পেশা ব্যবসা (ওষুধ) উল্লেখ করেছেন। হলফনামায়ও পেশা ব্যবসা (ওষুধ) বলে উল্লেখ
করেছেন। সালাউদ্দিন যে সরকারি চাকরিজীবী, সে বিষয় তিনি গোপন করেছেন। এমনকি ভোট গ্রহণ
কর্মকর্তার তালিকায় তার (সালাউদ্দিন) নাম রয়েছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে। সংবিধান ও সরকারি
কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না।
২৮ ডিসেম্বর সালাউদ্দিনের পক্ষে আবেদন
দায়েরকারী অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আবদুল হাই ভূঁইয়া আদালতে উপস্থিত হয়ে এক দিন সময়ের
আরজি জানান। আদালত এক দিন সময় মঞ্জুর করেন। আবদুল হাইকে অভিযোগের বিষয়ে সালাউদ্দিনের
সঙ্গে কথা বলতে বলেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় এদিন বিষয়টি ওঠে।
আদালতে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আবদুল হাই
ভূঁইয়া বলেন, তার মক্কেলের পক্ষ থেকে তাকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। পরে আদালত আদেশ
দেন। আজ ইসির পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।