ভারী বর্ষণ ও উজানে থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়ে পড়েছে জেলার রাজারহাট উপজেলার কয়েকটি চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে আমন আবাদসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন এসব এলাকায় বসবাসরত মানুষজন।
উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ গ্রামের কৃষক আতিয়ার জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যে চর খিতাবখাঁ গ্রামের ৩০-৪০টি বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। প্লাবিত বাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন তাঁরা।
ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, 'আমার ওয়ার্ডের মাঝের চর, নামাভরত, আমবাইক্যা সহ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে তিস্তার পানি ঢুকছে। এছাড়াও ওয়ার্ডের বাধের রাস্তা সংলগ্ন বেশ কিছু বাড়ীতে পানি প্রবেশ করেছে।'
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, জেলায় টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ৩৩৫ হেক্টর জমির আমন ও ৫০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই, পানি নেমে গেলে সবঠিক হয়ে যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানিও। আসা করা হচ্ছে ২-৩ দিনের মধ্যে নদ নদীর পানি কমতে শুরু করবে। তবে এই মুহূর্তে বড় ধরনের বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।