আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম

তিনি ফিরে এলেন অন্ধকারে আলোর দিশারি হয়ে

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শ ম রেজাউল করিম

Image

তিনি ফিরে এসেছেন দিকভ্রান্ত এক জাতির ক্যাপ্টেন হয়ে। ফিরে এসেছেন ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ বৈরি সময়ে একমাত্র কান্ডারি হয়ে। এসেছেন অন্ধকারে আলোর দিশারি হয়ে। পিতা-মাতা, ভাই ও আত্মীয়-পরিজন হারিয়ে শোকে বিহ্বল থাকার সময়টুকুও তিনি পাননি। স্বদেশের মাটি ও মানুষের অমোঘ ডাক সেদিন উপেক্ষার উপায় জানা ছিল না তাঁর। দিনটি ছিল ১৭ মে ১৯৮১। রোববার। আর দশটি দিনের মতো রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল না সে দিনটি। একদিকে ঝড়-বৃষ্টিতে বৈরী প্রকৃতি আর অপরদিকে স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু ও ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র।

এসব কিছুই উপেক্ষা করে তিনি ফিরলেন বীরকন্যা হয়ে বাংলার মাটিতে। তিনি ইতিহাসের কালজয়ী মহামানবের কন্যা, তিনি বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সংকল্পে তিনি অবিচল। প্রগাঢ় দেশপ্রেম আর নির্ভিক চিত্ত তাঁকে পরিণত করেছে দুর্গতদের কণ্ঠস্বরে। নির্যাতিত মানুষের অধিকারের প্রশ্নে তিনি আপসহীন। দৃঢ়তা, আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতায় তিনি অনন্য। তিনি শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা সেদিন বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছেন কোটি বাঙালির আশার প্রদীপ হয়ে। তিনি এসেছেন পিতার পথে পথ মিলিয়ে বাঙালি জাতিকে আলোর ঠিকানায় পৌঁছে দিতে। ১৭ মে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দর পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। কী ব্যাকুল প্রতীক্ষা মানুষের! ঠিক যেন বঙ্গবন্ধু ফিরছেন স্বদেশের মাটিতে। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনাকে শুধু একনজর দেখার জন্য ছুটে আসা জনতার কণ্ঠে সেদিন ধ্বনিত হচ্ছিল, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে; শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম

দিশেহারা বাঙালির দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ছয় বছরের নির্বাসন শেষে স্বদেশের মাটিতে পা রাখলেন শেখ হাসিনা। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। দেশের মানুষের ভালোাবাসায় আপ্লুত বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, আমার আর হারানোর কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই। তিনি সেদিন এও বলেছিলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আমি আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা তখন ছোট বোন শেখ রেহানা ও দুই সন্তানসহ স্বামীর কর্মস্থল পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন বিধায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। পশ্চিম জার্মানি থেকে সেই সময় ভারত সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন শেখ হাসিনার স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া।

২৫ আগস্ট সকালে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটযোগে দিল্লি পৌঁছান শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, ওয়াজেদ মিয়া এবং তাদের দুই সন্তান। বিমানবন্দর থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির ডিফেন্স কলোনির একটি বাসায়। সেখানে কারও সঙ্গে যোগাযোগ এবং পরিচয় না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাদের। শুরু হয় তাঁদের কঠিন নির্বাসিত জীবন।

পরে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশে গণতন্ত্র ও প্রগতিশীল রাজনীতি ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের হৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে দুই শিশুসন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ছোট বোন শেখ রেহানার কাছে রেখে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা।

অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! যার পিতা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি, তাঁর স্বদেশে ফেরা ছিল কণ্টকাকীর্ণ। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তিনি সেদিন দেশে ফিরেছিলেন মাটির টানে আর মানুষের মায়ায়। সে সময় ক্ষমতাসীন জিয়াউর রহমান ও তার দোসররা জাতির পিতার কন্যাকে দেশে ফিরতে বাধা দেওয়ার সব ধরনের চেষ্টাই করেছিল। এমনকি তাঁর দেশে ফেরা ঠেকাতে শেখ হাসিনার আগমন প্রতিরোধ কমিটি গঠন হয়েছে, কুরুচিপূর্ণ লিফলেট-পোস্টার বিতরণ করা হয়েছে। এতে অবশ্য বঙ্গবন্ধু কন্যার মনোবল এতটুকু টলানো যায়নি।

সাহসী সংকল্প আর জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরতে এতটুকু পিছপা হননি। তবে দেশে ফিরে এক বৃহৎ শূন্যতায় নিজেকে আবিষ্কার করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তাঁর ঘর নেই, ঘরের আপনজনও কেউ নেই। দেশে ফেরার আবেগসিক্ত প্রতিক্রিয়া বঙ্গবন্ধু কন্যা নিজের লেখা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন ঠিক এভাবে, আমার দুর্ভাগ্য, সব হারিয়ে আমি বাংলাদেশে ফিরেছিলাম। লক্ষ মানুষের স্নেহ-আশীর্বাদে আমি সিক্ত হই প্রতিনিয়ত। কিন্তু যাদের রেখে গিয়েছিলাম দেশ ছাড়ার সময়, আমার সেই অতি পরিচিত মুখগুলি আর দেখতে পাই না। হারানোর এক অসহ্য বেদনার ভার নিয়ে আমাকে দেশে ফিরতে হয়েছিল (ড. আবদুল মতিন চৌধুরী: আমার স্মৃতিতে ভাস্বর যে নাম, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, পৃ: ৭৪)।

দেশে ফেরার পর জাতির পিতার কন্যার থাকার জায়গাটুকুও দেওয়া হয়নি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটি ছিল জিয়াউর রহমান সরকারের দখলে। ১৭ মে সন্ধ্যায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের জনসভা শেষে সে বাড়িতে থাকা দূরের কথা, শ্রদ্ধা নিবেদন ও মিলাদ পড়ার জন্য পর্যন্ত তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি। পরের দিনগুলো তাঁর কেটেছিল অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতো। আজ এখানে তো কাল ওখানে। তবু দমে যাননি বঙ্গবন্ধু কন্যা। ১৯৮৩ সালের ২৪ মার্চ সামরিক শাসন জারির দুদিন পর স্বাধীনতা দিবসে একমাত্র শেখ হাসিনাই সাভার স্মৃতিসৌধে গিয়ে বলেছিলেন, আমি সামরিক শাসন মানি না, মানবো না। বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবোই করবো

রাজনীতির হাতেখড়ি যার খুব ছোটবেলা থেকে, ছাত্ররাজনীতিতে যার বর্ণাঢ্য বিচরণ আর ধমনিতে যার বঙ্গবন্ধুর রক্ত, তিনি দেশে ফিরে রাজনীতির মূলধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হলেন। লড়াই শুরু করলেন জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর রাজপথে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নেতৃত্বের কোন্দল আর ষড়যন্ত্রে বিভাজিত দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার চ্যালেঞ্জেও তিনি সফল হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরে ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২১ বছর পর পথ হারানো বাংলাদেশ আবার সঠিক পথে চলতে শুরু করে। প্রশাসন ও অন্য স্তরে তখন স্বাধীনতাবিরোধী ও আওয়ামী বিরোধীদের উপস্থিতি সুস্পষ্ট। এমন জঞ্জাল নিয়েই সরকারের দায়িত্ব নিতে হয় তাঁকে।

দক্ষ নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় তখন তিনি সব সামলে নেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েই দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বণ্টনে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি করেন। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে কয়েক দশকের চলমান চরম সংকট নিরসন করে পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে ২০০৮, ২০১৪ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সরকারের টানা তিন মেয়াদে বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। তাঁর রাষ্ট্র পরিচালনার মুন্সিয়ানায় সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানব উন্নয়নসহ প্রায় সব সূচকে পাকিস্তানকে অতিক্রমসহ অনেক সূচকে বিশ্বের অনেক দেশকে আমরা ছাড়িয়ে গেছি। মাথাপিছু আয়, রপ্তানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। এটিই অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অনবদ্য সাফল্য। তাঁর মতো নেতৃত্ব পেয়েছি বলেই সব প্রতিকূলতা জয় করে আজ আমরা উন্নয়নশীল বিশ্বে পদার্পণ করছি।

উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে বিনির্মাণের পথে দ্রুতলয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এ দেশের মানুষ আজ সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারছেন। গৃহহীন ও আশ্রয়হীন মানুষ বিনামূল্যে ঘর পাচ্ছেন। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম, যার মাথাপিছু জিডিপি আঞ্চলিক প্রতিবেশীর চেয়ে অনেক বেশি।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৯ বিলিয়ন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে বেড়েছে ৭৩ বছরে এবং সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। খাদ্য উৎপাদন, দারিদ্র্য হ্রাস, উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ প্রশমনসহ আর্থ-সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায়।

স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর একের পর এক চ্যালেঞ্জ জয় করে বীরদর্পে এগিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অন্তত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও দমে যাননি তিনি। সব বাধা-বিপত্তি আর দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র পেছনে ফেলে শেখ হাসিনা অন্ধকার থেকে আলোর পথে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় দেশকে শামিল করেছেন। যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক, লক্ষ্য যার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ, তার গতি রোধ করার সাধ্য কারও নেই।

শেখ হাসিনা শত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও অবিচল থেকেছেন, হযেছেন বিজয়ী। এটি বিশ্বের বিস্ময়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনা গোটা বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব পরিমণ্ডলে দুর্গতদের কণ্ঠস্বর, তিনি প্রাচ্যের নতুন তারকা, তিনি মানবতার জননী, তিনি বিশ্বের অন্যতম সৎ ও পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী, তিনি বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে অনুপ্রেরণাদায়ী, অনুসরণীয়। একই সাথে বাংলাদেশে এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিনি অনিবার্য।

জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনর্জন্ম দিয়েছেন। তিনি ফিরে এসে বাঙালি জাতির মুক্তির স্বপ্ন যেমন দেখেছেন, তেমনি বাঙালিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছেন। তাঁর আন্দোলন-সংগ্রামের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় স্বৈরতন্ত্রের অবসান শেষে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন হয়েছে।

তিনি এসেছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ পুনরায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে; স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের দর্প চূর্ণ হয়েছে। তাঁর মতো অকুতোভয় রাজনীতিক ও মানবিক রাষ্ট্রনায়ক বিশ্বে বিরল। নীতি ও আদর্শে বঙ্গবন্ধুর মতোই দৃঢ় ও সাহসী রাজনীতিক শেখ হাসিনা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন।

উন্নত, আধুনিক, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু কন্যা দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ প্রায় ৪২ বছর দলের প্রধান এবং ২০ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশে না ফিরলে বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। একজন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গল্প তাই এভাবেই লেখা যায়, অতঃপর তিনি এলেন/তিনি এলেন পিতার পথে পথ মিলিয়ে/আলোর পথ খুঁজে দিতে/তিনি এলেন/রুদ্ধ শেকল ভেঙে, গলিয়ে/জাতিকে আপন করে পেতে।

লেখক: শ ম রেজাউল করিম এমপি

মন্ত্রী , মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ।


আরও খবর



আইপিএলের পর্দা উঠছে আজ, যা থাকছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৭তম আসরের পর্দা উঠছে আজ। এই টুর্নামেন্ট শুরু হওয়া মানেই ক্রিকেটপ্রেমীরা একটানা দুই মাস ভরপুর বিনোদনের অপেক্ষায় থাকেন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস এবং ভিরাট কোহলির দল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞ।

শুক্রবার (২২ মার্চ) এম. এ. চিদম্বরম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেছে চেন্নাই। রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে নতুন অধিনায়ক বানিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এতে মহেন্দ্র সিং ধোনির দীর্ঘ নেতৃত্বের অবসান হলো।

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ ঘিরেও একটা বাড়তি আগ্রহ থাকে ভক্ত-অনুরাগীদের। কেননা এদিন যে দ্বিগুণ আনন্দ পাওয়া যায়। প্রথমত, টুর্নামেন্টের সূচনা। দ্বিতীয়ত থাকে জমকালো এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এবারের আইপিএলেও থাকছে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারের আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চও মাতাবেন নামী-দামী গায়ক, নায়ক ও তারকারা।

গত বারের আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছিলেন দেশটির জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং। সেবার সিএসকে বনাম গুজরাটের উদ্বোধনী ম্যাচে অরিজিতের গানের জাদুর পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল তামান্না ভাটিয়া এবং রশ্মিকা মান্ধানার অসাধারণ মন মাতানো নাচ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ  থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, এবার আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ মাতাবেন দেশটির জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক, গায়ক ও সংগীত প্রযোজক এ আর রহমান।

এছাড়াও সুরের জাদুতে দর্শকদের মুগ্ধ করবেন সনু নিগম। দুই তারকার গানের পাশাপাশি ডান্সফ্লোর মাতাতে দেখা যাবে বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার ও টাইগার শ্রফকে। শিগগিরই তাদের নতুন সিনেমা বড়ে মিয়াঁ ছোটে মিয়াঁ মুক্তি পেতে চলেছে। তার জন্য খানিকটা প্রচারও সেরে নেবেন অক্ষয়-টাইগার।

আগেরবারের মতো এবারও ১০টি দল অংশ নিচ্ছে আইপিএলে। ২২ মার্চ থেকে ভারতের ঘরোয়া টুর্নামেন্টটি শুরু হলেও সূচি প্রকাশ করা হয়েছে আংশিক। মাত্র ১৫ দিনের ২১টি ম্যাচের সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের কারণেই আংশিক সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম ২১ ম্যাচের পর আইপিএল হতে পারে ভিন্ন দেশে।


আরও খবর



টেকনাফ থেকে আবারও ৮ জনকে অপহরণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে আবারও ৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গল কাটতে ও গরু চরাতে গিয়ে তারা অপহৃত হন।

অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়া এলাকার বেলালের দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নূর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনের ছেলে ইসমাইল প্রকাশ সোনায়া (২৪), রৈক্ষং এলাকার কালা মিয়ার ছেলে ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (৩৩) এবং একই এলাকার আকবরের ছেলে ফজল কাদের (৪৫)।

অপহরণ হওয়া শাকিলের বাবা লেদু মিয়া বলেন, প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে শাকিল গরু চরাতে যায় হোয়াইক্যং বাদিবন্যা পাহাড়ে। দুপুরে অপহরণকারী আমাকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি গরিব মানুষ মাটি কেটে সংসার চালাই। টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে তারা। আমার ভাই ফরিদ আলমও অপহরণের শিকার। প্রশাসনের কাছে ভাই ও ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের দাবি জানাই। 

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, তিনি মুক্তিপণ দাবি করার বিষয়টি জানেন না।

এর আগে ২১ মার্চ ভোরে হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি হন পাঁচ কৃষক। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসেন তারা। ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদরাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করা হয়। তবে এখনও তাকে উদ্ধার করা যায়নি।

জানা যায়, গত এক বছরে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে ১০৩ জনকে অপহরণ করা হয়। তাদের মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।

নিউজ ট্যাগ: টেকনাফ

আরও খবর



ট্রেনে ঈদযাত্রা: ঘণ্টা না পেরোতেই শেষ ১৪ হাজার টিকিট

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সূচি অনুযায়ী শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৮টায় শুরু হয় ঢাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি, যেখানে আগামী ৮ এপ্রিলের জন্য বরাদ্দ ছিল ১৫ হাজার ৮৯০টি টিকিট। বিক্রি শুরুর পর ঘণ্টা না পেরোতেই শেষ হয়ে গেছে ১৪ হাজার টিকিট।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সহজ ডটকমের চিফ অপারেটিং অফিসার সন্দ্বীপ দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন আগামী ৮ এপ্রিলের জন্য পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট পেতে রেল সেবা অ্যাপে সকাল ৮ থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রথম আধা ঘণ্টাতেই হিট পড়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ। একেকটি টিকিটের জন্য গড়ে ৮০৫ জন যাত্রী চেষ্টা করছেন।

এ বছর ঢাকা থেকে ঈদযাত্রার উদ্দেশে ৪২ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দুই পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে পূর্বাঞ্চলের রেলের টিকিট বিক্রি। ঈদ উপলক্ষে এই অগ্রিম টিকিট সম্পূর্ণ অনলাইনে বিক্রি হবে।

এবার মোবাইলে ওটিপি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) আগামী ৮ এপ্রিলের ঈদযাত্রার টিকিট পাওয়া যাচ্ছে; আগামীকাল (৩০ মার্চ) পাওয়া যাবে ৯ এপ্রিলের টিকিট।


আরও খবর



অপহরণে জড়িত থাকলে আমার স্বজনরাও ছাড় পাবে না: পলক

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাজশাহী প্রতিনিধি

Image

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নাটোর সিংড়া উপজেলার অপহৃত ও নির্যাতনের শিকার চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন।

অপহৃত ও নির্যাতনে জড়িতদের প্রসঙ্গে পলক বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। এখানে মন্ত্রীর আত্মীয় স্বজন বলে কেউ ছাড় পাবে না।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রামেক হাসপাতালে দেখতে যান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে হামলায় জড়িতদের বিচারের আশ্বাস দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।

গত সোমবার বিকেলে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলের অনুসারীরা। পরে সিংড়ার সাঐল গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির দিকে।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মজিবর রহমান বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করার পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

দেলোয়ার হোসেনের ভাই এমদাদুল হক বলেন, আমার ভাইয়ের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো, কথা বলতে পারছে। তবে তার চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। চোখ মেলতে পারছে না। চোখে ঝাপসা দেখছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মন্ত্রী আমার ভাইকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন দেখা যাক মন্ত্রী কি করেন?


আরও খবর



বগুড়ায় বহুতল মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

বগুড়া শহরের বহুতল বাণিজ্যিক বিপণিবিতান মেরিনা নদী বাংলা কমপ্লেক্সে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে শহরের সাতমাথার কাছে এম এ খান লেনে অবস্থিত ভবনটির ছয়তলায় এ আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করছে।

বগুড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।


আরও খবর