তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মারজিনা আক্তার রিতু ও তার মা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে ভাড়াটে লোক দিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল'র বিরুদ্ধে। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে শহরের হলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনার সঠিক বিচার না পেলে আত্নহত্যার হুমকি দেন ছাত্রলীগের এই নেত্রী।
মারজিনা আক্তার রিতু তার নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে যা পোস্ট করেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো...
আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অন্যায়কারী ও অপরাধীদের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। নেতারাই যদি অন্যায় করতে সহযোগিতা করে তাহলে দেশের কি অবস্থা হবে। আমাদের বসভিটার জমি ও রাস্তা নিয়ে আমাদের পাশের বাড়ির আলহাজ্ব আব্দুল বাসেদ ও আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের সাথে সমস্যা হলে আমরা সঠিক সমাধান চেয়ে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পুলিশকে ডাকি। আমি ভিডিও করার সময় পুলিশের সামনেই ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেলের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া ছেলে পেলে ও আত্নীয় স্বজনের সহযোগিতায় আব্দুল বাসেদ ও আব্দুর রাজ্জাকের আত্নীয় স্বজন ও ভাড়াটিয়া লোকজন আমার হাত থেকে মোবাইল ছিড়িয়ে নিয়ে গণহারে সবাই আমাকে ও আমার মাকে ধরে মারধর করে ও কাপড় চোপড় টেনে ছিড়ে দিয়ে মানহানি করে এলাকার লোকজনের সামনে চরম অসম্মানিত, অপমানিত ও অপদস্ত করে।
আরও পড়ুন: ঢাকা আজ বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর
আমার মা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমি জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় সরকার দলীয় লোকজন হয়েও আমাদের সাথে যেখানে এ রকম অমানবিক নির্যাতন হচ্ছে সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা নিরাপদ। এলাকায় আপেল একটা আতংক যার ভয়ে কেউ কথা বলে না। কিন্তু আমরা সঠিক সমাধান চেয়ে নিজের উপর করা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অপরাধে আমাদের সাথে এ রকম অমানবিক নির্যাতন হয়।
এলাকার লোকজন ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি। বর্তমান সময়ে মানুষ একজনের বিপদে আরেকজন পাশে দাড়ায় না এ কারণে সবাই বিপদের সময় একা অসহায় হয়ে অত্যাচার ও অন্যায়ের স্বীকার হয়। আর এভাবেই অন্যায়কারীরা আরও সাহস পেয়ে যায়।
তিনি আরো লিখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আমাদের সকলের মায়ের কাছে এত বড় অন্যায়ের সঠিক বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব কারণ এত বড় অপমান আর অন্যায়ের বিচার না পেলে আমার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না। নিরব থেকে অন্যায় ও অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করে অপরাধীর সাহস বাড়িয়ে দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য ও অপরাধ করতে উৎসাহিত করে আমার মত্যুর জন্য আপনারা সবাই দায়ী থাকবেন। তাই সবাই প্লিজ বেশি করে পোস্টটা শেয়ার করেন। এখন পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক নিউজ করলো না৷
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মারজিনা আক্তার রিতু সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি সঠিক বিচার না পেলে আত্নহত্যা করব। তখন আমার পরিবার আমার লাশের বিচার চাইবে। এত বড় অপমান আর অন্যায়ের বিচার না হলে আমার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না। আমরা মামালার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
নারী নেত্রীর উপর হামলার ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিমুন সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, মারপিটের ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে নিয়মিত মামলা রজু করা হবে।