ভোক্তার অভিযোগের
ভিত্তিতে সোহরাব ফিলিং স্টেশনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) শুনানি শেষে কল্যাণপুরের এ ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, গত
সোমবার (১ আগস্ট) বেলা ১১টায় শেখ ইশতিয়াক আহমেদ কল্যাণপুরের সোহরাব ফিলিং স্টেশনে
তেল নিতে যান। সেখানে তাকে ৫০০ টাকায় কম তেল দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগে প্ল্যাকার্ড হাতে
দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। এরপর তিনি মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রতারণার শিকার হয়েছেন মর্মে
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন।
তার অভিযোগের
ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের সভাকক্ষে শুনানি অনুষ্ঠিত
হয়।
ভোক্তা অধিকার
সংরক্ষণ অধিদপ্তর তাদের শুনানিতে জানায়, অভিযোগকারীকে তেল সরবরাহকারী ইচ্ছাকৃতভাবে
এমন স্থানে দাঁড় করিয়ে তেল দিয়েছেন যে স্থান থেকে মিটার স্পষ্ট দেখা যায় না। তেল
সরবরাহকারী ১ম ধাপে ২০০ টাকার জায়গায় ২০ টাকার তেল সরবরাহ করেন। এরপর ভুলের অজুহাতে
২য় ধাপে ৩০০ টাকার তেল সরবরাহ করেন। অর্থাৎ অভিযোগকারী ৫০০ টাকার বিনিময়ে ৩২০ টাকার
তেল পেয়েছেন।
তারা জানায়, ইচ্ছাকৃতভাবে
অভিযোগকারীকে ফুয়েল ডিসপেনসারের মিটার দেখতে দেওয়া হয়নি। তেল সরবরাহকারী আকাশ মাহমুদ
২০০ টাকার জায়গায় (ভুল শুনেছেন মর্মে দাবি করেন) ২০ টাকার তেল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে
বেশি সময় নিয়ে প্রদান করেন যাতে ভোক্তা বিভ্রান্ত হয়। কারচুপি সম্পর্কে জেনে ফেললে
ভোক্তাকে তার ফুয়েল ট্যাংক পূর্ণ করে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
এসব অপরাধের জন্য
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি
বা সরবরাহ না করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা অনুৰ্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড এবং ৪৮ ধারা
অনুযায়ী, পণ্য সরবরাহকালে ভোক্তাকে প্রতিশ্রুত পরিমাপ অপেক্ষা কম পরিমাপে পণ্য সরবরাহ
করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা অনূর্ধ্ব ১ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযোগকারীকে
জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
শুনানিতে ভোক্তা
অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান, উপপরিচালক (প্রশাসন) আফরোজা
রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিচার পাওয়ায়
খুশি অভিযোগকারী শেখ ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি বলেন, আমি বিচার পেয়েছি এজন্য খুশি। আমি
চেয়েছিলাম মানুষ সচেতন হোক। প্রতিবাদ জানানোর পর গতকাল (বুধবার) একটা ফিলিং স্টেশনে
তেল নিতে যাই, সেখানে কর্তৃপক্ষ আমার কাছে ঠিক মতো তেল পেয়েছি কি না জানতে চায়। আমার
মনে হয় এটাই আমার সফলতা।
অন্যদিকে সোহরাব
ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি চার মাস হলো এই স্টেশন চালাচ্ছি।
কিন্তু এই প্রথম এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। সামান্য ভুলের কারণে এমনটা হয়েছে।
তারপরও ভুল তো ভুলই। আমরা সতর্ক হলাম। ভবিষ্যতে আর এমন কাজ হবে না প্রতিশ্রুতি দিলাম।