আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

তবে কী শ্রীলঙ্কার পথেই যাচ্ছে পাকিস্তান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিদেশি ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা নজিরবিহীন সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বেহাল এই অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর চেষ্টায় দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) আরেক দফা পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি করেছে। দেশটিতে এখন প্রতি লিটার পেট্র্রল ২৩৪, ডিজেল ২৬৩ আর কেরোসিন ২১২ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি পাকিস্তানি রুপির দরে একের পর এক পতন ঘটেছে। একই দিনে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পাকিস্তানি ২০৭ রুপির বিনিময়ে মিলছে ১ ডলার। ১৯৪৭ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানি রুপির এমন পতন কখনই দেখেনি। এমন পরিস্থিতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কার পথে রয়েছে পাকিস্তান।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান বলেছেন, পাকিস্তান যদি বর্তমান অর্থনৈতিক নীতিতে চলতে থাকে, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে আর দেরী নেই। বুধবার রাওয়ালপিণ্ডিতে পিটিআইয়ের এক অনুষ্ঠানে দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।  পাকিস্তানের রপ্তানি ১০ শতাংশ কমে গেছে। স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বেরিয়ে গেছে ৭০০ বিলিয়ন রুপি। পাকিস্তানের অর্থনীতি সম্পর্কে রেটিংও কমিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান মুডিস। দেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির পথে রয়েছে। এই দেশকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় আগাম ও স্বচ্ছ নির্বাচন।

পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের তীব্র ভর্ৎসনা করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতাসীনরা পাঞ্জাবের ২০টি আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) সহায়তা চায়। দেশের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন হতে পারে না। আমি যখনই লংমার্চের ডাক দেব, তখনই আপনাদের পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হবে। পিটিআইয়ের লং মার্চের সময় লোকজনকে লক্ষ্য করে অপরাধী, সন্ত্রাসীদের মতো গুলি করা হয়েছিল এবং আমরা ইসলামাবাদে অধিকৃত-কাশ্মিরের মতো নৃশংস দৃশ্য দেখেছি। আল্লাহ কাউকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার অনুমতি দেননি। যারা সঠিক পথে আছেন আপনাকে তাদের পাশে অথবা অন্য পক্ষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এর আগে, সাবেক এই পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল পাঞ্জাব প্রদেশ একেবারে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হামজা শেহবাজের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, পাঞ্জাবে ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে হামজা শেহবাজ অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। জনগণের দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েছে। কৃষকের ফসল হুমকিতে রয়েছে। কিন্তু মাফিয়ারা সর্বত্রই সরকারের রিটকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং ক্ষমতাসীনরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

ফের বেড়েছে জ্বালানির দাম: পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিদেশি ঋণে জর্জরিত দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার চাপ পড়ছে সাধারণ জনগণের ওপর। অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করাতে এবার জনগণের ওপর আরেক দফা বোঝা চাপিয়ে এক লাফে পেট্রলের দাম বাড়ানো হয়েছে ২৪ রুপি। এছাড়া ডিজেলের দামও ফের বেড়েছে ৫৯ রুপি। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে প্রতি লিটার পেট্রল এবং ডিজেলের দাম যথাক্রমে ২৩৪ এবং ২৬৩ রুপিতে পৌঁছেছে।

পেট্রল, ডিজেলের পাশাপাশি পাকিস্তানে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কেরোসিনের দামও। দেশটিতে বর্তমানে প্রতি লিটার কেরোসিন বিক্রি হচ্ছে ২১১ দশমিক ৪৩ রুপি করে। তবে বর্তমান এই অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ইমরান খান সরকারের নীতিকে দায়ী করেছে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার। ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল বলেছেন, ইমরানের খানের সরকারের নীতির কারণে দেশের অর্থনীতির এই বেহাল দশা।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভর্তুকি দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে পেট্রলের দাম কমিয়েছিলেন এবং বর্তমান সরকারকে সেই সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হচ্ছে। তার মতে, পাকিস্তান প্রতি লিটারে পেট্রলে ২৪ দশমিক ০৩ রুপি, ডিজেলে ৫৯ দশমিক ১৬ রুপি, কেরোসিনে ৩৯ দশমিক ৪৯ রুপি এবং লাইট ডিজেলে ৩৯ দশমিক ১৬ রুপি ভর্তুকি দিচ্ছে। গত মে মাসে জ্বালানি তেল বিক্রিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তার পরিমাণ ১২০ বিলিয়ন রুপি ছাড়িয়ে গেছে। যা বর্তমান সরকারের ব্যয়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি।

নজিরবিহীন মূল্য পতন পাকিস্তানি রুপির : এদিকে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির নজিরবিহীন দর পতন ঘটেছে। আগের সব রেকর্ড ভেঙে বৃহস্পতিবার আরেক দফা নেমেছে পাকিস্তানি রুপির মান। বর্তমানে পাকিস্তানের মুদ্রাবাজারে ২০৭ রুপির বিনিময়ে মিলছে ১ ডলার। দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডন বলছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথে পাকিস্তানের চুক্তির বিষয়ে অস্পষ্টতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপক কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মার্কিন ডলারের দর পতনের আরেকটি রেকর্ড হয়েছে।  গত মে মাস থেকে হু হু করে হ্রাস পেতে শুরু করে পাকিস্তানি রুপির মান। ১৯ মে পাকিস্তানে ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মান পৌঁছায় ২০০-তে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে নিজেদের মুদ্রার এই পরিমাণ পতন দেখেনি পাকিস্তান। তবে সেখানেই থেমে থাকেনি রুপির দরপতন, বরং দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নেমেছে মান। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত পাকিস্তানে ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মান ছিল ২০৫ দশমিক ২৫। বুধবার তা আরও নেমে পৌঁছায় ২০৬ দশমিক ৫০ রুপিতে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালের দিকে তা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ২০৭ রুপিতে পৌঁছেছে। তবে এ দিনে খোলা বাজারে ২০৮ দশমিক ৫ রুপিতে মিলেছে ১ ডলার।

মেট্টিস গ্লোবালের পরিচালক সাদ বিন নাসির বলেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ প্রকল্প স্থবির অবস্থায় থাকা, জঙ্গিবাদে অর্থায়ন পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় থাকা, চীনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপ ও জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য এই চার কারণে ব্যাপক চাপে রয়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। আর তার ফলাফলই হলো রুপির এই ধারাবাহিক দরপতন।

ডন বলছে, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের সঙ্গে একটি ঋণচুক্তি করেছিল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার। সেই চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানকে সাড়ে তিন বছর (৩৯ মাসে) কিস্তিতে ৬০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আইএমএফ। তবে তার বিপরীতে আইএমএফের কিছু শর্ত ছিল। এসবের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত ছিল যে, সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের জ্বালানি খাতে কোনো ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। কিন্তু পিটিআই সরকার ২০২১ সালের শুরুর দিকে জ্বালানিতে ভর্তুকি বিষয়ক শর্ত অমান্য করায় ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ ছাড়ের পরই সেই প্রকল্প থামিয়ে দেয় আইএমএফ। গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান ইমরান খান, নতুন প্রধানমন্ত্রী হন দেশটির সাবেক বিরোধী নেতা শেহবাজ শরিফ। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় এসেও পূর্ববর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় আইএমফ ঋণ প্রকল্পের অচলাবস্থা আর কাটেনি।

অন্যদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বালানির ওপর ভর্তুকি প্রত্যাহার করা কঠিন দেশটির সরকারের জন্য।

নিউজ ট্যাগ: শ্রীলঙ্কা

আরও খবর



১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোটগ্রহণ

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের ৮টি জেলার ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হচ্ছে আজ। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানান, রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টায় নির্ধারিত সময়ে ভোট শুরু হয়েছে, যা একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।

যেসব ইউনিয়ন পরিষদে ভোট চলছে সেগুলো হলো- লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখা, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ; দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর, ফরক্কাবাদ ও বিরল; রাজশাহীর পুঠিয়ার পুঠিয়া; পটুয়াখালী সদরের কমলাপুর ও ভুরিয়া; বরগুনার আমতলীর আমতলী; সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর; বাহ্মণবাড়িয়ার কসবার কুটি; কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, ঈদগাঁও এবং পোকখালী।

২০২২ সালে সাত ধাপে সাড়ে চার হাজার ইউপির ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে বাকি ইউপির ভোট হচ্ছে সময়ে সময়ে।

রবিবার একই সময়ে পৌরসভায় ৯টি পদে, দুটি জেলা পরিষদে এবং ৬৫টি ইউপির বিভিন্ন শূন্য পদে উপনির্বাচন হচ্ছে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছে। এ সেল নির্বাচন ভবন থেকে ভোট পর্যবেক্ষণ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাদের নিয়ে এ সেল কাজ করে।


আরও খবর



পাকিস্তানে বাস উল্টে নিহত ২০, আহত ২১

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পাকিস্তানে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে তিনজন নারীসহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২১ জন। শুক্রবার (৩ মে) ভোরে দেশটির গিলগিট-বালতিস্তানের দিয়ামার জেলার কারাকোরাম হাইওয়েতে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে জানায়, বেসরকারি সংস্থার ওই বাসটি রাওয়ালপিন্ডি থেকে গিলগিটের দিকে যাচ্ছিল। বাসটি কারাকোরাম হাইওয়েতে বাক নেওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে বাসটি উল্টে সিন্ধু নদীর তীরে পড়ে যায়।

ভয়াবহ এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের সম্ভাব্য সকল চিকিৎসা’ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।


আরও খবর



কাতারের আমির শেখ তামিম ঢাকায় আসছেন আজ

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। দুদিনের সফরে আজ তিনি বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা আসছেন। এ সফরে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকায় একটি সড়ক এবং একটি পার্কের নামাকরণ কাতারের আমিরের নামে করা হবে।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে বাংলাদেশ গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে থাকে। তবে এবার ডলার সংকটের কারণে গ্যাসের দাম এক বছর পর্যন্ত বাকি রাখতে চায় বাংলাদেশ। এই প্রস্তাব কাতারের আমিরের সফরকালে দেওয়া হবে। তার সঙ্গে মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করবেন। এটি কাতারের আমিরের এশিয়া সফরের অংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চতুর্থ মেয়াদের নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ নেতার সফরটি রাজনৈতিকভাবেও খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

সফরকালে যে ছয়টি চুক্তি সই হবে সেগুলো হলো-১. দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত ২. আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা ৩. সাগরপথে পরিবহণ ৪. উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত ৫. দুই দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি এবং ৬. যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।

এ ছাড়া যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে সেগুলো হলো-১. শ্রমশক্তি বিষয়ক ২. বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত ৩. উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা ৪. যুব ক্রীড়াক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক এবং ৫. কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

এদিকে, ঢাকায় কালশি এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক এবং ইসিবি চত্বর থেকে কালশি উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানির নামে নামকারণ করা হবে। ২৩ এপ্রিল বিকালে কাতারের আমির নিজে উভয় স্থাপনার উদ্বোধন করবেন।

রাষ্টপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ২২ ও ২৩ এপ্রিল ২০২৪ কাতারের আমির শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানি এই সফর করছেন। তিনি একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ হতে এটি প্রথম উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর।

কাতারের আমিরের সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সময়কালীন সময়ে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র। গ্যাস আমদানির বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব থেকে বাকিতে গ্যাস আমদানি করে বাংলাদেশ। কাতারের কাছ থেকেও বাকিতে গ্যাস আমদানির প্রস্তাব করা হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের মার্চ ও মে মাসে দুইবার কাতার সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় অবস্থানে উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করছেন।

সাম্প্রতিককালে কাতারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, জ্বালানি, বিমান চলাচল, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে।

কাতারের আমির আজ বিকালে বিশেষ বিমানে ঢাকায় আগমন করবেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন। এ সময় তাকে গার্ড অব অনার জানানো হবে।

আগামী ২৩ এপ্রিল সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কাতারের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তারপর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রথমে একান্ত বৈঠক এবং পরে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। রাষ্ট্রপতি সাহাবউদ্দিন বঙ্গভবনে কাতারের আমিরের সৌজন্যে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। ওই দিন সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।

কাতারের আমিরের এই সফর তার এশিয়া সফরের অংশ। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ কাতার সর্বোচ্চ গড় মাথাপিছু আয়ের দেশ। দেশটির শক্তিশালী অর্থনীতি, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও কূটনৈতিক তৎপরতা ও মধ্যস্থতার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে একটি প্রভাবশালী দেশ হিসাবে বিবেচিত।

কাতার মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার, যেখানে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কর্মরত। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ সার্বভৌম তহবিলের অধিকারী কাতার বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের উৎস হিসাবে বিবেচিত। তদুপরি কাতার বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি আমদানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কাতারের আমিরের আসন্ন সফর তাই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্যে এক বিরাট মাইলফলক।


আরও খবর



আনোয়ারায় প্রসূতি মায়েদের ভরসার নাম ‘মরিয়ম বেগম’

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মো.আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা

Image

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের ওষখাইন গ্রামের বাসিন্দা মোছাম্মৎ মরিয়ম বেগম (৬৫) এলাকায় তার ধাত্রী হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে। শুধু আশপাশেই নয়, পাশের কোনো গ্রামে মহিলার সন্তান জন্মের মুহূর্ত এলেই তার ডাক পড়ে। অথচ তার ডেলিভারির বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ নেই।

তিনি বলেন, আমার সহায়তায় কমপক্ষে দেড় শতাধিক মহিলার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। কারও মৃত্য হয়নি। অবস্থা জটিল দেখলে হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিই। তবে আগে খুব বেশি ডাক পড়ত। এখন তেমন কেউ ডাকে না। কারণ এখন বেশিরভাগ মহিলার সিজারেই বাচ্চা হয়।

শুধু এই ধাত্রী নন, তার মতো অসংখ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এমন অপ্রশিক্ষিত অনেক ধাত্রী। ফলে কমছে না নরমাল ডেলিভারি এবং মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যা। একই সঙ্গে বাড়ছে সিজার বা অস্ত্রোপচারে বাচ্চা জন্মদানের প্রবণতা।

ধাত্রী শব্দটি সবারই পরিচিত। প্রসবের দিন যত এগিয়ে আসে, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ে প্রসূতি নারীদের। অনেকে সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দিতে চাইলেও বহু নারী ধাত্রীকেই একমাত্র ভরসা হিসেবে মনে করেন। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ প্রসূতি নারী স্বাভাবিক প্রসবে বাচ্চা জন্ম দিচ্ছেন। এতে সুনাম কুড়াচ্ছেন এসব ধাত্রীরা। তবে প্রশিক্ষিত ধাত্রীর অভাবে প্রসূতি নারীসহ বাচ্চা ঝুঁকিতে থাকছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

স্থানীয় বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহজাদা সাইমুম ইফতেখার কাজিম উদ্দীন বলেন, আমাদের সমাজে ধাত্রীদের অনেক অবদান রয়েছে। এ ধরনের মানুষ সমাজের নিঃস্বার্থ উদাহরণ। তাদেরকে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় আনলে মানুষ উপকৃত হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, গত ২বছরে আনোয়ারায় কোনো ধাত্রী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তবে আনোয়ারায় কিছু প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ধাত্রী রয়েছে, তাদেরকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। তারা যদি প্রশিক্ষণ নিতে চান, তাহলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

নিউজ ট্যাগ: চট্টগ্রাম

আরও খবর



শরীরের সবচেয়ে অপরিষ্কার স্থান কোনটি?

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

শরীরের সবচেয়ে অপরিষ্কার স্থান কোনটি তা জানার আগে প্রথমে বুঝে নিতে হবে, অপরিষ্কার বলতে আসলে কী বোঝানো হয়েছে? আমাদের শরীরের এমন জায়গা আছে যেখানে অনেক জীবাণু জমে থাকে। অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় সেই অঙ্গে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জমা হয়ে থাকে, আর একারণেই সেই স্থানকে সবচেয়ে অপরিষ্কার বলা হয়। এর মানে এই নয় যে সেই স্থান পরিষ্কার করা হয় না। কিন্তু তারপরও ব্যাকটেরিয়া জমে থাকার কারণে সেটিই শরীরের সবচেয়ে অপরিষ্কার স্থান বলে মনে করা হয়।

অনেকের কাছেই মনে হতে পারে শরীরের সবচেয়ে নোংরা স্থান হলো আমাদের পা। এর কারণ হিসেবে বলতে পারেন সারাদিনে পায়েই সবচেয়ে বেশি ধুলোময়লা জমে। কেউ হয়তো বলতে পারেন, মূত্রনালীর মুখ হলো শরীরের সবচেয়ে অপরিষ্কার জায়গা। কেউ বলতে পারেন পায়ুদ্বারের কথা। কিন্তু এসব স্থান নয়, ব্যাকটেরিয়ার হিসাব করা হলে এর থেকেও অপরিষ্কার স্থান শরীরে রয়েছে।

নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, আমাদের শরীরের একটি বিশেষ অংশে অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় বেশি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। আর সেই স্থানটি হলো আমাদের নাভি। নাভিকেই শরীরের সবচেয়ে অপরিচ্ছন্ন স্থান বলা হয়ে থাকে। এখানে অনেক বেশি ব্যাকটেরিয়া জমে থাকতে পারে তাই নিয়মিত নাভির যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

শরীরের সবচেয়ে অপরিচ্ছন্ন স্থান হওয়ায় নাভি নিয়মিত ভালো করে পরিষ্কার করা জরুরি। শরীর থেকে কিংবা পোশাক থেকে নাভিতে ময়লা জমতে থাকে। সেখান থেকে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সংক্রমণও। নাভি মূলত মানব শরীরের একটি ক্ষতস্থান। শিশুর জন্ম হলে মায়ের শরীর থেকে তাকে আলাদা করার জন্যই এই ক্ষতের সৃষ্টি হয়। শিশু গর্ভে থাকার সময় এই নাভির মাধ্যমেই পুষ্টি পেয়ে থাকে।

নিয়মিত নাভি পরিষ্কার না করা হলে বের হতে পারে দুর্গন্ধ। যে কারণে নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে নাভি পরিষ্কার করা উচিত। সেইসঙ্গে আরেকটি বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। সেটি হলো, নাভিতে যখন তখন হাত দেওয়া উচিত নয়। কখনো হাত দেওয়া হলে সেই হাত না ধুয়ে কোনোকিছু খাওয়া কিংবা ধরা উচিত নয়। আবার নাভিতেও অপরিষ্কার হাত দেওয়া উচিত নয়।


আরও খবর