আজঃ বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

তাপপ্রবাহ-বন্যা বিশ্বের জন্য আগাম সংকেত

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সম্প্রতি বন্যায় বিপর্যস্ত পুরো পাকিস্তান। আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। অতীতের প্রতিটি সীমা, প্রতিটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের বন্যা। এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতি দেখেননি পাকিস্তানের মানুষ। এ পর্যন্ত দেশটিতে বন্যায় মৃত্যু ১৩শ ছাড়িয়েছে। এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি। শুধু তাই নয় বিশ্বের বেশিরভাগ অংশের মানুষ এ বছর চরম আবহাওয়া সহ্য করছে।

বছরের প্রথম দিকে, অস্ট্রেলিয়ায় নজিরবিহীন বৃষ্টি হয়েছে এবং গরমেও হাসফাঁস অবস্থা হয় সেখানকার মানুষের। গত মে মাসে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে একশ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। গ্রীষ্মের মধ্যে, পূর্ব আফ্রিকা চতুর্থ বছরের মতো খরার কবলে পড়ে। এরই মধ্যে, ইউরোপজুড়ে শহরগুলোতে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গেছে, এবং পুরো মহাদেশে নদীগুলো ৫০০ বছরের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শুকিয়ে গেছে। চীনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে ৭০ দিনের মতো তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। দেশটির বৃহত্তম দুটি লেকের পানি সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কোনো একক আবহাওয়াজনিত ঘটনাকে দায়ী করা একটি জটিল বিষয়। জটিলতার একটি অংশ যদি বলা যায় তাহলে পৃথিবীর জলবায়ুর জটিল প্রক্রিয়ার কারণে ঘটে, যেখানে ক্রমাগত উষ্ণতা বৃদ্ধি একটি অশুভ লক্ষণ, যার ওপর অনেক বিষয় নির্ভর করে। লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ওয়েনরাইট বলেছেন, প্রতিটি ঘটনাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সংমিশ্রণ

জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসগুলোর মধ্যে একটি হলো এল নিনো-সাউদার্ন অসিলেশন (এনসো)। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে ঘটে যাওয়া এনসো (ইএনএসও) চক্রের দুটি বিপরীত অবস্থা হলো এল নিনো ও লা নিনা। প্রশান্ত মহাসাগরের নিরক্ষীয় পূর্ব উপকূলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ও ১২০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে সমুদ্র ও বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রার মধ্যে অস্থিরতাকে বোঝাতে এনসো শব্দটি ব্যবহার করা হয়। লা নিনা দ্বারা এনসো অন্তর্ভুক্ত শীতল অবস্থা এবং এল নিনো দ্বারা উষ্ণ অবস্থা বোঝানো হয়। স্প্যানীশ শব্দ এল নিনো যার অর্থ ছোট্ট বালক এবং লা নিনা যার অর্থ ছোট্ট বালিকা। এল নিনো উত্তর থেকে দক্ষিণে আর লা নিনা দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হয়। পর্যায়বৃত্ত এই পরিবর্তনের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে প্রতি ৩ থেকে ৮ বছরের মাঝে দেখা যায়। যা ক্রান্তীয় অঞ্চলের চারপাশের জলবায়ু (বাইরে কিছু অঞ্চলে) দুটি চরম অবস্থার মধ্যে বিরাজ করে। এটি এক বছরে, প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত বাতাস একই দিকে উষ্ণ জলের কাছাকাছি ঠেলে দেয়। যখন বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দুর্বলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন উষ্ণ জল মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে থেকে যায়, যার ফলে বিশ্বের সেই অংশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এল নিনো বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। উন্নয়নশীল যেসব দেশ কৃষিকাজ এবং মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল, তারাই এল নিনো দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। যখন বাতাস বিশেষ করে প্রবলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উষ্ণ জল জমে থাকে, যার ফলে সেখানে বেশি বৃষ্টিপাত হয় এবং দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের গভীরতা থেকে আরও ঠান্ডা জল উঠে আসে। এটি লা নিনা নামে পরিচিত । এমন একটি অবস্থা যা গত দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে বিরাজ করছে।

লা নিনার প্রভাব পড়ে এমন অঞ্চল যার মধ্যে রয়েছে চিলি, মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব আফ্রিকার খরা, পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের উচ্চ হার। যদিও বৈশ্বিক জলবায়ুর আন্তঃসম্পর্কের অর্থ হলো এসব প্রভাব অনিবার্যভাবে আরও দূরে অনুভূত হবে, তবে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে দূরত্বের সঙ্গে কার্যকারণ শৃঙ্খলের শক্তি ম্লান হয়ে যায়। যদিও, গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট। যেহেতু এসব অবস্থা সমুদ্রের তাপকে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। পাকিস্তানে যা ঘটছে তা একাধিক কারণের বিপর্যয়মূলক সংমিশ্রণ হতে পারে। বাতাসে বেশি আর্দ্রতা (অতিরিক্ত ৭ শতাংশ), যা আরও বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়। এটি লা নিনা-প্ররোচিত বৃষ্টিপাতের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলোকে অস্বাভাবিক হারে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি আরও পরোক্ষভাবে সনাক্ত করা যেতে পারে, কারণ এ বছরের শুরুতে হিমালয়ে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে হিমবাহের গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করছে যাতে নদীগুলোর প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে। এটাও সম্ভব যে বায়ু দূষণ, যা বায়ু সঞ্চালনের ধরণকে জটিল করে তোলে, এরও ভূমিকা থাকতে পারে।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন প্রজেক্ট, জলবায়ু মডেল তৈরি করার একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক, পাকিস্তানে বন্যার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারণ জানতে গত সপ্তাহে কাজ শুরু করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছ থেকে একটি মূল্যায়ন আশা করা যায়। অন্য প্রসঙ্গ যদি ধরা হয় তাহলে সেটি হচ্ছে লা নিনা। জলবায়ু মডেলগুলোর মধ্যে লা নিনা দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রসারিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাঙ্গোলা, যা আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী লা নিনা প্রভাবে বন্যা অঞ্চলের সীমানার বাইরে অবস্থিত, এ বছর লা নিনার কারণে উচ্চ বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হয়েছে। এটি একটি ইঙ্গিত হতে পারে, ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের উইলফ্রান মাউফুমা ওকিয়া বলেছেন, সীমানা এরই মধ্যে প্রসারিত হতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ম্যাট কলিন্স বলেছেন, এ বছর তিন ধরনের প্রভাব কেবল ব্যাখ্যাতীত নয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যা ঘটবে তা জলবায়ু মডেলের পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। লা নিনার প্রভাবে এবছর আরও উষ্ণতা বাড়ছে। এ বছর মার্চে, অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের জন্য কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে প্রবাল প্রাচীর একটি গণ ব্লিচিং ইভেন্টের সম্মুখীন হয়েছে যেখানে প্রবালগুলো ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রতিক্রিয়া হিসাবে তাদের সিম্বিওটিক শৈবালকে বের করে দেয়। এটি লা নিনা বছরে সংঘটিত হওয়া প্রথম ঘটনা। এসক ঘটনা আসন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে দেশগুলোকে সতর্ক বার্তা দিচ্ছে বৈকি। বৈশ্বিক উষ্ণতা অনুমান বা ধারণাকেও বিভান্ত বরছে বলা চলে যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও জটিল হয়ে গেছে। এই বছরের লা নিনা উচ্চতর তাপমাত্রা, বর্ধিত বন্যা এবং তীব্র খরার প্রতিনিধি হতে পারে। উদ্বেগের বিষয় হলো এটি এমন একটি বিশ্বে প্রভাব ফেলবে যেখানে দুর্যোগের দ্বারা সম্পদ ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের জলবায়ু কেন্দ্রের পরিচালক মার্টেন ভ্যান অ্যালস্ট বলেছেন, আমরা এরই মধ্যে এটি খাপ খাইয়ে নিতে পারছি না এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

দায়িত্বের প্রশ্নে সবাই সমান। নির্দিষ্ট করা বিপর্যয়গুলো এনসো দ্বারা ঘটার সম্ভাবনা বেশি ছিল কি না এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিঃসন্দেহে সেই ঘটনার তীব্রতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করছে। ঐতিহাসিকভাবে দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ধনী দেশগুলো। যে সব দেশ এখন পর্যন্ত কার্বন নির্গমনের সবচেয়ে খারাপ পরিণতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ বছরের চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনাগুলো মিশরে আসন্ন কপ২৭ এর জন্য একটি বিশেষ নাটকীয় পটভূমি তৈরি করেছে। এসব দুর্যোগের জন্য দায়ভার কে বহন করবে, কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ফলে বিল কে বহন করবে তা নিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আলোচনার দরকার।

নিউজ ট্যাগ: পাকিস্তান

আরও খবর



অতিরিক্ত গরমে বিশ্বে বছরে ১৯ হাজার শ্রমজীবীর মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

অতিরিক্ত গরমে কারণে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১৮ হাজার ৯৭০ জন শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সোমবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) প্রকাশিত এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এনশিউরিং সেফটি অ্যান্ড হেলথ অ্যাট ওয়ার্ক ইন আ চেঞ্জিং ক্লাইমেট (জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা) শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সব অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা যাচ্ছে। ৩৪০ কোটি শ্রমশক্তির মধ্যে ২৪০ কোটি মানুষই কোনো না কোনোভাবে অতিরিক্ত তাপের সংস্পর্শে আসছেন। অর্থাৎ, বৈশ্বিক শ্রমশক্তির ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ অতিরিক্ত তাপের সংস্পর্শে আসছেন।

আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত গরমজনিত প্রায় সোয়া দুই কোটি পেশাগত দুর্ঘটনায় ২০ লাখের বেশি মানুষকে নানা প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বাস করতে হচ্ছে। কৃষি, নির্মাণ, পরিবহন খাতের মতো বাইরে কাজ করা কর্মীরা অতিরিক্ত গরমের কারণে মৃত্যু ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাঁরা হিটস্ট্রেস, হিটস্ট্রোক, হিটক্র্যাম্পস, র‍্যাশ, ত্বকে ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ, শ্বাসজনিত অসুস্থতা, কিডনির রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। অন্তঃসত্ত্বা নারীরা নানা জটিলতায় পড়ছেন।

প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের আরও নানা কারণে কর্মক্ষেত্রসংক্রান্ত মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে ১৬০ কোটি মানুষ আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশনের ঝুঁকিতে পড়ে। এ কারণে ত্বক ক্যানসারে বছরে মৃত্যু হয় ১৮ হাজার ৯৬০ জনের। বাইরে বা রাস্তাঘাটে কাজ করা ১৬০ কোটি মানুষ বায়ুদূষণের শিকার হয়। এর ফলে ৮ লাখ ৬০ হাজার কর্মীর মৃত্যু হয়। ৮৭ কোটির বেশি মানুষ কৃষিকাজ করেন। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা বিভিন্ন কীটনাশকের সংস্পর্শে আসেন। বছরে ৩ লাখের বেশি কর্মী কীটনাশকের বিষাক্ততার কারণে মারা যান। পরজীবী, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসবাহিত রোগের সংস্পর্শে এসে (ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ সৃষ্টিকারী) বছরে ১৫ হাজার কর্মী মারা যান। চরম আবহাওয়ায় ভূমির পরিবর্তন, খাদ্যসংকট ও বিশুদ্ধ পানির অভাবের মধ্যে কাজের নিশ্চয়তা কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে হতাশা শুরু হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চরম আবহাওয়ায় বাংলাদেশ, ভারত, লাওসসহ অনেক অঞ্চলে গত বছরের এপ্রিলে রেকর্ড পরিমাণ উচ্চ তাপমাত্রা দেখা গেছে। এ ধরনের আবহাওয়াকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, চরম আবহাওয়ায় বাংলাদেশ, ফিলিপাইন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, হতাশা, মাদকাসক্তি, আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে।

২০২০ সালের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন বলা হয়, ২০০০ সালের তুলনায় ২০২০ সালে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি কর্মী অতিরিক্ত তাপের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছেন। তাপমাত্রা ও শ্রমশক্তি বাড়ার কারণে এ সংখ্যা বেড়েছে বলে ধারণা প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে অতিরিক্ত তাপ, আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন, চরম আবহাওয়া, কর্মক্ষেত্রে বায়ুদূষণ, পরজীবী-ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসবাহিত রোগ এবং অ্যাগ্রোকেমিক্যাল (কৃষি খাতে ব্যবহার করা রাসায়নিক)এ ছয় ক্ষেত্রে কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, অতিরিক্ত তাপের পাশাপাশি বন্যা, খরার মতো চরম আবহাওয়ায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে হতাশা, উদ্বেগ, সব বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা, পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি) বা মানসিক আঘাতজনিত দুশ্চিন্তা ও মাদকাসক্তি বাড়ছে। দুর্যোগের মধ্যে জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, জেলে, কৃষি ও নির্মাণশ্রমিকদের মধ্যেও নাজুক মানসিক অবস্থা দেখা যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা যা আছে, তা যথেষ্ট নয়। অনেক দেশ তাপ থেকে সৃষ্ট রোগকে পেশাগত রোগ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। ঝুঁকির ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবীরা। ঝুঁকি থাকলেও আর্থিক কারণে তাঁরা অতিরিক্ত গরমের মধ্যেও কাজ করেন।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে আইএলওর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (ওএসএইচ) দলের প্রধান মানাল আজি বলেন, এটা এখন স্পষ্ট যে জলবায়ু পরিবর্তন কর্মীদের উল্লেখযোগ্য হারে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এই ঝুঁকিগুলোর বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় নীতি গ্রহণ ও কার্যকলাপবিষয়ক যা যা করা হয়, তার মধ্যে অবশ্যই পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


আরও খবর



সৌদি পৌঁছেছেন ১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চলতি বছর হজ পালনের উদ্দেশ্যে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব পৌঁছেছেন ১২ হাজার ৬৪৯ জন যাত্রী। গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে হজ পোর্টাল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ৮ হাজার ৯০২ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৩২টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।


আরও খবর



এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকা সেনানিবাসে নবনির্মিত আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি (এএফআইপি) ভবন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ভবনটির উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধন শেষে প্যাথলজি ঘুরে ঘুরে দেখেন। এর পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আর্মি সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম সেনা প্রাঙ্গণ’ ভবনের উদ্বোধন করেন তিনি।


আরও খবর



সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪৩.৭ ডিগ্রি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

Image

চুয়াডাঙ্গায় সোমবার (৩০ এপ্রিল) ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা ১৯৮৯ সালের পর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে রোববার (২৯ এপ্রিল) ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়।

এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগে ২০০৫ সালে ২ জুন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ২০১২ সালে ৪ জুন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা গেছে, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে চুয়াডাঙ্গায়। টানা ১৯ দিন তীব্র থেকে অতি তীব্র দাবদাহে হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ।

তিনি আরও বলেন, আপাতত দু-একদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বা একইরকম থাকবে।


আরও খবর



রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসের ধাক্কায় নিহত ২

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে বাসের ধাক্কায় পিকআপভ্যানের চালকসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- বাবুল চিশতা (৪৫) ও অপরজনের নাম কবির হোসেন। তার বয়স আনুমানিক (৫০) বছর।

রবিবার (৫ মে) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম জানান, মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাত পৌনে ২টার দিকে একটি পিকআপভ্যান ইউটার্ন নিচ্ছিল। তুহিন পরিবহনের একটি বাস তখন পিকআপভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপ ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং বাসটি পাশে খাদের পানিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা পিকআপভ্যানের ভেতর থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দুজনকে বের করে রাস্তায় রাখেন। তখন তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এসআই আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় ওই বাসটিতেও কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। তবে তারা সামান্য আহত হওয়ায় স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে যে যার বাসায় চলে গেছেন। নিহত বাবুল চিশতি পিকআপভ্যানটির চালক। মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত বাবুল চিশতির স্ত্রী নার্গিস আক্তার জানান, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সামন্তশা গ্রামে বাবুলের বাড়ি। বাবার নাম আব্দুর রশিদ আকন। পরিবার নিয়ে যাত্রাবাড়ীর মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকেন। ভাড়ায় পিকআপভ্যান চালাতেন তিনি। সোমরাত রাত ১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। বের হওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তে যাবেন। সেখান থেকে পিকআপভ্যানে করে মাছ নিয়ে কোথাও যাওয়ার কথা ছিল তার।


আরও খবর