আজঃ রবিবার ০৫ মে ২০২৪
শিরোনাম

টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটনের বিকাশ, আশীর্বাদ না অভিশাপ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দেশের অন্যতম শীতল জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর।  দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা সুনামগঞ্জের ওই হাওর বর্তমানে বাংলাদেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ, আসতে শুরু করেছে বিদেশি পর্যটকরাও। সম্ভাবনার বিশাল এই জলাধারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নৌ-পর্যটন। দেশের অন্যতম সুন্দর, বড় ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এ হাওর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির ঠিকানা। পরিযায়ী পাখি আর দেশীয় মাছের অভয়ারণ্য এ হাওর সুন্দরবনের পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট। আগে অল্প-বিস্তর মানুষের আনাগোনা হলেও গত এক দশকের মধ্যে এই হাওরে পর্যটন বিকশিত হয়েছে দ্রুতগতিতে এবং তা রুপ নিয়েছে বাণিজ্যিক আকারে। দেশের বিভিন্ন এলাকার তরুণরা হাওরের জলে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন, নামিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনচালিত অভিজাত নৌকা। এসব নৌকায় পর্যটকরা আসছেন, থাকছেন এবং রাত যাপনও করছেন। নৌকায় রান্না হচ্ছে, হাওরের মাঝে হচ্ছে উচ্চ শব্দে গান বাজনা, শীতল জলে গা ভেজাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

পর্যটনের এমন অনিয়ন্ত্রিত আনাগোনা কি জীববৈচিত্র্যের আঁধার এ হাওয়ের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ এই আলোচনা ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে । পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের আনাগোনা বাংলাদেশের পর্যটনে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। অপরদিকে পরিবেশবিদরা বলছেন হাওরে অনিয়ন্ত্রিত আনাগোনার কারণে বিশাল এই জলাভূমির জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে কমতে শুরু করেছে জলজ উদ্ভিদ, মাছ এবং পাখি। পর্যটকরা এসে হাওরে থাকছেন। পায়খানা প্রস্রাব করছেন, প্লাস্টিক ফেলছেন হাওরের জলে, নৌকার তেল মিশছে হাওরের জলে। এর ফলে মারাত্মকভাবে পরিবেশের বিপর্যয় হচ্ছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন আশীর্বাদ: টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটনের শুরুটা কিন্তু খুব বেশি দিনের নয়। দেশীয় কিছু তরুণ পর্যটক নিজ উদ্যোগ হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য নৌকা নিয়ে হাওরের বুকে ভেসে বেড়াত। তারপর আস্তে আস্তে এর ব্যাপকতা লাভ করতে শুরু করে। এখন তা বাণিজ্যিক আকার ধারণ করেছে। কয়েক হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা হয়ে উঠেছে খাতটি।

এ বিষয়ে কথা হলে ট্যুর গ্রুপ বিডির (টিজিবি) উদ্যোক্তা মো. ইমরানুল আলম জানান, বাংলাদেশ একটি পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা, তা বিগত ৫ বছরের সমৃদ্ধি খেয়াল করলেই মোটামুটি ধারনা পাওয়া যায়। এদেশের মানুষ চমক পছন্দ করে, নতুনত্ব পছন্দ করে। এরই ধারাবাহিকতায় হাওরে নৌকায় রাত্রিযাপন একটি নতুন চমক এদেশের পর্যটকদের জন্য। বিগত চার থেকে পাঁচ বছর ধরেই মানুষ ক্রমান্বয়ে এই চমক পরখ করে আসছে যা প্রতি বছরই বেড়েই চলেছে। প্রথমে শুরু হলো সাধারণ যাত্রীবাহী নৌকায় কোনোভাবে রাত্রিযাপন, সেখানে মানুষের প্রচুর আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তারপর নৌকায় এলো ভালো ওয়াশরুম, ফ্যান-লাইট, জেনারেটর। তারই ধারাবাহিকতায় আসলো নৌকার ভেতরে আরামে হাঁটাচলা করার ব্যাপারটা, সঙ্গে এলো নান্দনিকভাবে উপস্থাপন। সর্বশেষ নৌকার ভেতরে কেবিন, লবি, আইপিএসসহ রিসোর্ট সমমানের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন হাউজ বোট। প্রতিটি ধাপেই মানুষের আগ্রহের মাত্রা বেড়েই চলেছে। ছুটির দিনগুলোতে নৌকা পাওয়াই দুষ্কর হয়ে যায়। এতে স্পষ্টতই বলা যায় হাওরের পর্যটন অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সাথে এও বলা উচিত যে হাওরের পর্যটন এর ওপর ভিত্তি করে পুরো সুনামগঞ্জ জেলা এবং আশেপাশের কিছু থানারও জীবনযাত্রার মান এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়ছে। এর কারণে ক্রমান্বয়ে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে। এটিও সম্ভাবনার আরো একটি কারণ বলা যায়।

আরেক ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ন্যানেবেজ ট্রাভেলার্সের পরিচালক মো. রাফিউল হক বলেন, একদম ফিক্সড করে বলতে না পারলেও আনুমানিক বলতে পারি। টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢাকার মালিকের বোট আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ টা হবে। সুনামগঞ্জ এর স্থানীয়দের ও বোট সংখ্যাও প্রায় এর কাছাকাছি। সব মিলিয়ে ১২০ থেকে ১৫০ বোট চলে আমাদের টাঙ্গুয়ার হাওরে। প্রতিটা নৌকায় মাঝি, বাবুর্চি, গিয়ার ও কেয়ারটেকার এসব পোস্ট এ মিনিমাম চার জন করে স্টাফ থাকে। চার জন করে যদি প্রতি নৌকায় থাকে তাহলে ১৫০ নৌকায় ৬শ জন স্টাফ। এর মানে ৬শ পরিবার। ৬শ পরিবারে কয়েক হাজার মানুষ। এরা সবাই ওই খাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গুয়ার হাওরের তাহিরপুর এলাকার বাসিন্দা আজমান আলী বলেন, এখানকার মানুষ সারা বছর মুখিয়ে থাকে হাওরের পর্যটন মৌসুমের জন্য। মানুষের জীবিকা নির্বাহের জন্য এটি এখন অনেক বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক গরিব-অসহায় মানুষের পেট চলে পর্যটন মৌসুমে কাজ করে। 

যা বলছে মৎস্য বিভাগ:  পর্যটকদের এই অনিয়িন্ত্রিত আনাগোনাকে পরিবেশের জন্য হুমকি বলে মনে করছেন বিভাগ। এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মণ্ডল বলেন, আমরা দেখি অনেক সময় মাছের পেটের মধ্যে প্লাস্টিক পাওয়া যায়। এটি হচ্ছে পর্যটকদের অতিরিক্ত আনাগোনার কারণে। এ ধরনের কার্যক্রমের কারণে হাওরের বায়োডাইভারসিটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইঞ্জিনচালিত নৌকার কারণে হাওরের পানিতে তেল পড়ছে। এটাও হাওরের পানির দূষিত করছে। এর ফলে অ্যাকুয়াটিক প্ল্যানও (জলজ উদ্ভিদ) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাওরের প্রাণ বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে হাওরে প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ করতে হবে এবং মাছের জন্য অভয়াশ্রম করতে হবে। যেখানে পর্যটকরা যেতে পারবে না এবং জেলরাও মাছ ধরতে পারবে না। এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিশাল এই জলাধারকে বলা হয় দেশি মাছের আঁধার। এক জরিপে দেখা যায় এ হাওরে আছে প্রায় ১৪১ প্রজাতির বেশি স্বাদু পানির মাছ। এছাড়াও হাওরে ১৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, প্রায় ২০৮ প্রজাতির পাখি, ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটি ও ২১ প্রজাতির সাপ দেখা যায়। অস্তিত্বের হুমকিতে থাকা ২৬ প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসভূমিও ওই হাওর। 

টনক নড়েছে প্রশাসনের:  টাঙ্গুয়ার হাওর মূলত সুনামগঞ্জের ছোট-বড় প্রায় ১২০টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত। তবে প্রধান বিল ৫৪টি এছাড়াও এ হাওরের ভেতরে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য খাল ও নালা। বর্ষা মৌসুমে সব খাল, বিল ও নালা মিলেমিশে একাকার হয়ে রূপ নেয় নীল জলের সমুদ্রে। জেলার তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৪৬টি গ্রামসহ পুরো হাওর এলাকার আয়তন প্রায় ১শ বর্গকিলোমিটার, যার দুই লাখ ৮০ হাজার ২৩৬ হেক্টরই জলাভূমি। বিশাল এই সম্পদকে রক্ষা করার জন্য ইতোমধ্যেই টনক নড়েছে স্থানীয় প্রশাসনের।  সম্প্রতি রামসার কনভেনশনের আওতায় সংরক্ষিত এ হাওরে পর্যটক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ১২টি শর্ত দিয়েছে প্রশাসন।  বাধ্যতামূলক নিবন্ধনসহ ১২টি শর্ত না মানলে কোনো নৌযান পর্যটক নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রবেশ করতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা ১২টি শর্তের মধ্যে দুটি নৌযানের নিবন্ধন সংক্রান্ত এবং বাকি ১০টি পর্যটন পরিবহন ও পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত। নিবন্ধিত নৌযানকে পর্যটন পরিবহনে যে ১০ শর্ত মানতে হবে। তা হলো:

১. নদী, হাওর, বিল, পুকুরের পানি ও উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের ময়লা, আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা যাবে না। ২. নৌযানে অবস্থানকালে প্রতিটি নৌযানে সংরক্ষিত ঢাকনাযুক্ত বড় ডাস্টবিনে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে হবে এবং নিজ দায়িত্বে ময়লা-আবর্জনা নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তর করতে হবে। ৩. নৌযানে লাউডস্পিকার, মাইক প্রভৃতিসহ উচ্চ শব্দ উৎপাদনকারী কোনো ধরনের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ৪. লাইফ জ্যাকেটসহ যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া নৌযানে ভ্রমণ করা যাবে না। বিরূপ আবহাওয়ায় নৌযানে ভ্রমণ করা যাবে না। ৫. নৌযানে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। ৬. নৌযানে পর্যটকদের জন্য মানসম্মত পরিবেশ তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ৭. নৌযানে ভ্রমণের সময় কোনো ধরনের অসামাজিক কাজ কিংবা অনৈতিক কাজ কিংবা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটায় এমন কাজ করা যাবে না। ৮. স্থানীয় এলাকাবাসীর ভাবাবেগ ও সামাজিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে ৯. অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। ১০. নৌযানে চলাচলের সময় পর্যটকদের মালামাল রক্ষার বিষয়ে ও দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট, স্থানীয়, পরিবেশ কর্মী ও মৎস্যবিদ সব পক্ষই বলছেন নিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কথা। যারা হাওর দেখতে যাবেন তারা যদি হাওরের পরিবেশগত দিক মাথায় রেখে আচরণ করেন তাহলে দেশের ওই বিশাল সম্পদের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে। 

নিউজ ট্যাগ: টাঙ্গুয়ার হাওর

আরও খবর



চাকরির বয়স ৩৫ নিয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার জন্য সুপারিশ জানিয়ে গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠান।

রোববার (৫ মে) এর জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরির বয়সসীমা ৩৫ নিয়ে যে সুপারিশ পাঠিয়েছে তা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী তার পাঠানো চিঠিতে বলেন, বর্তমানে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা ৩০ বছর মানদণ্ড হিসেবে অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পাতা নম্বর ৩৩-এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেছিল।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তারা বলে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ বয়স নয়, যোগ্যতাই একজন প্রার্থীর একমাত্র মাপকাঠি। ওই দেশের আলোকে বাংলাদেশেও চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করা দাবি করে আসছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই সব শিক্ষার্থী দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করে এলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন শিক্ষামন্ত্রীও একই ধরনের সুপারিশ করলেন।


আরও খবর



ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে কি না জানা যাবে আজ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

ভোজ্য তেলের দাম লিটার প্রতি ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। সে বিষয়ে সিন্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বৈঠকে বসছে ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সার্বিক দিক বিবেচনা করে মিল মালিক ও ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে আজ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ট্যারিফ কমিশন নাকচ করলেও ভোজ্য তেলের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন তার নিজস্ব পর্যালোচনা অব্যাহত রেখেছে। ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। এখনই ভোজ্য তেলের বর্ধিত মূল্য কার্যকর হবে না এবং মিল মালিকরাও বর্ধিত মূল্যের লেবেল সংবলিত তেলের বোতল বাজারে ছাড়বেন না। অর্থাৎ, গত ১৬ এপ্রিল থেকে ভোজ্য তেলে লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সেটি আপাতত স্থগিত থাকবে। তবে সরকার যেহেতু ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফের মেয়াদ আর বাড়ায়নি এবং ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারেও বাড়তে শুরু করেছে সয়াবিন-পামওয়েলের দাম, তাই ব্যবসায়ীদের দাবি বিবেচনা করে দ্রুত ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।’

এদিকে বিশ্ববাজারে গত টানা ৫ মাস দাম কমেছে সয়াবিন তেলের। প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম বিশ্ববাজারে গত নভেম্বরে ছিল ১ হাজার ১১৮ ডলার। সর্বশেষ গত মার্চ মাসে সে দাম কমে হয়েছে ৯১০ ডলার। অর্থাৎ গত ৫ মাসে বিশ্ববাজারে টনপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ২০৮ ডলার। অথচ দেশের বাজারে ঘটছে ঠিক তার উল্টো চিত্র। ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা বলে ভোজ্য তেল শোধনকারী মিল মালিকরা সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার থেকে এ দাম কার্যকর করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

গত সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের চিঠিতে আবারও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। লিটার প্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৩ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ভোজ্য তেলের কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন পর্যায়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারিতে জারি করা এসআরওদ্বয়ের মেয়াদ ১৫ এপ্রিলে শেষ হচ্ছে। তাই আগামী ১৬ এপ্রিল থেকে বাজারে ভোজ্য তেল (পরিশোধিত পাম তেল ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল) সরবরাহে ভ্যাট অব্যাহতি পূর্ববর্তী মূল্যে পণ্য সরবরাহ হবে।’

চিঠিতে ১৬ এপ্রিল থেকে বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ টাকা, ৫ লিটার ৮৪৫ টাকা এবং খোলা ১ লিটার পাম তেলের দাম ১৩২ টাকা প্রস্তাব করা হয়। ট্যারিফ কমিশন প্রস্তাব নাকচ করায় আপাতত এ দাম কার্যকর হয়নি।


আরও খবর



৭০ বছর পর পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে শয়তান ধূমকেতু

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক

Image

৭০ বছর পর পৃথিবীর আকাশের দিকে ধেয়ে আসছে একটি ধূমকেতু, যা মাউন্ট এভারেস্টের সমান বড়। ধূমকেতুটির নাম ১২পি/পনস-ব্রুকস যা ডেভিল কমেট বা শয়তান ধূমকেতু নামে বেশি পরিচিত।

সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, আগামী ৮ এপ্রিল পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় বিরল চেহারা দেখাবে শয়তান ধূমকেতু। আর ২১ এপ্রিল ধূমকেতুটি সূর্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছাবে। এ সময় সূর্য থেকে এর দূরত্ব থাকবে ৭ কোটি ৪৪ লাখ মাইল। এ ছাড়া আগামী ২ জুন এটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসবে। এ সময় পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে প্রায় ১৪ কোটি মাইল।

গত বছর এই ধূমকেতুটির ওপর বরফ ও গ্যাসের বিস্ফোরণের কারণে শিং এর মতো আকৃতি তৈরি হয় এরপর এর নামকরণ করা হয় ডেভিল বা শয়তান ধুমকেতু। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে এই ধূমকেতুটি প্রতি ৭০ বছর পরপর সৌরজগতের ভেতর চলে আসে। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্যোতির্বিদরা বাইনোকুলারের সাহায্যে এটি দেখতে পাচ্ছেন এবং এর ছবি তুলছেন।

১৮১২ সালে প্রথম ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যঁ-লুইস পনস। এরপর ১৮৮৩ সালে এটি আবার দেখতে পান জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম রবার্ট ব্রুকস। তাঁদের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। এর আগে সর্বশেষ ১৯৫৪ সালে ধূমকেতুটি সূর্যের কাছাকাছি এসেছিল। এরপর ২০৯৫ সালে এটি আবার সূর্যের কাছাকাছি আসতে পারে।

ধূমকেতুটি ২১ এপ্রিল নাগাদ তাওরাস নক্ষত্রপুঞ্জে হাজির হবে। তখন উত্তর গোলার্ধ থেকে সন্ধ্যায় সবচেয়ে ভালোভাবে এটি দৃশ্যমান হবে। এ সময় এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিগন্তের কাছাকাছি প্রদর্শিত হবে।


আরও খবর



মক্কায় প্রবেশে সৌদির বাসিন্দাদের লাগবে অনুমতি

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

সৌদি আরবের জননিরাপত্তা বিষয়ক অধিদপ্তর ঘোষণা দিয়েছে আজ শনিবার (৪ মে) থেকে পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সৌদির বাসিন্দাদেরও অনুমতি লাগবে। হজ সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই অনুমতি নিতে হবে। হজ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও হজের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

যাদের কাছে যথাযথ অনুমতি থাকবে না যারমধ্যে রয়েছে পবিত্র স্থানগুলোতে কাজের অনুমতি, মক্কার স্থায়ী বাসিন্দা, ওমরাহ ও হজের বৈধ অনুমতি তাদের মক্কার প্রবেশদ্বার থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

গত সপ্তাহে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় নুসুক অ্যাপ কার্ড দেওয়ার ঘোষণা দেয়। যা ২০২৪ সালের হজ পক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এটি ডিজিটাল এবং সাধারণ উভয় ফরমেটে পাওয়া যাবে। এই কার্ডের মাধ্যমে হজের প্রক্রিয়া খুবই সহজে করা যাবে। এতে করে অনুমতি ছাড়া হজ করার প্রবণতা কমে আসবে এবং পবিত্র স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

হজ যাত্রীরা তাদের হজ মিশন অথবা যাদের মাধ্যমে হজ করতে আসবেন তাদের কাছে কার্ডটি পাবেন। অপরদিকে ডিজিটাল ফরমেটটি পাওয়া যাবে নুসুক এবং তাওয়াকলানা অ্যাপে।

এটির মাধ্যমে সহজে সব ধরনের সেবা পাবেন হজ যাত্রীরা। এমনকি যাদের মাধ্যমে তারা হজ করতে আসবেন তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট না হলে এটির মাধ্যমে অভিযোগও জানানো যাবে।

নিউজ ট্যাগ: সৌদি আরব

আরও খবর



পাথরঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ছাই

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনার পাথরঘাটায় বসতঘরে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পাথরঘাটা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনুস হাওলাদারের বসতঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পরে পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় একঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা এমপির পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়ালিদ মক্কি ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সুজন। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অর্থ প্রদান করা হয় এবং বসত ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে টিনসহ যাবতীয় কিছু যা দরকার তা দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, চা বানাতে ইউনুস হাওলাদার ঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের চুলা জ্বালাতে গেলে হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়, এতে ইউনুস আগুনে দগ্ধ হয়। ওই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা এসে এক ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে মালামালসহ বসতঘরটি সম্পূর্ণ পড়ে ছাই হয়ে যায়। এই ঘটনায় ঘরে থাকা স্বর্ণ অলঙ্কার নগদ ৫০ হাজার টাকা পুড়ে হয়ে গেছে বলে জানায় ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এতে অন্তত ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবার।


আরও খবর