টাঙ্গাইলে তাঁতের শাড়িকে ভারতের পণ্য দাবি করার প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
গেল বৃহস্পতিবার ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে টাঙ্গাইলের শাড়িকে নিজেদের পণ্য বলে দাবি করে। এতে বলা হয়, ‘পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হাতে তৈরি টাঙ্গাইল শাড়ি অনন্য। মসৃণ টেক্সচার, প্রাণবন্ত রঙ এবং জামদানি মোটিফের জন্য বিখ্যাত শাড়িটি এ অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক।’
এ পোস্টটি দ্রুত বাংলাদেশি নেটিজেনদের মধ্যে ছড়ি পড়ে। মন্তব্য অংশে অনেকে লিখেছেন, টাঙ্গাইল শব্দটির উৎপত্তিই তো বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার নামানুসারে। অবার কেউ কেউ বলছেন, শাড়ির নামের ক্ষেত্রে ভারত ভুল করে থাকতে পারে। বিষয়টিকে সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন অনেকে।
টাঙ্গাইলে মানবন্ধনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা মুঈদ হাসান বলেন, বাংলাদেশের বিখ্যাত টাঙ্গাইল শাড়ি। এই শাড়ির স্বীকৃতি ভারত কখনই পেতে পারে না। ভারতের এ দাবি অযৌক্তিক। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই শাড়ির জিআই পাওয়ার দাবিদার হচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে দ্রুত টাঙ্গাইলের শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইল শাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, ‘টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে সম্প্রতি ভারত তাদের নিজস্ব পণ্য দাবি করে জিআই স্বত্ব করে নিয়েছে। আমরা এই জিআই কখনও মানব না। সরকারকে বলব, যে কোনো মূল্যে নিজেদের নামে টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই করতে। অন্যথায় টাঙ্গাইলের শাড়ি ব্যবসায়ীরা কঠোর আন্দোলনে যাবে।’
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়সারুল ইসলাম জানান, ‘ভারত ২০২০ সালে জিআই আবেদন করে। আর টাঙ্গাইল শাড়ির ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে ২০১৭ সালে। এটি টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য। গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই তাঁত শাড়ি জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। টাঙ্গাইল শাড়ি জিআই করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’