অবশেষে সংবাদ প্রকাশের পর পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে পড়ে থাকা শীতের কম্বল ও বিজিডি, ভিজিএফ’র চাল উধাও হয়ে গেছে। গত ২৩ ও ২৪ মে দৈনিক আজকের দর্পণ সহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষে কম্বল ও চাল বিতরণ না করে গোডাউনে ফেলে রাখার অভিযোগে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে গত ২৪ মে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানস কুমার দাস ওই ইউনিয়ন পরিষদে তদন্তে গিয়ে গোডাউনে ওই কম্বল ও চাল পাননি। তদন্তে আসার সংবাদ শুনে নিজেদের দোষ ঢাকতে ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে ওই চাল সরিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য। এমনকি ওই ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে কম্বল ও চাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ইউপি সচিব চাঁদ নারায়ন চক্রবর্তীর সাথে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তিনি বলেন, কম্বলগুলো মাষ্টাররোল করে ২৩ মে বিতরণ করে দেয়া হয়েছে। চাল বিতরণ অব্যহত আছে। শীতের কম্বল গরমে কেন বিতরণ হল এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি।
এসব বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহম্মেদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, কম্বল বা চাল আত্মসাতের মত লোক আমি নই। সরকার কর্তৃক যখনই যে বরাদ্দ আসে আমি এলাকায় না থাকলেও সচিবকে ইউপি সদস্যদের নিয়ে বিতরণের জন্য আমার বলা আছে। তারা যদি বিতরণে কোন গাফেলতি করে থাকে তবে সে দায়ভার আমার না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানস কুমার দাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ঘটনার তদন্তে ওই ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে গোডাউনে আশিংক চাল পাওয়া গেলেও কম্বল পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে ওই ইউনিয়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করানো হয়েছে। তদন্তে পাওয়া তথ্যনুযায়ী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট প্রেরণ করার কাজ চলছে।
উল্লেখ্য গত ২০ মে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গেয়ে দেখা যায় পরিষদের আদালত নামের কক্ষে শীতের কম্বল ও বিজিডি, ভিজিএফ’র চাল বিতরণ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। চালগুলো নষ্ট হয়ে পোকা ও ইদুরের খাদ্যে পরিনত হয়েছে। গোডাউনে অকার্যকর ভাবে ফেলে রাখা হয়েছে জাইকা প্রকল্প থেকে দেয়া মিনি এ্যাম্বুলেন্স। রমজানের ঈদের জন্য বরাদ্দ করা টাকা ঈদের পর বিতরণ করা হয়েছে। আম্ফানের বন্যার সময়ের জি আর প্রকল্পের ৪০০ কেজি চাল গোডাউন থেকে তোলা হয়নি আজও। এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর দায় এডাতে গোডাউন থেকে কম্বল ও চাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে।