পিরোজপুরের বলদিয়া ইউনিয়নে টিসিবি’র কার্ড পেতে টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিটি কার্ডের জন্য দুই শত করে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগের আঙ্গুল ওই ইউনিয়নের (১,২,৩) নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য জেসমিন আক্তার ও ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। একই সাথে দরিদ্র লোকেরা তালিকা থেকে বাদ পড়লেও তালিকায় রয়েছেন আ.লীগ নেতারা।
ওই ইউনিয়নের গগন গ্রামের মসজিদ বাড়ির হতদরিদ্র লুৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্য জেসমিন টিসিবি’র কার্ডের জন্য খরচের কথা বলে তার কাছ থেকে দুইশত টাকা, আবার তার এক চাচাত ভাই নান্না মিয়ার কাছ থেকে দুই শত টাকা নিয়েছেন।
১ নং ওয়ার্ডের আল আমিন নামের একজন জানান, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম কার্ড বাবদ তার কাছ থেকে দুই শত টাকা নিয়েছেন। ওই একই ওয়ার্ডের দিনমজুর বাদশা মিয়া অভিযোগ করেন তার কাছ থেকে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের কথা বলে আজমীর নামের একজন দুই শত টাকা নিয়েছেন। এদিকে ইউপি সদস্য জেসমিন আক্তারের বাড়ি থেকে তালিকাভুক্ত হতদরিদ্র মানুষের আইডি কার্ডের সাথে গেঁথে রাখা টাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভাইরাল হওয়া টাকার ছবি তার বাড়ি থেকে তোলা স্বীকার করে ইউপি সদস্য জেসমিন আক্তার বলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিনসহ কয়েকজন তার বাড়িতে এসে তাকে জানান ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম টিসিবি’র কার্ডের খরচ পাতির জন্য প্রত্যেককে দুইশত টাকা করে তার কাছে জমা দেয়ার জন্য বলেছেন। সেই কথা অনুযায়ী তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে ওই টাকা জমা নিয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন ওয়ার্ড আ.লীগ নেতা রুহুল আমিনের সাথে তার পূর্ব শত্রুতা রয়েছে এরই জের ধরে রুহুল পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন।
এ বিষয়ে ১ নং ওয়ার্ড আ.লীগ নেতা রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনিও টিসিবি’র কার্ড পেয়েছেন এজন্য ইউপি সদস্য রফিকুলের আত্মীয় আজমীর ওই দুই ইউপি সদস্যের বরাত দিয়ে খরচের কথা বলে তার কাছে টাকা দাবী করে। পরে সে সহ আরও কয়েকজন কার্ডধারী ওই ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য জেসমিনের বাসায় গিয়ে দুই শত করে টাকা দিয়ে আসে। টাকা নেয়ার ব্যাপারে ওয়ার্ড আ.লীগ নেতা আজমীর জানান, টাকা নিয়েছিলাম পরে আবার ফেরত দিয়েছি। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের গুরত্বপূর্ণ পদে থেকে দরিদ্র না হওয়া সত্বেও কার্ড প্রাপ্তির জবাবে তিনি ভুল হয়েছে বলে জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, এমনটা শুধু ওই একটি ওয়ার্ডেই নয় কম বেশি প্রতিটা ওয়ার্ডেই অনিয়ম হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের ঘটনা জানাজানি হলে সেসকল ওয়ার্ডে টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েই টাকা ফেরত দিতে বলেছি। অন্যসব ওয়ার্ডে কোন সদস্য টাকা রেখেছেন কিনা তা তার জানা নেই। বিষয়টা তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নেছারাবাদের ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন বলেন বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবহিত করতে বলা হয়েছে।