স্বামীর বাসা
থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার
বিকালে রাজধানীর মুগদা থানার মানিকনগর এলাকায় তার স্বামীর ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে
ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ছন্দা রায় (২৪)
নামে ওই তরুণী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী
ছিলেন। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়।
গত ৭ আগস্ট তাদের
বিয়ে হয়। ছন্দা স্বামীর সঙ্গে ঢাকার মুগদায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ছন্দা গত মার্চে
মাসে তার মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করে রাবি ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন। তার পরীক্ষার ফল এখনো
প্রকাশিত হয়নি বলে সহপাঠীরা জানিয়েছেন।
এ দিকে ছন্দা
রায়ের আত্মহত্যার ঘটনাটিকে মেনে নিতে পারছেন না বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তারা
মঙ্গলবার দুপুরে রাবি ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে একটি মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন থেকে
বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে ছন্দার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও
আত্মহত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অর্থনীতি
বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান, ছন্দার সহপাঠি আইরিন আক্তার ও বৃষ্টি আক্তারসহ
অন্যরা।
অধ্যাপক ফরিদ
উদ্দিন খান বলেন, মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে হলো ছন্দার। এরই মধ্যে এমন কী হলো যে মেয়েটি
আত্মহত্যার পথ বেছে নিল। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এ দিকে ছন্দা
রায়ের মেজোবোন দ্বীপা রায় জানান, তিন মাস আগে তারা তাকে বিয়ে দেন। তার স্বামী উত্তম
কুমার রায় বাংলাদেশ ব্যংকের উপ-পরিচালক। স্বামীর চাকরির সুবাদে তার সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন
ছন্দা। সোমবার বিকালে শয়নকক্ষে ফ্যানের রডের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
তিনি আরও জানান,
তার বোন মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছেন। তাতে লেখা আছে 'আমার মৃত্যুর জন্য
কেউ দায়ী নয়'। আমি তার হাতের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছি এটা ওরই হাতের লেখা। ছন্দা
কেন আত্মহত্যা করল এই প্রশ্ন আমাদেরও।
এ বিষয়ে ছন্দা
রায়ের স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বলেন, আমি অফিস থেকে দুপুরে ছন্দাকে
বারবার ফোন দিচ্ছিলাম। কিন্তু সে রেসপন্স করেনি। বিকালে এসে দরজা ভিতর থেকে আটকানো
ছিল। বারবার বলার ও দরজা না খোলায় আমি বাসার কেয়ারটেকারকে নিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ
করে দেখি ও সুইসাইড করেছে।
এ ঘটনার দুঃখ
প্রকাশ করে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দীন খান আরও বলেন, আমরা ছন্দার মৃত্যুর খবর শুনে মর্মাহত। তিনমাস হলো মাত্র বিয়ে হলো তার। এর মধ্যেই সে আত্মহত্যা
করেছে। কি এমন হয়েছে তার সঙ্গে জানি না। ছন্দার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি
করছি। ছন্দার সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষার্থীরাও শোকাহত।