স্বাধীন ভারতের ‘প্রথম ভোটার’ শ্যামশরণ নেগি মারা গেছেন। গতকাল শনিবার ভোররাতে হিমাচল প্রদেশের কিন্নরে নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০৬ বছর।
দ্য হিন্দু, আনন্দবাজার পত্রিকাসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছিলেন নেগি। সেই ভোটটিই তার জীবনের শেষ ভোট হয়ে রইল। এর পরেই শনিবার তিনি মারা যান।
সূত্রের খবর, গত কয়েক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন নেগি। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সময়েও তার শরীর অত্যন্ত খারাপ ছিল। তিনি এক প্রকার শয্যাশায়ী ছিলেন।
জানা গেছে, বুধবার কিন্নরের ডেপুটি কমিশনার আমির সাদিকের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা তাদের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ শ্যামশরণের কল্পার বাড়িতে গিয়ে তার ভোট সংগ্রহ করেন।
এদিকে শ্যামশরণ নেগির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর। কিন্নরের জেলা শাসক আবিদ হুসেন জানান, যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দেশের প্রথম ভোটারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
১৯১৭ সালের ১ জুলাই হিমাচল প্রদেশে নেগির জন্ম হয়। কল্পা গ্রামে স্কুল শিক্ষক হিসেবে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন তিনি। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫১ সালে স্বাধীন ভারতে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই বছর ২৫ অক্টোবর দেশের প্রথম নাগরিক হিসেবে ভোট দেন নেগি।
১৯৫১ সাল থেকে দেশের প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এই বৃদ্ধ। ভোট দেওয়াকে তিনি নাগরিক কর্তব্য বলে মনে করতেন, কখনো এই কর্তব্যের অন্যথা হতে দেননি। কয়েক বছর আগে ‘সনম রে’ ছবিতে তাকে অতিথি শিল্পী হিসেবে (গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স) দেখা গিয়েছিল।
হিমাচলের ১৪টি বিধানসভা ভোটেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের রেকর্ড গড়েছেন কল্পা গ্রামের এই বৃদ্ধ। তার জীবনীশক্তি, ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রতি তার আগ্রহকে সম্মান জানায় সবাই।