শুরু হলো ভাষার
মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের এই মাসেই বাঙালি বুকের রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার আদায়
করে নেয়। এরপর সাত দশকেও বাংলা ভাষা এখনো পায়নি তার যোগ্য মর্যাদা। সর্বস্তরে প্রচলিত
হয়নি বাংলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাষার বিকৃতি রোধ এবং সর্বস্তরে মাতৃভাষা প্রচলন করতে
স্বাধীন ভাষা কমিশন গঠন করতে হবে।
বাংলা কেবল শুধু
ব্যাকরণিক অর্থে ভাষা ছিল না, ছিল বাঙালির অস্তিত্ব, অধিকার ও স্বাধীনতার অন্য নাম।
বায়ান্নর ফাল্গুনে পাখি ডাকা গ্রামের সহোদর ঢাকা রূপান্তরিত হয়েছিল অগ্নিগিরিতে, যা
বিস্ফোরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলার শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত।
সংগ্রামের পথ
ধরেই রক্ত দিয়ে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত হলো। এরপর বাংলা ভাষা পেরিয়ে এসেছে প্রায় ৭০
বছর। তবুও এখনো মাতৃভাষার দমন, অশ্রদ্ধা, ঘৃণা ও অপমান নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে আছে। ভাষা
তার অন্তর্গত শক্তি ও মর্যাদা নিয়ে এখনো দাঁড়াতে পারছে না। কিন্তু কেন?
সরব মানুষ ছাড়া
ভাষার প্রাণ কী করে বাঁচে। সাধারণ মানুষের মুখেই বাংলা আছে প্রাণ হয়ে। তবুও যাদের কাছে
বাংলা কেবল উপেক্ষার, তাদের জন্যই মাতৃভাষার অর্থমূল্যের দিকে নজর দিতে হবে বলে মনে
করেন এই বিশেষজ্ঞ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সৌরভ শিকদার বলেন, ভাষা অর্থমূল্য তৈরি করতে হবে। সেটা
কীভাবে তা হলো- বাংলা ভাষাকে শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রণোদনা হিসেবে দিতে হবে। এখন যেমন
একজন শিক্ষার্থী জানেন, ইংরেজিতে ভালো জানলে সে ভালো চাকরি পাবে। আমাদেরকে এখন উল্টো
করতে হবে বাংলা ভাষা জানলে সে ভালো চাকরি পাবে তাহলে এই প্রণোদনাটা হবে।
একুশ কারো কাছে বাংলা ভাষার উত্থান দিবস। কারো কাছে আধুনিক বাঙালি জাতির উদ্ভবের দিন। কারো কাছে অঘোষিত স্বাধীনতা দিবস। একুশ থাকুক হৃদয়ে, একুশে থাকুক চেতনায়।