গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ
উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরের যষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যবই
বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, রোববার
বিকেলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মাজেদুর রহমান মাজেদ বই বিতরণের
গোডাউন সুন্দরগঞ্জ ডিডব্লিউডি সরকারি ডিগ্রি কলেজের হলরুম থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ
শ্রেণির ৩০০, সপ্তম শ্রেণির ৭ হাজার ৮০০, অষ্টম শ্রেণির ২ হাজার ৬০০ এবং নবম শ্রেণির
৮০০ নতুন বই গোপনে বের করে নিয়ে আসে। বইগুলো পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে সিরাজগঞ্জ
জেলাধীন বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশ পিকআপচালক শ্যামল মিয়া ও হেলপার রাসেল
মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ জানতে পারে
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মাজেদের কাছ থেকে তারা বইগুলো
সংগ্রহ করেছে। মাজেদ সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহমানের ছেলে।
এরপর বঙ্গবন্ধু
যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশ সুন্দরগঞ্জ থানাকে বিষয়টি অবহিত করলে রোববার রাতেই মাজেদকে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে মাজেদ ঘটনার সত্যতা
স্বীকার করে। রাতেই থানা পুলিশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ, উপজেলা মাধ্যমিক
শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মন্ডল, ডিডব্লিউডি সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একে এম
এ হাবিব সরকারকে সঙ্গে নিয়ে বইয়ের গোডাউন তল্লাশি করে। তল্লাশির এক পর্যায় দেখা যায়
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণের পর অবশিষ্ট যষ্ঠ শ্রেণি হতে নবম শ্রেণির ১১ হাজার
৫০০ নতুন বই গোডাউনে নেই।
এ নিয়ে সোমবার
(১৬ জানুয়ারি) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা
দায়ের করেন। জেলা শিক্ষা অফিসার রোকসানা বেগম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক
শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মণ্ডল বলেন, দীর্ঘদিন অফিস সহায়ক মাজেদুর রহমান মাজেদ গোডাউন
হতে বই বিতরণ করে আসছেন। সে মোতাবেক তার কাছে গোডাউনের চাবি থাকে। রোববার শিক্ষকদের
নিয়ে নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণে তিনি ব্যস্ত থাকার কারণে গোডাউনের খোঁজখবর রাখতে
পারেননি। তিনি রাতে বিষয়টি থানা পুলিশের কাছে জানতে পেয়েছেন।
সুন্দরগঞ্জ থানার
ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কার্যালয়ের অফিস সহায়ক
মাজেদুর রহমান মাজেদ চুরির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। মামলা হওয়ার পর সোমবার বিকেলে
সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশকে সিরাজগঞ্জ জেলাধীন বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশের
নিকট জব্দকৃত বইসহ পিকআপ ও আটক চালক এবং হেলপারকে উদ্ধারের জন্য পাঠানো হয়েছে। আটককৃত
অফিস সহায়ক, চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তদন্তে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি জানার পর অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে
আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।